Site icon suprovatsatkhira.com

সদরের আড়–য়াখালি পায়রাডাঙা মুজিদিয়া দাখিল মাদ্রাসা সুপারের বিরুদ্ধে মনোনয়নপত্র বিক্রি না করার অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিনিধি: নির্বাচনী তপশীলের নির্দেশনা উপেক্ষা করে মনোনয়নপত্র বিক্রয় না করার অভিযোগ উঠেছে সাতক্ষীরা সদরের আড়–য়াখালি পায়রাডাঙা মুজিদিয়া দাখিল মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত সুপার আবু তাহেরের বিরুদ্ধে। সোমবার সকাল ১০ টা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত ভারপ্রাপ্ত সুপার আবু তাহের মাদ্রসায় উপস্থিত না থাকায় মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করতে ব্যর্থ হয়েছেন ওই মাদ্রাসার নয়জন অভিভাবক।

আড়–য়াখালি পায়রাডাঙা মুজিদিয়া দাখিল মাদ্রাসার অভিভাবক আব্দুস সালাম, আব্দুস সবুর ও জিয়ারুল ইসলাম জানান, কোন নিয়ন নীতি না মেনেই আড়–য়াখালি পায়রাডাঙা মুজিদিয়া দাখিল মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির নির্বাচনের তপশীল ঘোষণা করা হয়েছে। প্রিজাইডিং অফিসার হিসেবে সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার জাহিদুর রহমান গত ১৪ ডিসেম্বর এক চিঠিতে ভারপ্রাপ্ত সুপার আবু তাহেরকে নির্বাচন তপশীল নোটিশ বোর্ডে প্রদর্শন, শ্রেণীকক্ষে পঠণ ও এলাকায় বহুল প্রচারের জন্য মাইকিং এর জন্য বলা হয়। ভারপ্রাপ্ত সুপার সেটা করেননি। এমনকি এবার ভোটার সংখ্যা কত তাও তারা জানেন না। ২৬, ২৭ ও ২৮ ডিসেম্বর সকাল ১০টা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত মনোনয়নপত্র বিক্রির নির্দেশনা থাকলেও প্রথম দিন সোমবার সকাল ১০ টা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত ভারপ্রাপ্ত সুপারকে অফিসে পাওয়া যায়নি। এ সময়ে তারা তিনজনসহ নয়জন অভিভাবক দফায় দফায় মাদ্রাসায় গিয়েছেন। সকাল সাড়ে ১০টা থেকে ১১টার মধ্যে তারা কয়েকজন মনোনয়নপত্র কিনতে যেয়ে আবুল কালাম স্যার ও বাবু স্যারকে উপস্থিত থাকতে দেখেছেন। তাদের কাছে জানতে চাইলে ভারপ্রাপ্ত সুপার বাইরে আছেন বলে তাদেরকে জানানো হয়। দুপুর ১২টা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত তারা পৃথক পৃথক ভাবে সুপারের জন্য অপেক্ষা করেও দেখা করতে পারেননি। কিনতে পারেননি মনোনয়নপত্র।

আড়–য়াখালি পায়রাডাঙা মুজিদিয়া দাখিল মাদ্রাসার অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র আব্দুল আজিজের বাবা হাজী আসাদুর রহমান জানান, গত ২ জানুয়ারি এ মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির ঘোষিত নির্বাচন তপশীল অনুযায়ি ৯,১০ ও ১১ জানুয়ারি সকাল ১০ টা থেকে বিকেল টারটা পর্যন্ত মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত সুপার মোঃ আবু তাহেরকে মনোয়নপত্র বিতরণ ও জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হলেও ওই তিনদিন তিনি অফিসে আসেননি। একপর্যায়ে আইনিপ্রক্রিয়ায় ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার হস্তক্ষেপে নির্বাচন বন্ধ হয়ে যায়।

মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত সুপারসহ একটি মহলের চক্রান্তে অভিভাবকদের না জানিয়ে গোপনে আবারো মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির নির্বাচন করার অংশ হিসেবে গত ৩০ অক্টোবর এক আবেদনের প্রেক্ষিতে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফাতেমা তুজ জোহরা গত পহেলা নভেম্বর সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জাহিদুর রহমান প্রিজাইডিং অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পান। তিনি গত ৩ নভেম্বর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ করলে তিনি বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য গত ৬ নভেম্বর সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন। ওই আদেশকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে আর্থিক সুবিধা নিয়ে গত ১৪ ডিসেম্বর ওই শিক্ষা কর্মকর্তা নির্বাচন তপশীল ঘোষণা করে তারই পরামর্শে ভারপ্রাপ্ত সুপার আবু তাহের সোমবার সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানে আসেননি। মঙ্গলবার ও বুধবার নির্ধারিত সময়ে তিনি প্রতিষ্ঠানে না এসে নির্বাচনের নীল নকশা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে পিছনের দরজা নিয়ে নিজেদের পছন্দের লোকদের কাছে মনোনয়নপত্র বিক্রি করার প্রক্রিয়া চালানো হবে বলে তার আশঙ্কা।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে আড়–য়াখালি পায়রাডাঙা মুজিদিয়া দাখিল মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত সুপার আবু তাহের সোমবার বিকেলে এ প্রতিবেদককে বলেন, তিনি আসামী না হলেও স্থানীয় একটি মারপিটের মামলায় তিনি আদালতে তদ্বিরে ব্যস্ত থাকায় সোমবার মাদ্রাসায় যেতে পারেনি। সেক্ষেত্রে মঙ্গলবার তিনি অবশ্যই মাদ্রাসায় যাবেন ও অভিভাবকরা মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করতে পারবেন।

সাতক্ষীরা সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জাহিদুর রহমান,সোমবার বিকেলে এ প্রতিবেদককে তার বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দূর্ণীতির অভিযোগ অস্বীকার করেই বলেন, ওই মাদ্রাসায় মনোনয়ন বিক্রি হয়েছে মর্মে একজন সহকারি সুপার তাকে জানিয়েছেন। বিষয়টি মিথ্যা হলে তিনি খোঁজ খবর নিয়ে মঙ্গলবার নিজস্ব প্রতিনিধি পাঠিয়ে মনোনয়নপত্র বিক্রির ব্যবস্থা করবেন বলে নিশ্চিত করেন। তবে জনৈক আওয়ামী লীগ নেতা মোর্শেদ এ নির্বাচন নিয়ে সুপারের পক্ষ নেওয়ায় তারও কাজ করতে সমস্যা হচ্ছে বলে অকপটে স্বীকার করেনি তিনি।

https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/
Exit mobile version