সেপ্টেম্বর ২১, ২০২২
কলারোয়ায় গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষে সাবলম্বি আব্দুস সাত্তার
ফারুক হোসাইন রাজ, কলারোয়া: সবজি চাষের পাশাপাশি তিন শতক জমিতে ২০০৮ সালে পরীক্ষামূলক বারি -৮ জাতের গ্রীষ্মকালীন টমেটো আবাদ শুরু করে জেলার কলারোয়ার কামারালী গ্রামের আব্দুস সাত্তার। টমেটোর বাজারে চাহিদা থাকায় ভালো দামে বিক্রি করতে পেরে সাবলম্বী হয়েছেন তিনি৷ তার সাফল্য দেখে প্রতি বছরই কামারালী মান্দারতলা এলাকায় সবজিটির চাষির সংখ্যা বেড়েছে প্রায় শতাধিক। চলতি মৌসুমে তার ২০ শতক জমির টমেটো ক্ষেত থেকে প্রতিদিন প্রায় ১০০ কেজি টমেটো মাঠ থেকে পাইকারি ব্যবসায়ীরা ক্রয় করছে ৬৫ থেকে ৭০ টাকা দরে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কলাটোয়া উপজেলার যুগিখালী ইউনিয়নের কামারালী মান্দারতলা এলাকায় প্রায় ৩০০ বিঘার মাঠ। এ মাঠে এবার ২৫০ বিঘা জমিতে আবাদ হয়েছে আমনের মিনিকেট, স্বর্নসহ বিভিন্ন মোটা চাউলের ধান এর মাঝেই সাদা পলিথিনের ছাউনিতে প্রায় ৬৫ বিঘা জমিতে চাষ হয়েছে বারি-৮ জাতের গ্রীষ্মকালীন টমেটো। সম্ভাবনাময় এ টমেটো চাষ গত দুই বছরের তুলনায় দ্বিগুণ বেড়েছে। তবে ফল সংগ্রহগার না থাকায় ঝড় বৃষ্টির মাঝে ক্ষতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে কৃষকদের। কামারালী সানা পাড়া গ্রামের বদরউদ্দিন সানার ছেলে সফল টমেটো চাষি আব্দুস সাত্তার বলেন, ১৪ বছর ধরে ধান মাছ ও সবজি চাষ করছি। এর মধ্যে সবথেকে লাভজনক ফসল গৃষ্মকালীন টমেটো। শুরুর দিকে তিন জন চাষ করলেও লাভজনক হওয়ায় সলিডারিডার্ড নেটওয়ার্ক এশিয়া ও কৃষি অফিসের সহযোগিতায় তিনিসহ প্রায় শতাধিক কৃষক নিরাপদ এ টমেটো চাষ করে সফলতা পেয়েছেন। তিনি আরও বলেন, এক বিঘা জমিতে ধান আবাদ করলে সাড়ে ৩ মাসে ২০ মন ধান হয় এতে খরচের মাত্রাও বেশি। গ্রীষ্মকালীন টমেটো আবাদ করে মৌসুমের ৬ মাসে প্রতি বিঘাতে প্রায় ৩০০ মনের মত ফল বিক্রি করা যায় যার গড় বাজার মূল্য ৫০ টাকা করে হলে বিঘাতে প্রায় সাড়ে ৫ থেকে ৬লক্ষ টাকার ফল বিক্রি করা যায়। খরচ বাদে মৌসুম শেষে দেড় থেকে দুই লক্ষ টাকা লাভ থাকে। লাভজনক ফসল হওয়ায় গত বছরের তুলনায় চলতি মৌসুমে ফসলটির চাষ বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ। তবে ডিজেল, সার ও কিটনাশকের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন। একই সঙ্গে ভরা মৌসুমে ভারত থেকে টমেটো আমদানি না করতেও সরকারের প্রতি আহŸান জানান। যুগিখালী ইউনিয়নের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা তুষার কান্তি সরকার বলেন, কলারোয়া উপজেলার বর্তমানে প্রায় ৬৫ হেক্টর জমিতে ১৫০ জন কৃষক এই টমেটো চাষ করেছেন। আব্দুস সাত্তারসহ সাবলম্বি হয়েছেন অনেক কৃষক, কর্মসংস্থান হয়েছে দেড় হাজার শ্রমিকের। কামারালী মান্দারতলা, বাটরাসহ অনেক এলাকায় এখন গ্রীষ্মকালীন টমেটোর চাষ হচ্ছে। গ্রীষ্ম কালীন এ টমেটোর চারা জৈষ্ঠ্য ও আষাঢ় মাসে রোপন করা হয় রোপনের ৭৫ থেকে ৮০ দিন পর গাছ থেকে ফল পাওয়া যায় ৬ মাস পর্যন্ত। উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ আবুল হোসেন মিয়া বলেন, কলারোয়ার মাটি ও আবহাওয়া টমেটো চাষের জন্য খুবই উপযোগী। সল্প সময়ে অত্যন্ত লাভজনক সবজি হওয়ায় এ অঞ্চলের কৃষদের টমেটো চাষে আগ্রহ বাড়ছে। আগামীতে যাতে টমেটো চাষিরা তাদের উৎপাদিত টমেটে ভালোভাবে ক্রয়-বিক্রয়ে করতে পারে এ জন্য একটি বিপণন কেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হবে। এছাড়াও কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব সায়েদুল ইসলাম টমেটো ক্ষেত পরিদর্শন করে তিনি কৃষকদের আশ্বস্ত করেন শিগগিরি কলারোয়াতে সবজি সংরক্ষণের জন্য মাল্টি চেম্বার কোল্ড স্টোরেজ নির্মাণের ব্যবস্থা করা হবে, যেখানে টমেটোর পাশাপাশি বিভিন্ন সবজি ও আলু সংরক্ষণ করা যাবে। 8,180,779 total views, 3,140 views today |
|
|
|