আগস্ট ১, ২০২২
স্কুলের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে
নিজস্ব প্রতিনিধি : সাতক্ষীরা সদর উপজেলায় শারমীন সুলতানা নামে এক প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে সহকারী শিক্ষকদের স্বাক্ষর জাল জালিয়াতি করে বিদ্যালয়ের উন্নয়ন ফান্ডের (¯িøপ) বরাদ্দের টাকা আত্মসাতসহ মিথ্যা প্রত্যয়নপত্র দিয়ে অর্থ-বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত শারমীন আক্তার সদর উপজেলার সোনারডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। জানা যায়, ২০২০-২১ অর্থ বছরে সোনারডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ¯িøপ কার্যক্রম বাস্তবায়নের জন্য অগ্রিম গৃহীত অর্থেও সমন্বয় বিলের বিপরীতে ওই বছরের ২৪ মে শিক্ষা উপকরণ চার্ট ক্রয় বাবদ ২ হাজার টাকা, ২৫ মে অটোবির ৪টি হাতল চেয়ার ক্রয় বাবদ ২০ হাজার, ২৬ মে ৬টি প্লাস্টিকের চেয়ার ক্রয় বাবদ ৩হাজার টাকা, ৩টি ক্যান মেরামত বাবদ ২হাজার টাকা, ২৭ মে টিউবওয়েলের ড্রেন তৈরি বাবদ ৫হাজার টাকা ও লোহার গেট তৈরি বাবদ ১৮হাজার টাকার একটি ভাউচারে বিদ্যালয়টির সহকারী শিক্ষক আম্বিয়া খাতুন ও আব্দুল আওয়ালের স্বাক্ষর জাল করে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর জমা দেন শারমীন আক্তার। এক পর্যায়ে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির মাসিক সভায় প্রধান শিক্ষকের স্বাক্ষর জাল জালিয়াতির বিষয়টি উঠে আসলে তোপের মুখে পড়েন অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক শারমীন আক্তার। এক পর্যায়ে বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের সাথে শারমীন আক্তারের দূরুত্ব সৃষ্টি হয়। এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রধান শিক্ষক শারমীন আক্তারের বিরুদ্ধে স্বাক্ষর জাল জালিয়াতিসহ টাকার বিনিময়ে ভুয়া প্রত্যয়নপত্র দেয়ারও অভিযোগ রয়েছে। ২০২১ সালের ৪ জানুয়ারি অন্তরা রাণী নামে এক ছাত্রীর পরিবারের থেকে মোটা টাকা গ্রহণ করে অন্তরা রাণীকে ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মর্মে প্রত্যয়ণপত্র দেন শারমীন আক্তার। তবে অন্তরা রাণী ওই বিদ্যালয়ে কখনও পড়াশোনা করেননি বলে জানান বিদ্যালয়টির অন্যান্য শিক্ষকরা। এ ব্যাপারে বিদ্যালয়টির সহকারী শিক্ষক আম্বিয়া খাতুন বলেন, গত বছর আমার স্বাক্ষর জাল জালিয়াতি করে ভুয়া ভাউচার জমা দিয়ে টাকা উত্তোলন করেন বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক শারমীন আক্তার। বিষয়টা আমার দৃষ্টিগোচর হলে আমি প্রধান শিক্ষককে প্রশ্ন করলে তিনি আমাকে উল্টাপাল্টা কথা শোনাতে থাকেন। সহকারী শিক্ষক আব্দুল আওয়াল বলেন, আম্বিয়া খাতুনের মতই আমার স্বাক্ষর জাল জালিয়াতি করে ভুয়া ভাউচার জমা দিয়ে ¯িøপ ফান্ডের টাকা আত্মসাৎ করেন প্রধান শিক্ষক শারমীন আক্তার। এ ব্যাপারে আমি শারমীন আক্তারের কাছে জবাবদিহিতা চাইলে তিনি আমাকে নানাভাবে হয়রানি করে চলেছেন। বিদ্যালয়টির অপর এক সহকারী শিক্ষক বলেন, প্রধান শিক্ষকের নানা ধরনের দুর্নীতি সমন্ধে জানার পরেও আমরা প্রতিবাদ করতে পারি না। কেননা, আমরা তার অধীনে কাজ করি। তার নিয়ম বহির্ভূত কর্মকান্ডের প্রতিবাদ করলেই বিভিন্নভাবে হয়রানির শিকার হতে হয় আমাদের। তিনি আরও বলেন, তার নিয়মবহির্ভূত কর্মকান্ডের প্রতিবাদ করাই সম্প্রতি আব্দুল আওয়াল নামে এক শিক্ষককে নানাভাবে হয়রানি করে চলেছেন তিনি। সমাজে আওয়ালের মুখ দেখানোটাই লজ্জাজনক হয়ে উঠেছে। আমাদেরও সম্মান আছে সংসার আছে। কারও দুর্নীতির প্রতিবাদ করে যদি সম্মান হারাতে হয় তাহলে প্রতিবাদ করার দরকার কী? বলে প্রতিবেদকের কাছে প্রশ্ন রাখেন তিনি। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ভুয়া প্রত্যয়নপত্র দেয়া সমন্ধে সকলে অবগত। তবে সরকারি প্রতিষ্ঠান যদি কারও জিম্মায় থাকে তাহলে আমাদের করণীয়টাও কী? এ ব্যাপারে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক শারমীন আক্তার গণমাধ্যমে কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করে বলেন, আমি যদি নিয়মবহির্ভূত কাজে জড়িত থাকি সেটার জন্য আমার অফিস আছে। তারাই তদন্ত করবেন। এ ব্যাপারে আমি কথা বলতে আগ্রহী না। 8,772,083 total views, 3,806 views today |
|
|
|