আগস্ট ২৭, ২০২২
দেবহাটায় একাধিক পরিবারের সাথে প্রতারণার ও হয়রানির অভিযোগ
নিজস্ব প্রতিনিধি : দেবহাটায় এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে একাধিক হিন্দু পরিবারের সদস্যদের সাথে প্রতারণা ও হয়রানি অভিযোগ উঠেছে। এনিয়ে স্থানীয় পর্যায়ে সালিশ বিচার, থানা পুলিশ করে হয়রানি এবং মামলায় ভিটে ছাড়া করার উপক্রম করে চলেছেন বলেও অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে। এসব পরিবারের সদস্যদের নামে মামলা ও অভিযোগ করে সামাজিক ভাবে হেও করার অভিযোগ উপজেলার মাঘরী গ্রামের মৃত শচিন্দ্র নাথ ঘোষের ছেলে অশোক ঘোষ (৫৭) এর বিরুদ্ধে। আর এসব হয়রানি থেকে মুক্তিপেতে ভ‚ক্তভোগীদের পক্ষে মাঘরীচক গ্রামের মৃত সুনিল ঘোষের ছেলে প্রশান্ত কুমার ঘোষ বাদী হয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, আইজিপিসহ একাধিক দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগে জানা যায়, অশোক ঘোষ তার স্ত্রী অর্চনা ঘোষ বাংলাদেশ ও ভারত উভয় দেশের নাগরিক। দু দেশের বাড়ি নির্মাণ করে উভয় দেশের ভোটাধিকার সহ নানা সুবিধা ভোগ করে আসছেন পরিবারটি। সুকৌশলে তথ্য গোপন করে দু দেশের নাগরিক হয়ে দেশের আভ্যন্তরিন শান্তি বিনষ্ট ও অর্থ পাচারের অভিযোগ করা হয়েছে লিখিত অভিযোগে। তাদের দু দেশের যেকোনো একটির নাগরিকত্ব বাতিলেও দাবি করা হয়েছে ঐ অভিযোগে। ভুক্তভোগী প্রশান্ত ঘোষ জানান, জমিজমা নিয়ে অশোক ঘোষ আমাকে এবং আমার পরিবারের সদস্য নামে মিথ্যা মামলা করে হয়রানি করে আসছে। এছাড়া সে আমাদের বসতভিটা জাল কাগজ করে তার দখলে নেওয়ার চেষ্টা করে। আমার কাকাদের সম্পত্তি জোরপূর্বক নিজের নামে লিখে নিয়ে একে একে বিক্রয় করে হুন্ডির মাধ্যমে ভারতে টাকা পাচার করছে আশোক। সে বাংলাদেশ থেকে ৮ একর ৬৮ শতক জমির মধ্যে প্রায় ৪ একর ৭০শতক জমি বিক্রি করে সমুদয় টাকা ভারতে পাঠিয়েছে। তাছাড়া আমার প্রাপ্য জমি বুঝিয়ে না দেওয়ায় বিজ্ঞ আদালতের সহযোগিতা চেয়ে একটি মামলা দায়ের করেছি। বর্তমানে ৭৫/১৭ নং মামলাটি আদালতে চলমান রয়েছে। এই অশোক সখিপুর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের ১৮৩০ নং দলিলে ১০/০৯/১৯৮৯ তারিখে দলিল জাল করার অপরাধে দুর্নীতি দমন কমিশনের মামলায় ১৯৯৪ সালে ৬ মাস কারাবাস ভোগ করে। তৎকালীন সিআইডির পুলিশ পরিদর্শক সেতারা বেগম আঙ্গুলাঙ্ক বিষয়কের রিপোর্ট অনুযায়ী উক্ত দলিলে প্রদান করা টিপসই দাতা ও গ্রহীতা অশোক নিজেই ছিলেন। সেই পন্থায় তিনি আমাদের শরিকদের জমি নিজের নামে নিয়ে নিয়েছে। এমনকি আমাকে এবং গ্রামের কয়েকজনকে ভিটা ছাড়া করার উপক্রম করেছে অশোক ঘোষ। বর্তমানে ভারত-বাংলাদেশি দু দেশি নাগরিক অশোক তার ছেলে প্রদীপ কুমার ও চিরঞ্জিত কুমারকে ভারত থেকে বাংলাদেশে এনে আমাকে সহ বিভিন্ন মানুষকে হুমকি দিচ্ছে। আদালতে চলমান ৬ বছর মামলাধীন পারিবারিক একটি পুকুরে দুই ছেলেকে দিয়ে মাছ ধরার চেষ্টা চালাচ্ছে। প্রতারণার শিকার অপর এক ভুক্তভোগী মাঘরীচক গ্রামের মনোরঞ্জন ঘোষ জানান, আমাদের নিজ নামিয় মাঘরীচক মৌজায় ১০৪ দাগে ৪২ শতক জমি অশোক নিজের নামে হাল রেকর্ড করে নেয়। এমনকি আমাদের জমি মিথ্যা দখল দেখিয়ে উল্টো আমাদের নামে আদালতে মামলা দায়ের করেছে। বর্তমান মামলা উচ্চ আদালতে চলমান রয়েছে। আমরা তার অত্যাচারে অতিষ্ঠ। প্রতারণার শিকার সম্ভুনাথ ঘোষ জানান, আমার নিজ নামে কেনা ১০ শতক জমি থেকে ২ শতক জমি আশোক চালাকি করে তার নামে করে নেয়। সেসময় অশোক সেটেলমেন্ট অফিসের মুহুরি হিসাবে কাজ করায় বিভিন্ন লোকের জমি নিজের নামে করে নেন। আমার জমি ফিরিয়ে দেবে বলে একাধিক স্বাক্ষীদের সামনে অতিরিক্ত ২০ হাজার টাকা গ্রহণ করে। কিন্তু টাকা জমি ফেরত না দেওয়ায় তৎকালীন সখিপুর ইউপি চেয়ারম্যান মঈনউদ্দীন ময়না সালিশের মাধ্যমে ১০ হাজার টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত দেন। পরবর্তীতে জমি টাকা কোনটাই ফেরত না দিয়ে উল্টো বিভিন্ন ভাবে হয়রানি করে। পরবর্তীতে অন্য লোকের কাছে ওই জমি বিক্রি করে দেয়। আমি এই কুচক্রী অশোকের বিচার চাই। অভিযুক্ত অশোক ঘোষের মোবাইল ফোনে একাধিক বার কল করেও কোন উত্তর পাওয়া যায়নি। দেবহাটা থানার অফিসার ইনচার্জ শেখ ওবায়দুল্লাহ জানান, বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ঝামেলা চলে আসছে। বিভিন্ন সময় বসাবসি করা হয়েছে বলে জানি। 8,230,838 total views, 10,830 views today |
|
|
|