সমীর রায়, আশাশুনি : আশাশুনিতে হাইব্রিড ও উপশী জাতের ধানের বীজ, কীটনাশক ও সারসহ বিভিন্ন মালামাল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। সোমবার উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর কর্তৃক প্রকৃত কৃষকদের মাঝে হাইব্রিড ও উপশী জাতের ধানের বীজতলা কৃষি কর্মকর্তাদের যোগসাজশে অকৃষকদের মাঝে বিতরণ করার অভিযোগ উঠেছে।
এ ব্যাপারে বঞ্চিত কৃষক বড়দল ইউনিয়নের ফকরাবাদ গ্রামের আবু বক্কার সিদ্দিক, সামসের বিশ্বাসের ছেলে নোয়াব আলী বিশ্বাস, মৃত নিরঞ্জন মন্ডলের ছেলে নিমাই মন্ডল, করিম সরদারের ছেলে ইউনুস সরদার, মৃত হাকিম সরদারের ছেলে খায়রুল সরদার ও শফিকুল সরদার, উকিল বিশ্বাসের ছেলে শাহিনুর বিশ্বাস, মৃত আজিজ সরদার ভোলা এর ছেলে খাইরুল সরদার, হাকিম বিশ্বাসের ছেলে সালাম বিশ্বাস এবং গোয়ালডাঙ্গা গ্রামের মৃত রসিক সরদার এর ছেলে অতুল চন্দ্র সরকার সহ আরও অনেকে সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করে জানান, কৃষি কর্মকর্তাদের যোগসাজশে আর্থিক সুবিধা নিয়ে প্রকৃত কৃষকদের বাদ দিয়ে অধিকাংশ অকৃষকদের নামের তালিকা প্রনয়ণ করেন ইউনিয়ন উপÍসহকারী কৃষি কর্মকর্তা দীপংকর মল্লিক। ইউনিয়ন কমিটির জাহাঙ্গীর নামের এক তেলবাজের কথামত এ সমস্ত মালামাল বিতরণ করা হয়েছে।
তারা বলেন, প্রতি বছর এমন অনিয়ম, স্বজনপ্রীতি, দুর্নীতি করে যাচ্ছে কৃষি অধিদপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা। অথচ, আমরা প্রকৃত কৃষক বীজতলা, সারত্মকীটনাশক সহ কৃষকদের জন্য আসা সরকারী বিভিন্ন কৃষি পন্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। সরকারি সহযোগিতা না পেয়েএসব অকৃষকদের কাছ থেকে কৃষি অফিসের বিতরণকৃত মালামাল কিনে অতিকষ্টে চাষাবাদ করতে হচ্ছে।
বীজ পেয়ে কেউ কেউ খই ভেঁজে খাওয়ার পরিকল্পনার কথা বলে বেড়াচ্ছে।
গতবছর ফকরাবাদ গ্রামের আবুবক্কার গাজীর ছেলে নজরুল গাজী, গনেশ মন্ডল ও তার ছেলে পলাশ মন্ডল, মৃত সহিল উদ্দীন গাজীর ছেলে এছাহাক গাজী, রহিম বিশ্বাসের ছেলে মাছুদ বিশ্বাস, মৃত বক্কার গাজীর ছেলে হাফিজুল গাজীসহ যে সমস্ত ব্যক্তিদেরকে কৃষক হিসাবে তালিকা করে ধান চাষের জন্য বীজ ও কৃষিপণ্য গত বছর দেওয়া হয়েছিল তারা কেউ কৃষক না অভিযোগ উঠলেও তা তোয়াক্কা না করে এ বছরও তাদেরকে এ মালামাল দেওয়া হয়েছে। ফলে বার বারই প্রকৃত কৃষকরা বঞ্চিত হচ্ছে। এ সব কৃষি পণ্য অকৃষক হাফিজুল, মাছুদ বিশ্বাস ওরফে খাজার কাছ থেকে ৯শত টাকা দিয়ে ধানের বীজ ক্রয় করেন ফকরাবাদ গ্রামের কৃষক আবু বক্কার সিদ্দিক। এ ঘটনাটি কৃষি অধিদপ্তরের উদ্ধর্তন কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জোর দাবী বঞ্চিত প্রকৃত কৃষকরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সাংবাদিক জানান, বিষয়টি নিয়ে সাংবাদিকরা তথ্য নিতে উপজেলা কৃষি অফিসে গেলে উক্ত উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা দিপংকর মল্লিক তাদের সাথে অসদাচরণ করেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রাজিবুল হাসানের সাথে মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ‘অফিস টাইমে ছাড়া কথা বলেন না’ বলে জানান। পরে যারা বাদ পড়েছেন তাদের নামের তালিকা অফিসে জমা দানের নির্দেশ দেন।