Site icon suprovatsatkhira.com

কালিগঞ্জ প্রেসক্লাবের পাতানো নির্বাচন অবশেষে আদালতের নির্দেশে স্থগিত

নিজস্ব প্রতিনিধি: কালিগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি শেখ সাইফুল বারী সফু ও সাধারণ সম্পাদক সুকুমার দাশ বাচ্চুর উদ্যোগে গঠনতন্ত্র লঙ্ঘন করে ৬ আগস্ট অনুষ্ঠিতব্য পাতানো নির্বাচন স্থগিতের নির্দেশ দিয়েছেন বিজ্ঞ আদালত। গত বৃহস্পতিবার (৪ আগস্ট) বিজ্ঞ সিনিয়র সহকারী জজ, কালিগঞ্জ (ভারপ্রাপ্ত) শুনানী শেষে এই আদেশ প্রদান করেন। এছাড়াও আগামী ৫ দিনের মধ্যে সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এবং প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও ২ সহকারী নির্বাচন কমিশনারকে স্বশরীরে হাজির হয়ে নির্বাচন কেন নিষেধাজ্ঞা দ্বারা বাতিল করা হবে না সে বিষয়ে কারণ দর্শাতে বলেছেন। এর আগে গত ২৬ জুলাই কালিগঞ্জ প্রেসক্লাবের সদস্য দৈনিক সাতঘরিয়া পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার হাবিবুল্যাহ বাহার বাদী হয়ে গঠনতন্ত্র বিরোধী পাতানো নির্বাচন বন্ধসহ বিভিন্ন অনিয়মের প্রতিকার চেয়ে বিজ্ঞ আদালতে অভিযোগ দাখিল করেন। পরে অভিযোগ আমলে নিয়ে এসব নির্দেশনা জারি করেন বিজ্ঞ বিচারক। আগামী ১৬ আগস্ট মামলার পরবর্তী শুনানীর দিন ধার্য্য করা হয়েছে।

মামলার বাদী উপজেলার মোমরেজপুর গ্রামের জিয়াদ আলী গাজীর ছেলে সাংবাদিক হাবিবুল্যাহ বাহার (২৬) জানান, কালিগঞ্জ উপজেলা সদরে ১৯৮৩ সালে প্রেসক্লাব প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রেসক্লাব গঠনের কয়েক বছর পর থেকে কিছু চিহ্নিত ব্যক্তি প্রকৃত সাংবাদিকদের বাদ দিয়ে নিজেদের পছন্দ মত ব্যক্তিদের সদস্যভুক্ত করে পদ টিকিয়ে রেখেছেন। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সদস্য হওয়ার বিধান থাকলেও কোন নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে বেআইনিভাবে সদস্যভুক্ত করে নানা উপায়ে ক্ষমতা ধরে রাখেন তারা। এরই ধারাবাহিকতায় বিগত কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ার বেশ কিছুদিন পর ২০২২ সালে নির্বাচন আয়োজনের উদ্যোগ নেয়া হয়। প্রেসক্লাবের সদস্যদের যাচাই বাছাইয়ের জন্য ৩ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়। কিন্তু যাচাই বাছাই কমিটির প্রতিবেদনকে অগ্রাহ্য করে প্রথমে ৫৯ জন এবং পরবর্তীতে ৫৬ জনের ভোটার তালিকা প্রস্তুত করা হয়। প্রচুর সংখ্যক অসাংবাদিককে অন্তর্ভূক্ত এবং গঠনতন্ত্র লঙ্ঘন করে পাতানো নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু করেন সাইফুল বারী সফু ও সুকুমার দাশ বাচ্চু গং। অসৎ উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে কুশুলিয়া ইউপি’র সাবেক চেয়ারম্যান কাজী মোফাখখারুল ইসলাম নীলুকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার মনোনীত করে মোট ৩ সদস্যবিশিষ্ট নির্বাচন কমিশন গঠন করে তাদের হাতে ৫৬ জনের একটি ভোটার তালিকা তুলে দেয়া হয় যার অধিকাংশ নামসর্বস্ব ও অস্তিত্ববিহীন পত্রিকার সাংবাদিক। নির্বাচন কমিশন গত ১৮ জুলাই তফসিল ঘোষণা করেন যাতে শোকাবহ আগস্টের ৬ তারিখে নির্বাচনের দিন ধার্য্য করা হয়।

এর আগে পাতানো নির্বাচন বন্ধ ও প্রকৃত সাংবাদিকদের সদস্যভুক্ত করে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে কমিটি গঠনের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন দপ্তরে সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে দু’দফা লিখিত অভিযোগ প্রদান করা হয়। কিন্তু তাতেও কোন প্রতিকার মেলেনি। উল্টো সফু-বাচ্চু গং নির্বাচন কমিশনারদের যোগসাজশে একটি পাতানো নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যেতে থাকে। এজন্য বিজ্ঞ আদালতে আনিয়ম দুর্নীতি ও গঠনতন্ত্র লঙ্ঘনের বিষয়ে প্রতিকার চাওয়া হয়েছে জানিয়ে হাবিবুল্যাহ বাহার বলেন, এরপরও সফু-বাচ্চু গং একটি প্যানেল দিয়ে আগামী ৬ তারিখে নির্বাচনের দিন ধার্য্য থাকা সত্তে¡ও গত ২৬ জুলাই নিজেদেরকে অনিয়মতান্ত্রিক ভাবে বিজয়ী হিসেবে ঘোষণা দিয়ে বিভিন্ন ভাবে অপপ্রচার চালাতে থাকে। পরবর্তীতে বিষয়টি বিজ্ঞ আদালতকে জানালে ৬ আগস্টের নির্বাচন স্থগিতের নির্দেশনা প্রদান করেন এবং বিবাদীদের প্রতি সমন জারি করেন।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার কুশুলিয়া ইউপি’র সাবেক চেয়ারম্যান কাজী মোফাখখারুল ইসলাম নীলু ও সহকারী নির্বাচন কমিশনার বড়শিমলা কারবালা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গাজী মিজানুর রহমান ৬ আগস্ট প্রেসক্লাবের নির্বাচন বন্ধে বিজ্ঞ আদালতের নিষেধাজ্ঞা জারির সমন পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/
Exit mobile version