সমীর সমীর রায়, আশাশুনি : আশাশুনির কুল্যা ইউনিয়নের বাহাদুরপুর গ্রামে রেকর্ডীয় জমিতে নদী খনন না করে সিএস ম্যাপ অনুযায়ী নদী খননের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী। আশাশুনির চাপড়া থেকে বুধহাটা-কুল্যা ইউনিয়নের সীমানা দিয়ে ঝাউডাঙ্গাগামী প্রবাহমান বেতনা নদীর প্রবল স্রোতে বাহাদুরপুর গ্রামে বহুবছর ধরে ভাঙন চলে আসছে। গ্রামের শতাধিক পরিবারের ৫ শতাধিক ঘরবাড়ি নদী ভাঙনের কবলে পড়ায় শতশত পরিবার বসতভিটা হারিয়েছে। বাহাদুরপুর গ্রামের জমি নদীর অপর পাড়ে প্রায় ৩০০ ফুট মত পলিজমে ভরাট হয়ে জেগে উঠেছে। এসব জমিতে ইটের ভাটাসহ বিভিন্ন ভাবে দখল নিয়েছে অবৈধ দখলদাররা।
সিএস ম্যাপে থাকা মূল নদী বাহাদুরপুর গ্রামের মধ্যে ২৫০/৩০০ ফুট মত ঢুকে গেছে। প্রবাহমান নদীর স্রোতের তেড়ে বর্ষাকালসহ ঘূর্ণিঝড় ও অন্য আপদকালে এখনকার বেডড়িবাঁধে ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে, ভরাট হওয়া নদী খনন না করে ভাঙন কবলিত ও অতিঝুঁকিপূর্ণ প্রবাহমান নদী ও ভাঙন স্থানের মাটি কেটে নিয়ে নদী খননের অপরিকল্পিত কর্মযজ্ঞ শুরু করার প্রাথমিক প্রক্রিয়া শুরু করেছেন পাউবোর কর্তৃপক্ষ। ইতিমধ্যে নদীতে মাপজোক করা হয়েছে। এবং খুঁটি পুতে যে সীমানা দেখানো হয়েছে, যদি সেই স্থানে খনন করা হয়, তাহলে বাহাদুরপুর গ্রামের বড় অংশের লোকজনের অদূর ভবিষ্যতে ভিটেবাড়ি নিশ্চিহ্ন হওয়ার শঙ্কা রয়েছে।
মাটি কাটা শুরু হলেই কানাই ঘটক, আঃ রহিম বিশ্বাস, মলিনা কর্মকার, মদন দেবনাথ, গৌর কর্মকার, আকবর বিশ্বাস, মিলন কর্মকারসহ ৪০/৫০টি পরিবারের বসতবাড়ি উচ্ছেদ হয়ে যাবে।
বাহাদুরপুর গ্রামের সিবগাতুল্লাহ, মুনছুর সরদার, ইউপি সদস্য নজরুল ইসলাম, রহিম বক্স সরদার, বিশ্বনাথ কর্মকার, কানাই ঘটক, আলিমসহ ভুক্তভোগীরা জানান, প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা যেখানে দেশের সকল গৃহহীনের গৃহনির্মান, ভূমিহীনের ভূমি দিয়ে যেখানে নজির বিহিন কাজ করে যাচ্ছেন, সেখানে সিএস ম্যাপ অনুযায়ী প্রকৃত নদীর স্থানে খনন না করে, ভাঙনের কবলে থাকা এলাকায় খনন কাজ করে মানুষকে গৃহহীন করার ষড়যন্ত্র কেন? নদীর ভরাট অংশ খনন না করে রেকর্ডীয় জমিতে বসবাসকারীদেরকে উচ্ছেদ করার পাঁয়তারা কখনোই মেনে নেওয়া যায় না। তাদের দাবী, সিএস ম্যাপ অনুযায়ী প্রকৃত নদীর স্থানে খনন কাজ করা হোক। তাহলে গ্রামবাসী ভাঙনের কবল থেকে রক্ষা পাবে, নদী তার স্বকীয়তা ফিরে পাবে। এলাকাবাসী পনি উন্নয়ন বোর্ডসহ উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।