Site icon suprovatsatkhira.com

মাদকের ভয়াবহতা রুখতে পারছে এলাকাবাসি

ফারুক হোসাইন রাজ, কলারোয়া: প্রায় ৮০০ বছরের প্রাচীন ঐতিহ্য শ্যামসুন্দর মন্দিরটি সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলা এলাকায় মঠ-বাড়ি নামেও বেশ পরিচিত। মন্দিরটি প্রতœতত্ত¡ বিভাগের তালিকাভুক্ত থাকলেও সংস্কার অভাবে চুন সুরকির নির্মিত শৈল্পিক কারুকাজ ইট ধ্বসে ভবন গুলো বিলীন হয়ে যাচ্ছে। মন্দিরের ভ্রমণ পিয়াসুদের নিরাপত্তা ও অবকাঠামো সংরক্ষণে সীমানা প্রাচীর কড়া নজরদারি না থাকায় মন্দিরের চারিদিকে ঘনবাগান ও অন্ধকারাচ্ছন্ন কক্ষে অসামাজিক কার্যালাপসহ ভয়ংকর মাদকের আস্থানায় রূপ নিয়েছে।

বর্তমানে দিনে ও রাতের বেলায় পরিদর্শনের নামে অধিকাংশ সময়ে বিভিন্ন বয়সের নারী- পুরুষ অসামাজিক কার্যকলাপে লিপ্ত হয়ে যত্রতত্র ময়লা আবর্জনা ফেলে মন্দির নোংরা করছে যা ঘৃণিত কাজ। বিভিন্ন সময়ে এলাকার শৃঙ্খলা নষ্ট করার পাশাপাশি ফেনসিডিল গাজা ইয়াবাসহ মাদক গ্রহণ ও বিক্রির বিশেষ স্থান হিসেবেও ব্যবহার হচ্ছে শ্যামসুন্দর মন্দিরটির অন্ধকারাচ্ছন্ন বিশেষ কয়েকটি কক্ষ। এ সকল নেক্কারজনক অসামাজিক কার্যকলাপ ও মাদকের ভয়াবহতা রুখতে এবার মন্দিরে তেরোটি প্রবেশদ্বার বালু সিমেন্টের ঢালাই দিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে এমনটি জানিয়েছেন উপজেলার সোনাবাড়িয়া ইউনিয়নের শ্যামসুন্দর মন্দির কমিটির সভাপতি বাবু দেব প্রসাদ চৌধুরী।

রবিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, প্রাচীন এ ঐতিহ্যবাহী মন্দিরের ৪টি ছোট ও একটি তিন তলা বিশিষ্ট ধ্বংসাবশেষ প্রধান ভবন আছে। প্রাচীর না থাকায় মন্দিরের চারিদিক থেকে উঠতি বয়সের ছেলে – মেয়েরা অযাচিত ঘোরাফেরা করছে। অন্ধকারাচ্ছন্ন কক্ষগুলোর মধ্যে ফেনসিডিলের উচ্ছিষ্ট খালি বোতল সিগারেটসহ অসামাজিক কার্যকলাপে লিপ্তের পরে ফেলানো যত্রতত্র ময়লা আবর্জনা ছড়িয়ে থাকায় দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। এ মন্দিরের ভিতর দিয়ে একটি দরজা খোলা রেখে বাইরের ১৩টি স্থানের প্রবেশ স্থান ইট সিমেন্টের ঢালাই দিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

শ্যামসুন্দর মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক জগবন্ধু নন্দী বলেন, মন্দিরের শৃঙ্খলা নিরাপত্তা রক্ষায় ও ভ্রমণ পিপাসুদের চারিদিকের পুরাতন নিদর্শন দেখতে একটি দরজা খোলা রেখে অন্য ১৩টি প্রবেশপথ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন কমিটি কলারোয়া শাখার সাধারণ সম্পাদক সিদ্ধেশ্বর চক্রবর্তী বলেন, কিছু খারাপ মানুষের জন্য প্রতিদিন মানুষ প্রাচীন ঐতিহ্য দর্শন থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। মন্দিরের চারিদিকে যাতে পাচিল নির্মাণ হয় ও প্রশাসনের কড়া নজরদারি যাতে বৃদ্ধি পায়। বিকৃতি কোন মানুষ যাতে এখানে অসামাজিক কার্যকলাপে জড়াতে না পারে ও প্রাচীন ঐতিহ্য যাতে রক্ষা পায় এ জন্য জেলা পুলিশ সুপারসহ স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেছেন।

সোনাবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বেনজির হোসেন হেলাল বলেন, মন্দিরটি সংস্করণ অতি প্রয়োজন। মন্দির কমিটির কর্তৃপক্ষ ঐতিহ্যবাহী এ মন্দিরে প্রবেশ স্থান গুলো বন্ধ করে দেওয়ার বিষয়টি তাকে কেউ জানায়নি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও রুলী বিশ্বাস বলেন, মন্দিরে অসামাজিক কার্যকলাপ বা মাদকের সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে শ্যামসুন্দর মন্দির কমিটির কাছ থেকে কোন অভিযোগ পাইনি। এমনকি মন্দিরের চারিদিকের প্রবেশপথ বন্ধ করে দেওয়ার বিষয়টিও তারা জানাইনি। এ বিষয়ে মন্দির কমিটির সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/
Exit mobile version