Site icon suprovatsatkhira.com

কলারোয়ায় শেখ হাসিনার গাড়ি বহরে হামলা মামলা অস্ত্র ও বিষ্ফোরক দ্রব্য আইনের দুইটি মামলায় সাক্ষী দিলেন কলারোয়া পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম

নিজস্ব প্রতিনিধি: ২০০২ সালের ৩০ আগষ্ট সাতক্ষীরায় কলারোয়ায় বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়ি বহরে হামলার ঘটনায় অস্ত্র ও বিষ্ফোরক দ্রব্য আইনের দু’টি মামলার সাক্ষী দিলেন কলারোয়া পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম। বৃহষ্পতিবার সাতক্ষীরার স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল -৩ এর বিচারক বিশ্বনাথ মÐল কাঠগোড়ায় উপস্থিত ৩৯ জন আসামীর উপস্থিতিতে এ সাক্ষ্য গ্রহণ করেন। তবে কারাগারে থাকা আসামী জাভিদ হোসেন লাকী খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে থাকার কারণে তার অনুপস্থিতিতে আসামী পক্ষের আইনজীবীরা জেরা না করার আবেদন জানালে বিচারক আগামি ১৯ জুলাই মঙ্গলবার পরবর্তী সাক্ষীর জন্য দিন ধার্য করেন।

সাতক্ষীরা আদালত সূত্রে জানা যায়, অস্ত্র ও বিষ্ফোরক দ্রব্য আইনের দু’টি মামলায় কারাগারে থাকা ৪০ জন আসামীকে বৃহষ্পতিবার সকাল ১০টায় জেলা কারাগার থেকে স্পেশাল টাইব্যুনাল-৩ এর কাঠগোড়ায় হাজির করা হয়। এ মামলায় নয় জন আসামী পলাতক রয়েছে। অসুস্থতার কারণে কারাগারে থাকা আসামী জাহিদ হাসান লাকী খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। সাড়ে ১০টায় মামলার কার্যক্রম শুরু হয়। এ সময় রাষ্ট্রপক্ষ থেকে অস্ত্র ও বিষ্ফোরক দ্রব্য আইনের মামলার কলারোয়া পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম, জব্দ তালিকার সাক্ষী আনছার আলী ও মুক্তিযোদ্ধা শওকত হোসেনকে সাক্ষী হিসেবে হাজির করানো হয়। তবে শহীদুল ইসলামের জবানবন্দি গ্রহণের পর কারাগারের মাধ্যমে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আসামী জাভিদ হাসান লাকীর অনুপস্থতিতে আসামীপক্ষের অঅইনজীবীরা জেরা করতে অসম্মতি জানালে বিচারক আগামি ১৯ জুলাই সাক্ষীর জন্য দিন দার্য় করেন। তবে আদালত চলাকালিন আসামী গোলাম মোস্তফা সাক্ষীর কথা শোনা যাচ্ছে না বলে আসামীপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন অ্যাড. আব্দুল মজিদ(২), অ্যাড. মিজানুর রহমান পিন্টু, অ্যাড. শাহানারা পারভিন বকুল ।

রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন সাতক্ষীরা জজ কোর্টের পিপি অ্যাড. আব্দুল লতিফ, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট বার এ্যসোসিয়েশনের সহসভাপতি অ্যাড. মোহম্মদ হোসেন, অতিরিক্ত পিপি অ্যাড. ফাহিমুল হক কিসলু, অ্যাড, নিজামউদ্দিন প্রমুখ।
জজ কোর্টের পিপি অ্যাড. আব্দুল লতিফ বলেন, কারাগার থেকে আসামী জাভিদ হোসেন লাকীকে আদালতে না আনার ঘটনায় উর্দ্ধতন কারাকর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত,২০০২ সালের ৩০ আগষ্ট সকাল ১০টায় তৎকালিন বিরোধী দলীয় নেত্রী বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা উপজেলার চন্দনপুর ইউনিয়নের হিজলদি গ্রামের এক মুক্তিযোদ্ধার ধর্ষিতা স্ত্রীকে দেখতে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে আসেন। সেখান থেকে যশোরে ফিরে যাওয়ার পথে সকাল ১১টা ৪০ মিনিটের দিকে কলারোয়া উপজেলা বিএনপি অফিসের সামনে রাস্তার উপর জেলা বিএনপি’র সভাপতি ও তৎকালিন সাংসদ হাবিবুল ইসলামের হাবিব ও বিএনপি নেতা রঞ্জুর নির্দেশে বিএনপি ও যুবদলের নেতা কর্মীরা দলীয় অফিসের সামনে একটি যাত্রীবাহি বাস(সাতক্ষীরা-জ-০৪-০০২৯) রাস্তার উপরে আড় করে দিয়ে তার গাড়ি বহরে হামলা চালায়। হামলায় তৎকালিন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রকৌশলী শেখ মুজিবুর রহমান, আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল মতিন, মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রী সাথী ও সাংবাদিকসহ কমপক্ষে এক ডজন দলীয় নেতা কর্মী আহত হয়।

