নিজস্ব প্রতিবেদক: সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার হামিদপুরে জবরদখলকৃত জমি উদ্ধার করতে আদালতে দেওয়ানী মামলা করার প্রতিবাদে এক গৃহবধুকে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত আসামী আদালত থেকে জামিনে মুক্তি পেয়ে মামলা তুলে না নেওয়ায় ওই গৃহবধুর ছেলে ও ননদকে পিটিয়ে জখম করা হয়েছে। থানায় অভিযোগ দেওয়ায় ওই গৃহবধুর ছেলেকে দিয়ে আসামীর স্ত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টার মিথ্যা অভিযোগ করা হয়েছে বর্তমানে ওই গৃহবধু ও তার পরিবারের সদস্যরা ওই আসামীর হুমকিতে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।
কলারোয়া উপজেলার যুগিখালি ইউনিয়নের হামিদপুর গ্রামের এক প্রায় অশিক্ষিত কৃষক জানান, তারা তিন ভাই ও চার বোন। ভিটা ও বিলান মিলে ৫ বিঘা সম্পত্তির মালিক তারাসহ ১৩ জন শরীক। ১৯৯০ সালে তিনি প্রথম বিয়ে করার সময় বউ দেখতে এসে ঘরের টিনের বাক্স ভেঙে দলিলসহ মূল্যবান কাগজপত্র চুরি করে তা আত্মসাৎ করে তাদের প্রতিপক্ষ আলম দফাদারের ছেলে শহীদুল ইসলাম দফাদার। পরে শহীদুল ও তাদের শরীকরা সেটেলমেন্ট অফিসে আর্থিক সুবিধা দিয়ে তাদের (কৃষক) একাংশ জমি বর্তমান মাপ জরিপে রেকর্ড করে নিয়েছে। গায়ের জোরে ২০ শতক ভিটা জমি ও সকল বিলান জমি দখলে নিয়েছে শহীদুল ও তার সহযোগিরা। বর্তমানে চার শতক ভিটার উপর ঘর বানিয়ে তিনি বসবাস করছেন। শহীদুলের ছেলে রাতুল দুবাইতে থাকার সুবাদে টাকার প্রভাব খাটিয়ে ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসীদের নিয়ে বিভিন্ন সময়ে হুমকি ধামকি দিয়ে আসছে। জমির রেকর্ড সংশোধনের জন্য তিনিও তার শরীকগণ ২০২১ সালে ল্যাÐ সার্ভে ট্রাইব্যুনালে তিনটি ও কলারোয়া সহকারি জজ আদালতে একটি দেওয়ানী মামলা করায় শহীদুল ও তার শরীকরা বেপরোয়া হয়ে ওঠে। তাকে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য বিভিন্ন সময় চাপ দেওয়া হয়। মামলা তুলে নিতে রাজী না হওয়ায় তার স্ত্রীকে গত ২৭ মে ঘরের মধ্যে ফেলে মুখের মধ্যে কাপড় ঢুকিয়ে দিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করে। এ ঘটনায় তার স্ত্রী বাদি হয়ে গত পহেলা জুন শহীদুলের নাম উলে¬খ করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে কলারোয়া থানায় মামলা দায়ের করে। রাতেই পুলিশ শহীদুলকে গ্রেপ্তার করে। ২৯ জুন সে জেলা ও দায়রা জজ কোর্ট থেকে জামিনে মুক্তি পায়। এরপর থেকে শহীদুল মামলা তুলে নেওয়ার জন্য তাকে ও তার পরিবারের সদস্যদের হুমকি দিয়ে আসছিল শহীদুল। মামলা তুলতে রাজী না হওয়ায় গত ৪ সেপ্টেম্বর সকাল ৯টার দিকে শহীদুল তাদের বাড়িতে এসে গালিগালাজ করতে থাকে। আপত্তি করায় তার বোন ও ছেলেকে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে জখম করা হয়। স্থানীয়রা তাদেরকে উদ্ধার করে কলারোয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপে¬ক্সে ভর্তি করে। বর্তমানে তারা ওই স্বাস্থ্য কমপে¬ক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এ ঘটনায় তিনি (কৃষক) থানায় অভিযোগ দিলে নিজেকে রক্ষা করতে নিজের স্ত্রীকে দিয়ে ভাতিজার বিরুদ্ধে কাল্পনিক ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ দিয়েছে। দুইপক্ষের অভিযোগ পেয়ে পুলিশ কৌশলে আলোচনার মাধ্যমে মীমাংসা করে নেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে। বর্তমানে তারা শহীদুল ইসলাম ও তার সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্যদের হুমকি ধামকিতে বাড়িতে উঠতে পারছেন না।
এ ব্যাপারে শহীদুল ইসলাম দফাদার জানান, তিনি রেকর্ডমূলে পাওয়া জমি দখল করে আছেন। রেকর্ড সংশোধন করে তবেই জায়গা থেকে সরাতে হবে।
কলারোয়া থানার উপপরিদর্শক রঞ্জন কুমার মালো জানান, পাল্টাপাল্টি অভিযোগ পাওয়ায় উভয়পক্ষকে থানায় ডাকা হয়েছে। বসাবসির মাধ্যমে শান্তি ফিরে না এলে মামলা নেওয়া হবে।
ধর্ষণ চেষ্টার মামলা তুলে না নেওয়ায় হামলা :ভয়ে বাড়ি ফিরতে পারছে না কৃষক পরিবার
https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/