নিজস্ব প্রতিনিধি: কালিগঞ্জের পল্লীতে পরকীয়া সন্দেহ ও মোটা অংকের যৌতুকের টাকা না পেয়ে কৃষ্ণা বিশ্বাস (২০) নামে এক গৃহবধূকে স্বামী কর্তৃক মারপিট, নির্যাতন ও গলায় ফাঁস দিয়ে হত্যার ঘটনায় নিহত গৃহবধূর মা কৌশল্যা বিশ্বাস বাদী হয়ে ঘাতক স্বামী, শাশুড়ি, শ্বশুর, ননদ সহ ৪ জনকে আসামি করে শুক্রবার বিকেলে থানায় এজাহার দায়ের হয়েছে। থানার এজাহার সূত্রে জানা যায়, দেবহাটা থানার হাদিপুর গ্রামের মৃত বিমল বিশ্বাসের একমাত্র কন্যা কৃষ্ণা বিশ্বাসের সাথে কালিগঞ্জ উপজেলার মুকুন্দপুর গ্রামের কালিপদ বিশ্বাসের ছোট ছেলে সিঙ্গাপুর প্রবাসী তাপস বিশ্বাসের ৩ বছর আগে বিবাহ হয়।
বর্তমান তাদের ঘরে ২ বছরের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। বিবাহের পর হতে পরকীয়া সন্দেহে এবং মোটা অংকের টাকা যৌতুকের দাবিতে প্রায় স্বামী, শাশুড়ি, শ্বশুর ননদ মিলে মারপিট নির্যাতন চালিয়ে আসছিল।
শারদীয় দুর্গা পূজা উপলক্ষে শ্বশুরবাড়ি হতে ৫০হাজার টাকা যৌতুক দাবি করে ঘাতক স্বামী তাপস।
টাকা না দেওয়ায় স্ত্রী কৃষ্ণা বিশ্বাসের উপরে নির্যাতন করে বৃহস্পতিবার (৬অক্টোবর) সকাল আনুমানিক ১০ টার দিকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে।
এরপর ঘরের ফ্যানের সাথে ঝুলিয়ে ঘরে তালা লাগিয়ে শিশু সন্তান এবং পরিবারের সবাইকে নিয়ে পালিয়ে যায়।
ওই সময় স্থানীয়রা টের পেয়ে বেলা ১২টার দিকে থানায় খবর দেয়।
খবর পেয়ে থানার উপরিদর্শক আব্দুর রহিম বিকেলে ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। এ ব্যাপারে থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের হয়েছে।
শুক্রবার সকালে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করে পুলিশ।
ঘটনার সত্যতা জানার জন্য শুক্রবার দুপুরে দেয়া গ্রামে গেলে স্থানীয় ইউপি সদস্য হাসান, প্রতিবেশী মহিউদ্দিন সহ একাধিক ব্যক্তি সাংবাদিকদের জানান, তাপস দীর্ঘ ৭/৮ বছর সিঙ্গাপুর ছিলেন। দেশে ফিরে বিয়ে করে আবারও সিঙ্গাপুরে যান। তার কন্যা সন্তান হলে বছরখানেক আগে সে দেশে ফিরে আসে।
এরপর হতে পরকীয়া সন্দেহ এবং পারিবারিক কলহ বিবাদ লেগে থাকতো। গত বৃহস্পতিবার তার ঘরে স্ত্রী কৃষ্ণ বিশ্বাসের ঝুলন্ত মরদেহ দেখে থানায় খবর দেওয়া হয়।
ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, ঘটনার পর হতে বাড়ি তালাবদ্ধ অবস্থায় আছে। কোলের ছোট শিশু কন্যাটি এক প্রতিবেশীর বাড়িতে কান্নাকাটি করছে। ঘটনার পর হতে পুলিশ একাধিকবার অভিযান চালালেও কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি।