Site icon suprovatsatkhira.com

শ্যামনগরে খোলপেটুয়া নদী থেকে অবৈধ বালি উত্তোলন কারি বাবু বেপরোয়া

নিজস্ব প্রতিবেদক: শ্যামনগরের সাবেক ছাত্রদল নেতা আব্দুর রহমান বাবু নব্য আওয়ামী লীগার সেজে একজন সাংসদের নাম ভাঙিয়ে আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে নদী থেকে বালি উত্তোলন করে বহাল তবিয়তে অবৈধ ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। লবন পানি মিশ্রিত বালিতে ঘরবাড়ি তলিয়ে যাওয়ার উপক্রম হওয়া বড়কুপট গ্রামের দু’টি হিন্দু পরিবার হুমকিতে থাকায় তারা প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করায় পাল্টা হুমকির সম্মুখীন হয়েছেন। অবিলম্বে বাবুর বিরুদ্ধে ব্যবসা গৃহীত না হলে ওই দু’টি পরিবার পড়বে অস্বিত্ব সংকটে।

শনিবার সকালে শ্যামনগরের আটুলিয়া ইউনিয়নের বড়কুপট গ্রামে যেয়ে দেখা গেছে নওয়াবেকি বড়কুপট সার্বজনীন দুর্গা মন্দির থেকে ঢিঁল ছোড়া দূরত্বে নওয়াবেকি- কলবাড়ি সড়কে বিক্রির জন্য অবৈধভাবে বালি মজুত করে রেখেছেন শ্যামনগর উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান বাবু। তিনি কখনো দলিল লেখক, কখনো সাংবাদিক , আওয়ামী লীগ নেতা আবার কখনো এমপি সাহেবের নাম ভাঙিয়ে দীপঙ্কর মÐল ও সুপদ মÐলের বসত ভিটার পাশে একরামুল হোসেন ও হুমায়ুন গাজীর জমি লিজ নিয়ে তাতে সরাসরি নদী থেকে মেশিনের মাধ্যমে বালিযুক্ত লোনা পানি তুলে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছেন । ব্যবসা তদারকির দায়িত্ব পালন করছেন বড়কুপটের কবীর হোসেন। অবৈধ বালির ব্যবসার কারণে আব্দুর রহমানকে কয়েকবার জরিমানা করা হলেও ভ্রাম্যমান আদালত তাকে কোন কারাদÐ না দেওয়ায় তিনি ফরফুরে মেজাজে বালির ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন।
দীপঙ্কর মÐল জানান, আব্দুর রহমান বাবু উপজেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসলে ভোল পাল্টে তিনি নব্য আওযামী লীগার বনেযান। বিশেষ দায়িত্ব পালন করায় তিনি এক বড় মাপের জনপ্রতিনিধির সুন্দরবন বিষয়ক সম্পাদক বলে পরিচিতি লাভ করেন। হেন অপকর্ম নেই যে তিনি করেন না।

দীপঙ্কর মÐল আরো জানান, নওয়াবেকি গণমুখী ফাউÐেশনের সমৃদ্দি বাড়ি প্রকল্পের অধীনে তার বাড়িটি প্রথম হওয়ায় এটিএন বাংলা টেলিভিশনে প্রচার করে। এনিয়ে একটি বইও প্রকাশ করা হয়। তিন বছর আগে র্পার্শ্ববর্তী একরামুল হোসেন ও হুমায়ুন গাজীর জমি লিজ নিয়ে তাতে সরাসরি নদী থেকে মেশিনের মাধ্যমে বালিযুক্ত লোনা পানি তুলে অবৈধ ব্যবসা পরিচালনা করে আসছেন আব্দুর রহমান। লোনা পানি মিশ্রিত বালি উত্তোলন করায় তার বসত ভিটায় মিষ্টি পানির পুকুর লবনাক্ত হয়ে গেছে। এ ছাড়া বাড়ির উঠান, সবজি ক্ষেত, রান্না ঘর, মুরগির খামার, তুলসী তলা পানির নীচে ডুবে যায়। শুকিয়ে যায় গাছ পালা। গোসল করা ও ঘর থেকে বের হওয়া ও বসবাস মুশকিল হয়ে উঠেছে। পার্শ্ববর্তী সুপদ মÐলের মাটি ও রেড়ার দেওয়াল পড়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। বিবর্ণ হয়ে গেছে তাদের ঘরবাড়ি। দক্ষিা বাতাস বওয়া শুরু হলে বালি উড়ে ঘরের মধ্যে ঢুকে পড়বে। প্রতিবাদ করায় তোর কোন বাপ আছে বলে হুমকি দেন আব্দুর রহমান। বিষয়টি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যকে জানিয়েও কোন লাভ হয়নি। নিরুপায় হয়ে তিনি গত ২৭ সেপ্টেম্বর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে প্রতিকার চেয়ে আবেদন করেছেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিষয়টি আটুলিয়া ইউপি চেয়ারম্যানকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিলেও গত এক মাসেও তিনি কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি। উপরন্তু তার কিছু করার নেই বলে তাকে (দীপঙ্কর) জানিয়েছেন।

এ ব্যাপারে আব্দুর রহমান বাবুর সঙ্গে মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৫টা ৫০ মিনিটে তার মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তিনি ফোন রিসিভ করেনি। তবে তার সুহৃদ বলে পরিচিত কবীর হোসেন সাংবাদিকদের জানান, কিছুক্ষণ আগে ভাই রিট হুমায়ুনের সঙ্গে পরানপুরের জোড়া হত্যা মামলার দুই আসামী জামিনের জন্য বেরিয়ে পড়েছেন।
আটুলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আবু সালেহ বাবুর সঙ্গে মঙ্গলবার বিকেল চারটা ২০ মিনিটে তার মুঠোফোনে কয়েকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আক্তার হোসেন জানান, বিষয়টি খুব স্পর্শকাতর। অভিযোগ পওয়ার পর তিনি ঘটনাস্থলে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করলেও অসুস্থ হয়ে পড়ায় তিনি তা পারেননি। প্রাথমিকভাবে ওই অবৈধ বালি উত্তোলনকারি ও ব্যবসায়ির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আটুলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আবু সালেহ বাবুকে বলা হয়েছে। গ্রাম্য আদালতের আইন অনুযায়ি ওই ব্যক্তিকে জরিমানা করার সূযোগ রয়েছে। তিনি ব্যবস্থা নিতে অপারগতা প্রকাশ করলে সুস্থ হয়েই ঘটনাস্থলে যেয়ে অভিযোগের সত্যতা পেলে কঠোর ব্যবস্থা নেবেন।

https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/
Exit mobile version