নিজস্ব প্রতিনিধি: সাতক্ষীরার ৪০০ বছরের ঐতিহ্যবাহী গুড় পুকুরের মেলা আগামী ১৮ সেপ্টেম্বর (রবিবার) থেকে শুরু হচ্ছে। মনসা পূজার মধ্য দিয়ে শুরু হয়ে প্রাচীন লোকজ সংস্কৃতির এই মেলা চলবে টানা দুই সপ্তাহ ব্যাপী। মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে ঐতিহ্যবাহী গুড়পুকুর মেলা- ২০২২ সুষ্ঠু ও সুশৃঙ্খলভাবে অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে এক প্রস্তুতিমূলক সভায় এ তথ্য জানানো হয়।
সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ুন কবিরের সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সার্বিক কাজী আরিফুর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) কনক কুমার দাস, সাতক্ষীরা পৌরসভার প্যানেল মেয়র কাজী ফিরোজ হাসান, সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) স.ম কাইয়ুম, সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলী সুজন, হিন্দু বৈদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি বিশ্বজিৎ সাধু, বীর মুক্তিযোদ্ধা সুভাষ ঘোষ, জেলা মন্দির সমিতির সভাপতি অ্যাড. সোমনাথ ব্যানার্জি, পৌর কাউন্সিলর নমিতা রাণী, রাবেয়া পারভীন, বাস মালিক সমিতির সভাপতি সাইফুল করিম সাবুসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
সভায় জানানো হয়, বিশ্বকর্মা পূজা উপলক্ষ্যে অনুষ্ঠিতব্য এ মেলা সাতক্ষীরার ৪০০ বছরের ঐতিহ্য ধরে রাখতে এ বছরও জাকজমকপূর্ণ পরিবেশে জেলা প্রশাসন ও পৌরসভার উদ্যোগে মেলা অনুষ্ঠিত হবে।
এসএসসি পরীক্ষাকে সামনে রেখে সভায় শহীদ আব্দুর রাজ্জাক পার্কে মেলার স্টল স্থাপন করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এছাড়া মেলা প্রাঙ্গণ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা, নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে সার্বক্ষণিক তদারকির ব্যবস্থা, সিসি ক্যামেরা স্থাপন, পর্যাপ্ত আনসার সদস্য নিশ্চিত করে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ এবং আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ টিম কাজ করবে বলে সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
বক্তরা বলেন, তিনশ বছর আগে শুরু হওয়া ভাদ্র মাসের শেষ দিনের এই পূজা ও মেলা বসে সাতক্ষীরা শহরের পলাশপোলে গুড় পুকুর পাড়ে প্রাচীন বটবৃক্ষের নীচে। শহরব্যাপী জমজমাট হয়ে থাকা এ মেলা ১৫ দিন থেকে এক মাসেরও বেশি সময় ধরে চলে।
প্রসঙ্গত ঃ ২০০২ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় পাঁচ মিনিটের ব্যবধানে একটি সিনেমা হল ও সার্কাস প্যান্ডেলে বোমা হামলা চালানো হয়। এতে তিন জন নিহত হয় এবং আহত হয় শতাধিক। এরপর থেকে দীর্ঘ ৮ বছর এ মেলা বন্ধ ছিল। প্রতি বছর ৩১ ভাদ্র হিন্দু স¤প্রদায়ের সর্পদেবী মনসা পূজার মধ্য দিয়ে শহরের পলাশপোল এলাকায় প্রাচীন আমলের গুড়পুকুরকে ঘিরে বসতো এ মেলা। একই দিনে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা পালন করতেন বিশ্বকর্মা পূজা। মেলায় দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ব্যবসায়ীরা তাদের পসরা নিয়ে অংশ গ্রহণ করতেন।