আগস্ট ১৮, ২০২২
শিক্ষকের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ
পাটকেলঘাটা প্রতিনিধি : তালা শহীদ আলী আহম্মদ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ইংরেজি শিক্ষক মুমতাহিনা মুক্তির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে একটি দুষ্টচক্র। তার বিরুদ্ধে নাম্বার জালিয়াতির মিথ্যা অভিযোগ করায় স্কুলের শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। তারা অত্র স্কুলের ইংরেজি শিক্ষক মুমতাহিনা মুক্তির বিরুদ্ধে অসত্য ও বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রকাশে ক্ষোভ ও বিস্ময় প্রকাশ করেন। একই সাথে দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে। মো. আসাফার সরদার, মো. নূর উদ্দীন টিপু, নুরুল আমিন খান, অধ্যাপক জীবনানন্দ, মো. জিল্লুর রহমানসহ কয়েকজন অভিভাবক জানান, মুমতাহিনা মুক্তি একজন নিবেদিত প্রাণ শিক্ষক। তিনি দীর্ঘদিন সুনামের সাথে মাতৃসুলভ আচরণে ছাত্রীদের মাঝে পাঠদান করে আসছেন। শিক্ষার পাশাপাশি তিনি সহশিক্ষাক্রমিক কার্যক্রমে অনবদ্য ভূমিকা পালন করেন। তিনি একজন স্কাউট ইউনিট লিডার। তার নেতৃত্বে ২০২০ সালে ছয়জন শিক্ষার্থী প্রেসিডেন্ট’স স্কাউট অ্যাওয়ার্ড পদকে মনোনীত হয়েছেন। অপেক্ষাকৃত দুর্বল শিক্ষার্থীদের মনোযোগী করার জন্য তিনি নিয়মিত মোবাইল ফোনের মাধ্যমে যোগাযোগ করে থাকেন। কোন কারণবশত শিক্ষার্থী খারাপ করলে তিনি তাৎক্ষণিকভাবে এ বিষয়ে পরামর্শ প্রদান করেন এবং অভিভাবকের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করেন। অথচ একটি মহল তার বিরুদ্ধে নম্বর জালিয়াতির অভিযোগ এনেছে যেটি খুবই দুঃখজনক। তারা এমন বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রকাশে ক্ষোভ ও বিস্ময় প্রকাশ করেন এবং তীব্র নিন্দা জানান। এ সময় তারা দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে। তারা আরও বলেন, শিক্ষিকা মুমতাহিনা মুক্তির সুনাম নষ্ট করার উদ্দেশ্যে একই বিদ্যালয়ের অপর দুইজন শিক্ষক অভিভাবককে ভুল বুঝিয়ে মিথ্যা তথ্য দিয়ে সংবাদ পরিবেশন করে তাকে হেয় প্রতিপন্ন করেছেন। এটা কোনভাবেই তাদের সন্তানসহ তারা মেনে নিতে পারছেন না। স্কুলের কয়েকজন শিক্ষার্থী জানায়, একটি মহল ম্যাডামের বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য ছড়াচ্ছে। ম্যাডাম পাঠদানের পাশাপাশি আমাদেরকে নিজ সন্তানের মতো করে আগলে রাখেন। তিনি একজন সৎ আদর্শবান শিক্ষক। একটি কুচক্রী মহলের উসকানিতে আমাদের প্রাণ প্রিয় ম্যাডামকে অপমান অপদস্ত করার চেষ্টা করছে। এটি মানসিক নির্যাতনের শামিল। এ বিষয়ে তালা শহীদ আলী আহম্মদ সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক মুমতাহিনা মুক্তি বলেন, ৮ম শ্রেণির আইসিটি বিষয়ের খাতা মূল্যায়ন করেন অত্র বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. আসলাম আল মেহেদী। উক্ত শিক্ষক ৮ম শ্রেণির একজন শিক্ষার্থীকে