Site icon suprovatsatkhira.com

শিক্ষকের পিটুনিতে হাত ভাঙল পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রীর

জি এম রুস্তম আলী, বুড়িগোয়ালিনী (শ্যামনগর) প্রতিনিধি : শিক্ষকের বেপরোয়া পিটুনিতে পঞ্চম শ্রেণির এক ছাত্রী হাত ভেঙে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। সোমবার (০১ আগস্ট) সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার ১০৩নং সেন্ট্রাল আবাদ চন্ডিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। বুধবার (০৩ আগস্ট) আহত শিক্ষার্থীর অভিভাবক জানান, ‘১০৩নং সেন্ট্রাল আবাদ চন্ডিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক এস এম শহিদুল ইসলাম এ ঘটনা ঘটিয়েছেন’। শিক্ষকের পিটুনিতে হাত ভেঙে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আনিশা (১১) শ্যামনগর উপজেলার বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের আবাদ চন্ডিপুর (বনবিবি তলা) গ্রামের আবুল হোসেনের মেয়ে ও সেন্ট্রাল আবাদ চন্ডিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির মেধাবী ছাত্রী।

আহত শিশুটির পিতা আবুল হোসেন বলেন, ‘আমি বাড়িতে আসার কিছুক্ষণ পর মেয়ে এসে কাঁদতে থাকে। তার কাছে জিজ্ঞাসা করা হলে সে বলে স্যার আমাকে মেরেছে। আমার হাতে প্রচুর যন্ত্রণা হচ্ছে। আমি সহ্য করতে পারছি না’। তিনি আরো জানান, ‘অবস্থা বেগতিক দেখে আমি তাৎক্ষণিক স্থানীয় ডাক্তার অনিমেষের সহযোগিতা নেই। ডাক্তার দেখে আমাকে বলেন, অবস্থা আমার নিয়ন্ত্রণের বাইরে আপনি ভাল ডাক্তার দেখান। পরবর্তীতে আমি শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করি। সেখানে কর্তব্যরত ডাক্তার হাতের এক্সরে করানোর কথা বলেন। এক্সরে রিপোর্টে দেখা যায় তার বাম হাতের কবজির দুইটা হাড় ভেঙে গেছে’। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর পিতা জানান, ‘অভিযুক্ত শিক্ষক এস এম শহিদুল ইসলামের বড় ভাই স্থানীয় মেম্বার হওয়ায় বিভিন্নভাবে চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে। রীতি-মত হুমকি-ধামকিও দিচ্ছে। আমি অসুস্থ মেয়ে ও পরিবার নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি’। আহত শিক্ষার্থী আনিশার মা শাহানা পারভীন বলেন, ‘আমি এই স্কুলের বিদ্যোৎসাহী সদস্যা হিসাবে বিগত দিনে অভিযুক্ত সহকারী শিক্ষক এস এম শহিদুল ইসলামকে একই অপরাধে বার বার সতর্ক করেছি। কিন্তু তিনি স্থানীয় হওয়ায় ম্যানেজিং কমিটির কোন কথাই তোয়াক্কা করেন না’। এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক এস এম শহিদুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ‘স্কুলে নতুন ভবন নির্মাণের কাজ পরিদর্শন করতে এসেছিলেন সংশ্লিষ্টরা। আমি বাচ্চাদের ক্লাসে যেতে বলেছিলাম। কিন্তু কেউই কথা শুনছিল না। তাই আমি লাঠি দিয়ে কয়েকজন মেয়েকে মেরেছি’। তিনি আরো বলেন, ‘কিছুদিন আগে আমি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ডান হাতে ব্যথা পেয়েছি।

এখনও ব্যান্ডেজ দেয়া আছে। বাম হাত দিয়ে মেরেছি। তাতে এমন ঘটনা ঘটার কথা নয়। স্থানীয় শত্রæতার স্বীকার হচ্ছি আমি’। ১০৩নং সেন্ট্রাল আবাদ চন্ডিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সৌভিক রায় বলেন, ‘ঘটনার দিন পহেলা আগস্ট সোমবার আমি মাসিক মিটিংয়ে ছিলাম। পরে শুনেছি, বিষয়টা দুঃখজনক। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে’। ১০৩নং সেন্ট্রাল আবাদ চন্ডিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নাজমুত শাহাদাৎ মিলন বলেন, ‘খুবই দুঃখজনক ঘটনা। আমি শুনেছি অভিযুক্ত শিক্ষককে কোন অবস্থায় ছাড় দেওয়া হবে না’। উপজেলা সহকারী শিক্ষা প্রাথমিক অফিসার রমিজ মিয়া বলেন, ‘দুইদিন আগের ঘটনা, আমি জেনেছি আজ। প্রধান শিক্ষককে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে কারণ দর্শানোর নোটিস দিতে বলেছি। ঘটনার সত্যতা পেলে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব’।

https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/
Exit mobile version