Site icon suprovatsatkhira.com

রপ্তানিযোগ্য পুশ করা চিংড়ি আটকে দিল জনতা: নদীতে ফেলে বিনষ্ট!

মীর খায়রুল আলম : প্রশাসনকে ফাঁকি দিয়ে ভিন্ন কৌশলে দীর্ঘদিন ধরে ভেজাল মেশানো মাছ বিভিন্ন স্থানে পাঠিয়ে আসছিলেন গাজীরহাট বাজারের পরিবহণ কাউন্টার নামের একটি প্রতিষ্ঠান। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বোকা বানিয়ে মানুষের সাথে পরিবহণে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে অপ-দ্রব্য মেশানো মাছ পাঠিয়ে সাতক্ষীরার চিংড়ির সুনাম নষ্ট করে আসছিল ওই চক্রটি। অবশেষে শনিবার রাতে পুশকরা মাছ পাঠানোর প্রাক্কালে জনতার প্রতিরোধে আটক হয় ৭টি বক্সে ৯০ কেজি ৪ গ্রামে রপ্তানি যোগ্য চিংড়ি মাছ। পরে আটককৃত চিংড়ি ইছামতি নদীতে ফেলে বিনষ্ট করে প্রশাসন। ঘটনা সূত্রে জানা যায়, বিগত কয়েক মাসের ধরে উপজেলা আইন-শৃঙ্খলা কমিটির মিটিংয়ে পুশ মাছ রপ্তানি বন্ধে বিভিন্ন উদ্যোগ নেন প্রশাসন। তবুও কোন ভাবে ঠেকানো যাচ্ছিল না পুশ।

সে কারণে মৎস্য সপ্তাহ উপলক্ষে প্রতিটি ইউনিয়ন পর্যায়ে সম্মিলিত উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। সেই সূত্র ধরে নওয়াপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলমগীর হোসন সাহেব আলী গাজীরাহাট বাজারের সকল মৎস্য ব্যবসায়ীকে পুশ বন্ধের নির্দেশ দেন এবং পুশ মাছ ধরে দিলে পুরস্কারের ঘোষণা দেন। একই সাথে প্রশাসন লাগাতর অভিযান অব্যাহত রাখেন। এতে কিছুটা পুশ নিয়ন্ত্রণে আনা গেলেও একটি চক্র থেকে যায় গোপনে। এই চক্রের মাধ্যমে বিভিন্ন এলাকা থেকে ছোট ছোট চালানের পরিবহণের মাধ্যমে পাঠানো হচ্ছিল। শনিবার এমনই একটি চক্র সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলা থেকে ইঞ্জিনভ্যান যোগে গাজীরহাট বাজারের পরিবহণ কাউন্টারে ৭টি বক্সে করে চিংড়ি মাছ পাঠান। এসময় স্থানীয় জনতা উক্ত ভ্যানের কক্সসিটের বক্সে কি আছে জানাতে চাইলে চালক তাল-বাহানা করতে থাকে। পরে জনতার তোপের মুখে ওই বক্স খোলা হলে পুশ করা মাছ দেখতে পেয়ে স্থানীয় প্রশাসনকে খবর দেয়। উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবিএম খালিদ হোসেন সিদ্দিকী, নওয়াপড়া ইউপি চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন সাহেব আলী, মেরিন ফিসারীজ অফিসার সাজ্জাদ হোসেন ঘটনাস্থলে পৌঁছে উক্ত মাছ পরীক্ষা করে অপ-দ্রব্যের প্রমাণ পায়।

এসময় মাছের কোন মালিক না পাওয়ায় ভ্যান ভর্তি মাছ ইছামতি নদীতে ফেলে বিনষ্টের নির্দেশ দেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এবিএম খালিদ হোসেন সিদ্দিকী। এদিকে, পরিবহণ কাউন্টারে পাঠানো মাছের সাথে ব্যবহৃত নাম্বারে যোগাযোগ করা হলে আশাশুনি এলাকা থেকে একজন নারী ফোন রিসিভ করেন। তিনি প্রায় ওই কাউন্টারের মাধ্যমে মাছ পাঠান বলেও নিশ্চিত করেন। অপরদিকে কাউন্টারের দায়িত্বে থাকা শওকাত আলীকে পাওয়া যায়নি। তবে তার এক কর্মচারী জানান, মাছ পাঠানো ওই নারীকে তারা চেনেন না। তিনি বহু দিন ধরে দেশের বিভিন্ন জায়গায় মাছ পাঠান। আটক হওয়া মাছের চালানটি ফরিদপুরের মধুখালির হিমেল নামের এক ব্যক্তির নিকট পাঠানো হচ্ছিল বলে জানান। এদিকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবিএম খালিদ হোসেন সিদ্দিকী বলেন, গাজীরহাট বাজারের পরিবহণ কাউন্টারের অফিস থেকে ৭টি বক্সে ৯০ কেজি ৪ শত গ্রাম পুশকৃত চিংড়ি জব্দ করা হয়েছে। মাছ গুলো ইছামতি নদীতে ফেলে নষ্ট করা হয়। পাশাপাশি পরিবহণে মাছ পাঠানো বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রপ্তানি শিল্পে অপ-দ্রব্য মেশান তাদের বিরুদ্ধে এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।

https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/
Exit mobile version