Site icon suprovatsatkhira.com

কপোতাক্ষ নদের উপর নির্মিতব্য ব্রিজে পিলারের দূরত্ব বৃদ্ধির দাবি

তালা প্রতিনিধি : তালার পাখিমারা বিলের জনগণকে ক্ষতিপূরণের অর্থ দিয়ে পুনরায় টিআরএম (জোয়ারাধার) চালু এবং তালার মাগুরায় কপোতাক্ষ নদের উপর নির্মানাধিন ব্রিজের পিলারের দূরত্ব বৃদ্ধিকরণের দাবিতে তালায় সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। পানি কমিটি আয়োজনে মঙ্গলবার (২৭ ডিসেম্বর) সকালে তালা উত্তরণ আইডিআরটিতে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন, কেন্দ্রীয় পানি কমিটির সভাপতি এবিএম শফিকুল ইসলাম। এসময় উপস্থিত ছিলেন উত্তরণ পরিচালক শহিদুল ইসলাম, উপজেলা পানি কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. ময়নুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মীর জিল্লুর রহমান, কেন্দ্রীয় পানি কমিটি নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আলাউদ্দীন জোয়ার্দ্দার, অধ্যাপক রেজাউল করিম, উত্তরণ কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান জমাদ্দার ও দিলীপ সানা প্রমুখ। সংবাদ সম্মেলনে এবিএম শফিকুল ইসলাম বলেন, কপোতাক্ষ অববাহিকার তালা উপজেলার খেশরা, জালালপুর ও মাগুরা ইউনিয়নে অবস্থিত পাখিমারা বিলে ২০১৫ সালের জুলাই মাস থেকে টিআরএম বা জোয়ারাধার কার্যক্রম চালু করা হয়। যার ফলে অববাহিকার বিস্তীর্ণ এলাকা জলাবদ্ধ মুক্ত হয় এবং প্রায় ১৫ লক্ষ মানুষ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে উপকৃত হয়। নৌপথ ও পরিবেশ-প্রতিবেশেরও ব্যাপক উন্নতি ঘটে।

কিন্তু দুঃখজনক বিষয় বিগত ২০২১ সালের এপ্রিল মাসে নদী এবং বিলের মধ্যে সংযোগ রক্ষাকারী খালটি বেঁধে দিয়ে টিআরএম কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। টিআরএম কার্যক্রম বন্ধ হওয়ায় একদিকে উপর্যুপরি পলি জমে নদী আবারও ভরাট হয়ে পানি নিস্কাশনের হুমকি সৃষ্টি করেছে, অন্যদিকে বিলের সার্বিক পরিস্থিতি ক্রমশঃ জটিল থেকে জটিলতর হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, কপোতাক্ষ নদের ২য় পর্যায়ের প্রকল্পে পাখিমারা বিলে টিআরএম কার্যক্রম অব্যাহত রাখা এবং অববাহিকার অন্যান্য কার্যক্রম সম্পাদন করার জন্য ৫৩১ কোটি ৭ লক্ষ টাকার ৪ বৎসর মেয়াদী দ্বিতীয় পর্যায়ের একটি প্রকল্প অনুমোদিত হয়েছে, যার কার্যক্রম শুরু হয়েছে ২০২০ সালের আগষ্ট মাস থেকে। কিন্তু এ প্রকল্পের আওতায় সবথেকে বেশী গুরুত্বপূর্ণ পাখিমারা বিলে টিআরএম চালু করার কোন উদ্যোগ এখনও পর্যন্ত নেয়া হয়নি। তাছাড়া জোয়ারাধারের ক্ষতিগ্রস্ত পেরিফেরিয়াল বাঁধ নির্মাণের জন্যও প্রকল্পের মধ্যে কোন অর্থ বরাদ্দ নেই। জনগণের ক্ষতিপূরণের সম্পূর্ণ টাকাও এখনও পর্যন্ত পরিশোধ হয়নি। এমতাবস্থায় টিআরএম বাস্তবায়নে অচলাবস্থা দেখা দেয়ায় কপোতাক্ষ অববাহিকার বিস্তীর্ণ এলাকা আবারও জলাবদ্ধ হবার আশংকা দেখা দিয়েছে। এসময় তিনি বলেন, যশোরের তাহিরপুর এলাকা থেকে পাইকগাছার শিববাড়ি পর্যন্ত কপোতাক্ষ নদের দৈর্ঘ্য ২১৭ কিলোমিটার। এই নদের উপর ইতোমধ্যে ৪৫টি ব্রিজ নির্মান করা হয়েছে।

আরও ৪/৫টি ব্রিজ নির্মান প্রক্রিয়াধিন রয়েছে। তিনি বলেন, নদের উপর ব্রিজ নির্মানের ফলে ব্রিজের ঘন পিলারে পানি ও পলি বাঁধাপ্রাপ্ত হয়ে নদের মৃত্যু ত্বরান্মিত হচ্ছে। সম্প্রতি তালা উপজেলার মাগুরা বাজার সংলগ্ন কপোতাক্ষ নদের উপর আরও একটি ব্রিজ নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ব্রিজটি নির্মিত হলে এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থার ব্যাপক উন্নয়ন ঘটবে। কিন্তু ব্রিজ নির্মানে যে দূরত্বে পিলার বসানো হচ্ছে তাতে বর্তমান এবং ভবিষ্যতে নদীর নাব্যতা রক্ষা করতে ধ্বংস হবার আশংকা রয়েছে। নদীর মধ্যে পিলারের দূরত্ব আরও বেশি হওয়া প্রয়োজন বলে স্থানীয় জনগণ অভিমত ব্যক্ত করেন। এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে বিষয়টি বিবেচনার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়। এদিকে, কপোতাক্ষ নদের উপর নির্মানাধিন ব্রিজের পিলারের দুরুত্ব বৃদ্ধির দাবীতে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের নিকট স্মারকলিপি প্রদান সহ একাধিক স্থানে সচেতনতা মূলক সভা করা হবে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।

https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/
Exit mobile version