Site icon suprovatsatkhira.com

কালিগঞ্জের দারুল উলুম চৌমুহনী ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিনিধি: বিজ্ঞ আদালতের আদেশকে অমান্য ও বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে বেতন ভাতা বিলে স্বাক্ষর করার অভিযোগ পাওয়া গেছে কালিগঞ্জের বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের দারুল উলুম চৌমুহনী ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আব্দুল কাদির হেলালীর বিরুদ্ধে।

সূত্র জানান, ৯ বছরে দাখিল পাস, ২০১২ সালে ফতেপুর চাকদহ গ্রামের সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘর লুটপাট, আগুন দিয়ে জ্বালানো, ২০১৩ সালে বিভিন্ন নাশকতা, জ্বালাও পোড়াও মামলা ছাড়াও মানবাধিকার কর্মী ও আওয়ামী লীগ নেতা মোসলেম উদ্দিনকে প্রকাশ্য কুপিয়ে হত্যা সহ প্রায় ডজন মামলার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে ।

তারপর অত্র মাদ্রাসার সাবেক সভাপতি নুরুল হক সরদারের দায়ের করা মামলায় সাতক্ষীরার বিজ্ঞ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক গত ১৬/ ১১/ ২০২২ তারিখে অধ্যক্ষের দায়ের করা দেওয়ানি ২৭/ ২০২০ নং মামলার আদেশের আলোকে যুগ্ন জেলা জজ দ্বিতীয় আদালতের দেওয়ানী০৪/২০২০ নং মামলার গত০১/ ০৬/২০২২তারিখের রায় ও ৬৭/২০২২ তারিখের ডিক্রির কার্যক্রম স্থগিতের আদেশ প্রদান করে।
উক্ত আদেশের পর হতে অধ্যক্ষ আবদুল কাদের হেলালী আর ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ হিসেবে কোন কার্যক্রম বা কোথাও স্বাক্ষর করতে পারেন না।

এরপরও বিজ্ঞ আদালতের আদেশকে অমান্য করে উপজেলার এক শীর্ষ জনপ্রতিনিধি ও আওয়ামী লীগ নেতার প্রভাবে সদ্য যোগদান কৃত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে ভুল বুঝিয়ে বিভিন্ন কাগজপত্রে নিজের স্বার্থসিদ্ধির জন্য স্বাক্ষর করে নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

এ প্রসঙ্গে মুকুন্দপুর গ্রামের আশিক, অভিভাবক মমতাজ, আব্দুল হক, রিয়াজ উদ্দিন, গোপাল পাল, মিন্টু গাজী সহ একাধিক ব্যক্তি সাংবাদিকদের জানান, দারুল উলুম চৌমুহনী ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ কাদের হেলালী জাল জালিয়াতের মাধ্যমে ৯ বছরে দাখিল পাশ দেখিয়ে এবং সার্টিফিকেট জমা দিয়ে অত্র মাদ্রাসায় অধ্যক্ষ হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে।

২০১২ সালে ২৬ শে মার্চ স্বাধীনতা দিবস উদযাপন উপলক্ষে ফতেপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে “হুজুরে কেবলা” নামক একটি নাটক চলায় মহানবী (সাঃ) কে কটুক্তির দোহাই দিয়ে তার নেতৃত্বে ফতেপুর চাকদাহ গ্রামে সংখ্যালঘুদের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেওয়া হয়।

উক্ত ঘটনায় তার বিরুদ্ধে কালিগঞ্জ থানায় মামলা দায়েরের প্রেক্ষিতে তৎকালীন অত্র মাদ্রাসার সভাপতি অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মহোয় তাকে সাময়িক বরখাস্ত করে।
এরপর২০১৩ সালে অধ্যক্ষ আব্দুল কাদের হেলালীর নেতৃত্বে একাধিক সহিংস জ্বালাও পোড়াও, আওয়ামীলীগ নেতা মোসলেম উদ্দিনকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা সহ প্রায় ডজন মামলার আসামি তিনি।
উক্ত ঘটনায় মাদ্রাসার তৎকালীন সভাপতি নুরুল হক সরদার এবং ম্যানেজিং কমিটির সদস্যরা অধ্যক্ষ আব্দুল কাদেরকে মাদ্রাসা থেকে সাময়িক বরখাস্ত করেন।

ওই মামলায় আটক হয়ে দীর্ঘ এক বছর পর জেল থেকে জামিন পেয়ে বিজ্ঞ আদালতে চাকরি ফেরত ও বেতন ভাতার দাবিতে দেওয়ানী ৬৭/২০২০ এবং জেলা জজ দ্বিতীয় আদালতে দেওয়ানী ০৪/২০২০ মামলা দায়ের করে।
উক্ত মামলায় বিজ্ঞ আদালত তার বেতন ভাতা মাদ্রাসার সমুদয় কাগজপত্র বুঝিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন। আদেশের বিরুদ্ধে মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটি বিজ্ঞ আদালত থেকে আবারও নিষেধাজ্ঞা জারি করে।
অধ্যক্ষ আব্দুল কাদের হেলালীর দায়ের করা ০৪/২০২০ আপিলের প্ররিপ্রেক্ষিতে বিজ্ঞ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক রায় এ উল্লেখ করেন।

একই আদালত থেকে পরস্পর বিরোধী রায় প্রদান করা হয়েছে। এ অবস্থায় স্থগিদের দরখাস্ত মঞ্জুর করা হলো।
প্রার্থিত মতে আগামী ধার্য তারিখ পর্যন্ত দেওয়ানী ৬৭/ ২০২০ মামলার আদেশের আলোকে যুগ্ন জেলা জজ দ্বিতীয় আদালতের দেওয়ানী ৪/ ২০২০ নং মামলার গত ই; ১ /৬/ ২০২২ তারিখের রায় ও ৭৬/২০২২ তারিখের ডিগ্রির কার্যক্রম স্থগিত করা হলো। অর্থাৎ এই আদেশের পর হতে অধ্যক্ষ আব্দুল কাদের হেলালী ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষসহ সকল কার্যক্রম এর পদ হারিয়েছেন। অত্র আদেশের পর হতে তিনি অত্র মাদ্রাসার কেউ নন বলে অভিভাবকরা জানান।

https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/
Exit mobile version