ফারুক হোসাইন রাজ, কলারোয়া: ফুটপথে কসমেটিক ব্যবসার মাঝে বাঁশি বাজিয়ে মানুষের কাছে বেশ পরিচিত ও ভালোবাসা অর্জন করেছে সাতক্ষীরা কলারোয়ায় মঞ্জরুল ইসলাম নামের এক যুবক। পলিথিনের ছাউনিতে ঘেরা তার ছোট্ট দোকানে আড় বাঁশির সুর শুনতে মানুষের ভীড় লেগেই থাকে এতে দোকানের বেচা-বিক্রিও বেশি হয়। তার বাঁশিতে পল্লীগীতি বাউল গান লোকগীতি দেশাত্মবোধক বাংলা হিন্দিসহ বিভিন্ন গানের বেদনা ও ভালোবাসার সুর তুলে মানুষকে মুগ্ধ করেন।
সোমবার (১০ অক্টোবর) সকালে এমন দৃশ্য দেখা যায় কলারোয়া থানা সংলগ্নের ফুটপথের কসমেটিক ব্যবসায়ী মঞ্জরুল ইসলামের দোকানে। মঞ্জরুল ইসলাম (৩৮) যশোর বাঘারপাড়া এলাকার রফিকুল ইসলামের ছেলে। ১১ বছর ধরে যশোর সাতক্ষীরাসহ বিভিন্ন অঞ্চলের মেলা বা বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ভ্রাম্যমাণ কসমেটিকসের ব্যবসা করেন।
মঞ্জরুল ইসলাম বলেন, অর্থের অভাবে এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে আর লেখা পড়া করতে পারিনি অনেক দুঃখ কষ্ট বড় হয়েছি। ১৮ বছর আগে নরসিংদী এলাকায় উস্তাদ জাহিদ পাগলার কাছ থেকে বাঁশি বাজানো শিখেছি। প্রকৃতার্থে দুঃখ কষ্ট নিয়ে মানুষের জীবন। মানুষ মানুষের দুঃখের কষ্টের কথাগুলো শুনতে বুঝতে চাইনা বা বোঝার সময়টুকুও থাকেনা আবার বিশ্বাস করলে ভৎসনা করে বেইমানি করে কিন্তু আমার বাঁশি আমার সাথে কখনো বেইমানি করিনি। একসময় টেলিভিশনের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ১৮ টা প্রোগ্রাম করেছি। দারিদ্রতার কাছে স্বপ্নগুলো বার বার দুঃস্বপ্নে পরিনত হয়েছে। বাঁশি বাজানো শেখার পর ১১ বছর আগে প্রথম বাঁশের বাঁশির ব্যবসা শুরু করেছিলাম এখন দুইটা কসমেটিকসের দোকান এখনো বাসি আমার দোকানে আছে। বাশির সুর শুনে মানুষ ভালোবেসে আমার দোকানে আসেন বেচা বিক্রি ভালো হয়। তবে এখন প্রতিদিন প্রায় হাজার টাকা করে রোজগার হয় যা দিয়ে আমার বাবা- মা সহ পরিবারের পাঁচ সদস্যের সংসার খুব ভালোভাবেই চলে। বাশির সুর আমি বিক্রি করি না বাঁশি পেশাদার হিসাবে বাজায় না ও আমার কষ্ট প্রকাশের দুঃখ প্রকাশের একমাত্র বিশ্বাস যোগ্য জায়গা বাঁশি। বাঁশিকে প্রচুর ভালোবাসি বিশ্বাস টুকু রাখে।
এসময় তিনি আরো বলেন, প্রতিটি মানুষের উচিত তার প্রতিবেশীর খবর নেওয়া। তারা কিভাবে জীবন যাপন করছে এ বিষয়গুলো খেয়াল রাখা উচিত তাহলে কোনো প্রতিভা কখনো বিলুপ্ত বা ধ্বংস হয়ে যাবে না অসহায় পরিবারের পাশে দাঁড়ালে অবশ্যই সুপ্ত প্রতিভাগুলো একসময় বিকশিত হবে এবং দেশে ভাল অবদান রাখতে পারবে।
স্থানীয় আদি বর্ণমালা আর্ট প্রেসের স্বত্বাধিকারী আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, তার বাঁশির সুর শুনতে ভালই লাগে। তার দোকানে সারাক্ষণ ভীড় থাকে। কসমেটিকস ব্যবসায়ী মঞ্জরুল ভাইয়ের বাড়ি অনেক দূরে হলেও সে এখন আমাদের কাছে কষ্টের মাঝেও যেন এক আনন্দের বিনোদন ও খুব আপন হয়ে উঠেছে। মাঝে মাঝে কাজ রেখেও তার বাসির সুর শুনতে যায়।