এ ঘটনায় থানা মামলা না নেওয়ায় ওই বছরের ২ সেপ্টেম্বর কলারোয়া মুক্তিযোদ্ধা কমাÐার মোসলেমউদ্দিন বাদি হয়ে যুবদল নেতা আশরাফ হোসেন, আব্দুল কাদের বাচ্চুসহ ২৭ জনের নাম উলেখ করে অজ্ঞাতনামা ৭০/৭৫ জনকে আসামী করে আদালতে দায়ের করেন। মামলায় ১৮জনকে সাক্ষী করা হয়।
বিভিন্ন আইনি লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে ২০১৩ সালের ১৮ জুলাই মহামান্য হাইকোর্ট নি¤œ আদালতে মামলার কার্যক্রম নতুন করে শুরু করার করার জন্য সংশিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন।

মুখ্য বিচারিক হাকিম নিতাই চন্দ্র সাহা ২০১৪ সালের ১৫ অক্টোবর অভিযোগটি এজাহার হিসেবে গণ্য করার জন্য কলারোয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন। ২০১৫ সালের ১৭ মে মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা কলারোয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) শফিকুর রহমান ৫০ জনের নাম উলেখ করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। মামলাটি তিনটি ভাগে ভাগ হয়ে এসটিসি ২০৭/১৫, এসটিসি ২০৮/১৫ দু’টি অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ-২য় আদালতে বিচারাধীন। অপর টিআর ১৫১/১৫ মামলাটি ২০২১ সালের ৪ ফেব্রæয়ারি অভিযোগপত্রে উলেখিত ৫০ জনের বিরুদ্ধে চার থেকে ১০ বছর মেয়াদে সাজা প্রদান করেন। এরমধ্যে আসামী মাহাফুজুর রহমান সাবু কারাগারে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। গত ২৪ এপ্রিল বিএনপি নেতা হাবিবুল ইসলাম হাবিব মহামান্য হাইকোর্ট থেকে জামিন পেলেও কারাগার থেকে বের হওয়ার আগেই রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের ভিত্তিতে গত পহেলা জুন সুপ্রিম কোটের চেম্বর জজ জামিনাদেশ স্থগিত করে দেন।

২০১৭ সালের ৯ আগষ্ট ও ২৩ আগষ্ট তিনটি মামলার কার্যক্রমের উপর স্থগিতাদেশ দেন মহমান্য হাইকোর্ট। ২০২০ সালের ১৭ ডিসেম্বর উচ্চ আদালত আসামীপক্ষের স্থগিতাদেশ ও আপিল খারিজ করে দেন। মে মাসের শেষ সপ্তাহে ওই নথি আদালতে পৌঁছানোর পরপরই ১৬ জুন সাক্ষীর জন্য দিন ধার্য করা হয়। গত ২৯ জুন আদালতের কার্যক্রম শেষে রাক্ষকে হুমকি দেওয়ার ঘটনায় আসামী বিএনপি নেতা হাবিবুল ইসলাম হাবিবের বিরুদ্ধে জজ কোর্টের পিপি অ্যাড. আব্দুৃল লতিফ বাদি হয়ে ২০৩৯ নং সাধারণ ডায়েরী করেন।

https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/
Exit mobile version