আইসিটি খাতায় সাড়ে ১১ নম্বর দেন যা নম্বর ফর্দে ১২ তোলেন। উক্ত শিক্ষার্থী সাড়ে ১১ নম্বরে সন্তষ্ট না হলে তার অভিভাবক ঐ শিক্ষককে খাতাটি পূনঃমূল্যায়নের অনুরোধ করেন। ঐ শিক্ষক খাতাটি পূনঃমূল্যায়ন করতে অপারগতা প্রকাশ করলে শিক্ষার্থীর অভিভাবক আইসিটি বিষয়ের খাতাটি পূনঃমূল্যায়নের জন্য প্রতিষ্ঠান প্রধান বরাবর আবেদন করেন। উক্ত আবেদনের প্রেক্ষিতে প্রতিষ্ঠান প্রধান বিদ্যালয়ের অন্য একজন শিক্ষককে খাতাটি পূনঃমূল্যায়নের জন্য অফিস আদেশ করেন। যার স্মারক নং সবাবি/তালা/২০২২/৫১(ক),তারিখ- ০২/০৭/২০২২। পূনঃমূল্যায়নের পর উক্ত শিক্ষার্থী প্রাপ্ত ১২ নম্বরের জায়গায় ১৬ নম্বর পায়। উক্ত শিক্ষার্থীর নম্বর বাড়ার ক্ষেত্রে আমার কোন সংশ্লিষ্টতা নেই। আমি শুধুমাত্র শ্রেণি শিক্ষক হিসেবে প্রতিষ্ঠান প্রধান কর্তৃক প্রদত্ত পূনঃমূল্যায়নকৃত নম্বরটি দিয়ে ফলাফল শিট তৈরি করেছি। এখানে নম্বর কম কিংবা বেশি দেয়ার কোন সুযোগ আমার নেই। তিনি এ ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেন। তিনি আরও বলেন, ‘একমাত্র সুশিক্ষাই একটি জাতিকে উন্নত ও সমৃদ্ধ করতে পারে। এই মূল মন্ত্রে বিশ্বাস রেখে আগামী প্রজন্মকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ ও সুশিক্ষিত করে গড়ে তোলার প্রয়াসে আমি দীর্ঘদিন যাবৎ শিক্ষার্থীদেরকে আমার সন্তানের মতো দেখি আসছি। তাদেরকে সুশিক্ষায় গড়ে তোলার পাশাপাশি পরিপূর্ণ মানুষ করে গড়ে তুলতে আমি সর্বদা সচেষ্ট। স্কুলে আমি শিক্ষার্থীদেরকে নিজের সন্তানের মতো করে আগলে রাখি। তাদেরকে সৃজনশীল, স্বাধীন, সক্রিয় এবং দায়িত্বশীল সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি। যে কারণে কোন ছাত্রীকে নম্বর কম কিংবা বেশি দেয়ার প্রশ্নই ওঠে না। আমার ব্যক্তিগত সুনাম ক্ষুন্ন করার জন্য এই ধরনের মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে আমাকে হয়রানি করা হয়েছে। এ বিষয়ে অত্র বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অলোক কুমার তরফদার বলেন, একজন অভিভাবক আইসিটি বিষয়ের খাতাটি পূনঃমূল্যায়নের জন্য তার কাছে বরাবর আবেদন করেন। উক্ত আবেদনের প্রেক্ষিতে তিনি বিদ্যালয়ের অন্য একজন শিক্ষককে খাতাটি পূনঃমূল্যায়নের জন্য অফিস আদেশ করেন। সেই আদেশ অনুযায়ী খাতাটি পূনঃমূল্যায়ন করা হয়েছে। এখানে নম্বর কম কিংবা বেশি দেয়ার কোন সুযোগ নেই। এছাড়া এ সংক্রান্ত সকল কাগজপত্র সভাপতির কাছে পাঠানো হয়েছে বলে জানান তিনি। অত্র বিদ্যালয়ের গভর্নিং বডির সভাপতি ও তালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রশান্ত কুমার বিশ^াস জানান, একজন অভিভাবক পরীক্ষার খাতা পূনঃমূল্যায়নের জন্য তার কাছে আবেদন করেন। সেটা স্কুলের প্রধান শিক্ষকের কাছে পাঠানো হয়। পরবর্তীতে প্রধান শিক্ষক নিয়ম অনুযায়ী আরেকজন শিক্ষককে দিয়ে খাতাটি পূনঃমূল্যায়ন করেন। 8,181,735 total views, 4,096 views today |
|
|
|