Site icon suprovatsatkhira.com

জয়নগরে খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির চাল খাবে কে: চেয়ারম্যান না খাদ্য কর্মকর্তা?

জয়নগর প্রতিনিধি : কলারোয়া উপজেলার জয়নগর ইউনিয়ন পরিষদ কর্তৃপক্ষের চরম অব্যবস্থাপনা ও উদাসীনতার জন্য খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির আওতায় পনের টাকা কেজি দরে ৩০কেজি চালের উপকারভোগী ৭৫৮ জনের মধ্যে গত দু’মাসে ৬১০ জন উপকারভোগী চাল পায়নি। তাছাড়া বর্তমান চেয়ারম্যান- মেম্বরদের ভোট না দেওয়ায় তালিকায় নাম থাকলেও একাধিক অতিদরিদ্রদের গত দু’মাসের চাল তাদের দেওয়া হয়নি। আর এ ঘটনা উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের মধ্যে জয়নগর ইউনিয়নেই হয়েছে। অনুসন্ধানে জানাগেছে, খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির আওতায় পনের টাকা কেজি দরে মাসে ৩০কেজি চালের ওই অব্যবস্থাপনায় মেম্বর,চেয়ারম্যান এবং তালিকায় নাম থকলেও অতিদরিদ্রদের চাল না দেওয়ার পিছনে উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা জড়িত বলে জানাগেছে।

জানাগেছে,কলারোয়া উপজেলার জয়নগর ইউনিয়নে ৭৫৮ জন অতিদরিদ্র খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় পনের টাকা কেজি দরে মাসিক ৩০ কেজি চাল পাওয়ার জন্য মনোনীত হয়। মনোনীতদের মধ্যে ৪০০ জন উপকারভোগীর চাল সরবরাহের ডিলার মোঃ মোখলেছুর রহমান এবং বাকী ৩৫৮ জন উপকারভোগীর চাল সরবরাহের ডিলার মুক্তিযোদ্ধা আঃ জব্বার। মনোনীত ৭৫৮জন অতিদরিদ্রদের নাম অন-লাইন তালিকা করার কথা থালেও গত সেপ্টেম্বর মাসে অন-লাইন হয়েছে ৪২৮ জন উপকারভোগীর। কিন্তু ডিলাররা ৪২০ জন উপকারভোগীর চাল সরবরাহ করেছে। এছাড়া অক্টোবর মাসে নতুন ৭৫ জন উপকারভোগীর নাম অন-লাইন হয়ে সর্বমোট ৫০৩ জন উপকারভোগীর সংখ্যা দাড়িয়েছে। কিন্তু ডিলাররা ৪৮২ জন উপকারভোগীর চাল সরবরাহ করেছে। গত সেপ্টেম্বর মাসে ৮জন এবং অক্টোবর মাসে ২১ জন মনোনীত অতিদরিদ্র উপকারভোগীরা খাদ্য বান্ধব ওই কর্মসূচির চাল পায়নি। অন-লাইনে উপকারভোগীদের নাম থাকলেও এবং তাদের অনুকুলে বরাদ্ধের চাল ডিলারদের কাছে সরবরাহ করলেও চেয়ারম্যানের সাথে জমির দ্বন্ধ থাকায় জয়নগর ইউনিয়নের ক্ষেত্রপাড়া গ্রামের নন্দদুলাল বসুর এবং চেয়ারম্যানের ভোটের প্রতিপক্ষের কর্মী হওয়ায় প্রতিবন্ধী মোখলেছুর রহমান,পলাশ মোড়ল,আয়ূব আলি,শ্রবণ প্রতিবন্ধী আজিজ সরদারসহ ২১জন উপকারভোগীর চাল দেওয়া হয়নি।

অন-লাইনে নাম থাকলেও এবং তাদেও অনুকুলে চাল বরাদ্ধ হলেও কেন উপকারভোগীকে চাল দেওয়া হয়নি এমন প্রশ্নের জবাবে ডিলার মোঃ মোখলেছুর রহমান জানান, কলারোয়া উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা জাহিদুর রহমান কিছু কার্ডধারী উপকারভোগীর নাম ও সিরিয়াল নং উল্লেখ করে তালিকায় মার্ক করে দিয়েছেন যেন তাদের চাল না দেওয়া হয়। তাই ৪জন উপকারভোগীকে চাল দেওয়া হয়নি। এবিষয় অন্য ডিলার মুক্তিযোদ্ধা আঃ জব্বারের সাথে কথা হলে তিনি জানান, তালিকায় নাম থাকলেও কিছু উপকারভোগীদের চাল দেওয়া হয়নি বিশেষ কারনে। যেটা বলা যাচ্ছেনা। তবে বঞ্চিতরা খবুই গরীব। তবে ডিলাররা বলছেন চাল বন্ধ রাখা উপকারভোগীদের চাল তাদের গোডাউনে আছে। ইদুরে প্রতিনিয়ত চালের বস্তা কেটে দিচ্ছে এবং চাল খেয়ে যাচ্ছে। তাতে আমরা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছি।
এবিষয় জয়নগর ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড ক্ষেত্রপাড়ার মেম্বর রেজাউল বিশ্বাস বলেন, তার ওয়ার্ডে যেসব উপকারভোগীদের চাল দেওয়া হয়নি তারা খবুই গরীব। চাল না দিয়ে তাদের সাথে অবিচার করা হচ্ছে।
জয়নগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বিশাখা সাহা বলেন, সাবেক চেয়ারম্যান যে সব জামায়াত বিএনপি সমর্থিত মানুষের কার্ড দিয়েছিল সেগুলোই বাদ দেয়া হয়েছে। বাদ পড়াদের নামের তালিকা সংশোধন করার কাজ চলছে।

জয়নগর ইউনিয়ন আ.লীগের সভাপতি মাস্টার আজিজুর রহমান বলেন, ইউপি চেয়ারম্যান বিশাখা রাণী সাহা তার নিজের লোকদের বেশী গুরুত্ব দেয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। সরকারি সকল সহায়তা নিয়ে স্বজনপ্রীতি করায় ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড আ.লীগের সকল কার্যক্রম ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। দল ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে।
এবিষয় কলারায়া উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা জাহিদুর রহমানের সাথে মোবাইল ফোনে কথা হলে তিনি জানান,আমি ডিলারদের কোন উপকারভোগীর চাল দিতে বন্ধও করিনি এবং নিষেধও করিনি। তবে আমি ডিলারদের সাথে কথা বলে আপনাকে জানাবো বলে মোবাইলের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।

https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/
Exit mobile version