আগস্ট ১, ২০২২
কলারোয়ায় শেখ হাসিনার গাড়ি বহরে হামলা মামলা অস্ত্র ও বিষ্ফোরক দ্রব্য আইনে সাক্ষ্য চলাকালে বাকবিতন্ডা
নিজস্ব প্রতিবেদক: ২০০২ সালের ৩০ আগস্ট সাতক্ষীরায় কলারোয়ায় বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়ি বহরে হামলার ঘটনায় অস্ত্র ও বিষ্ফোরক দ্রব্য আইনের দু’টি অভিযোগপত্রে সাক্ষ্য দিলেন ঢাকা মহানগরীর হযরত শাহাজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ফাতেমা জাহান সাথী। তিনি হামলার দিন শেখ হাসিনার সফরসঙ্গী ছিলেন। পরবর্তী সাক্ষীর জন্য আগামি ১৪ আগস্ট দিন ধার্য করা হয়েছে। সোমবার সকাল ১০টায় সাতক্ষীরা কারাগার থেকে বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ ৪০ জন আসামিকে আদালতের কাঠগোড়ায় হাজির করানো হয়। এ মামলায় নয় জন আসামী পলাতক রয়েছেন। সকাল ১০টা ২৩ মিনিটে সাতক্ষীরার স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল -৩ এর বিচারক বিশ্বনাথ মÐলের আদালতে এ সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। ১০টা ৩৫ মিনিটে আইনজীবীদের নির্ধারিত বেঞ্চে বসে থাকা আসামী জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক সাংসদ আদালতের অনুমতি ছাড়াই রাষ্ট্রপক্ষে অতিরিক্ত এটর্ণি জেনারেল এসএম মুনিরকে উদ্দেশ্য করে তার এখানে সাক্ষ্য গ্রহণের কাজে অংশ নেওয়া বৈধতা আছে কিনা তা নিয়ে চিৎকার শুরু করেন। এর ৫ মিনিট পর রাষ্ট্রপক্ষের পিপি অ্যাড. আব্দুল লতিফ সাক্ষ্য গ্রহণের একপর্যায়ে ঘটনার সঙ্গে জড়িত কোন আসামীর নাম বলতে পারেন কিনা জানতে চাইলে দূরে অবস্থানকারি আসামীপক্ষের আইনজীবী অ্যাড. কামরুজ্জামান চিৎকার করে বলেন যে সাক্ষীকে আসামীর নাম শিখয়ে দেওয়া হচ্ছে। এর কিছুক্ষণ পর তিনি বলেন যে, সাক্ষী পিপি সাহেবের কাছে থাকা নথি দেখে সাক্ষী আসামিদের নাম বলেছেন। বিষয়টি বাস্তবসম্মত প্রশ্ন না হওয়ায় রাষ্ট্রপক্ষের পিপি অ্যাড. আব্দুল লতিফ ও অতিরিক্ত এটর্ণি জেনারেল প্রতিবাদ করলে দু’পক্ষের আইনজীবীদের মধ্যে বচসা শুরু হয়। এ বচসার সময় আসামী হাবিবুল ইসলাম হাবিব উচ্চ স্বরে কথা বলতে থাকেন। এ সময় আলফা নামের এক আসামী অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাকে হাসপাতালে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। হট্টগোলের একপর্যায়ে ১০টা ৫০ মিনিটে কোর্ট নেমে যায়। ১১টা ০২ মিনিটে আদালতের কার্যক্রম আবার শুরু হয়।
আসামীপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন অ্যাড. আব্দুল মজিদ(২), অ্যাড. মিজানুর রহমান পিন্টু, অ্যাড. শাহানারা পারভিন বকুল,অ্যাড. সৈয়দ ইফতেখার আলী, অ্যাড. কামরুজ্জামান ভুট্টো প্রমুখ। সাংবাদিকদের উদ্দ্যেশ্যে এসএম ফজলুল হক বলেন, বিরোধী দলীয় নেতা থাকাকালিন ২০০২ সালের ৩০ আগস্ট কলারোয়ায় শেখ হাসিনার গাড়ি বহরে বিএনপি নেতা হাবিবের নেতৃত্বে যে বর্বরোরচিত হামলা চালানো হয়েছিল তা নজির বিহীন। সেমাবার আসামী হাবিবসহ তার আইনজীবীরা রা®প্রপক্ষকে মামলা পরিচালনা করতে যেভাবে বারবার বাদাগ্রস্ত করেছেন তা ন্যয় বিচার পরিপন্থি। অনতি বিলম্বে মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে ন্যয় বিচার প্রতিষ্ঠিত হবে বলে তিনি আশাবাদি। তিনি আদালত চত্বরে নিরাপত্তা জোরদার করার ব্যাপারে পুলিশের ভুয়সী প্রশাংসা করেন। প্রসঙ্গত, ২০০২ সালের ৩০ আগস্ট সকাল ১০টায় তৎকালিন বিরোধী দলীয় নেত্রী বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কলারোয়ার হিজলদী গ্রামের এক মুক্তিযোদ্ধার ধর্ষিতা স্ত্রীকে দেখতে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে আসেন। সেখান থেকে যশোরে ফিরে যাওয়ার পথে সকাল ১১টা ৫০ মিনিটের দিকে বিএনপি’র নেতা-কর্মীরা কলারোয়ায় দলীয় অফিসের সামনে একটি যাত্রীবাহি বাস (সাতক্ষীরা-জ-০৪-০০২৯) রাস্তার উপরে আড় করে দিয়ে তার গাড়ি বহরে হামলা চালায়। হামলায় আওয়ামী লীগের ১ ডজন নেতা-কর্মী ও সাংবাদিক আহত হন। এঘটনায় কলারোয়ার মুক্তিযোদ্ধা কমাÐার মোসলেমউদ্দিনের করা হামলা মামলার পেনাল কোর্ডের মামলাটি দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে ২০২১ সালের ৪ ফেব্রæয়ারি তালা-কলারোয়ার বিএনপি দলীয় সাবেক সংসদ সদস্য হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ ৫০ জন নেতা-কর্মীকে চার থেকে ১০ বছর মেয়াদে সাজা প্রদান করেন সাতক্ষীরার মুখ্য বিচারিক হাকিম হুমায়ুন কবির। মামলার অপর দুটি অংশে গত ১৪ জুন অস্ত্র ও বিস্ফোরক আইনের অপর দুটি মামলায় অভিযোগ গঠন করা হয়। এ দুটি মামলায় সোমবার পর্যন্ত ৬ জন সাক্ষী দিলেন। 8,284,351 total views, 5,992 views today |
|
|
|