মাজহারুল ইসলাম : কলারোয়া উপজেলার দেয়াড়া ইউনিয়নের পাটলি গ্রামের ঘোষপাড়ায় চিত্রর ঘেরের পাশে কাপালির বাঁশ বাগানে ফের চলছে জমজমাট জুয়ার আসর। দিন-রাত চলমান এ জুয়ার আসরে দূর-দূরন্ত থেকে লোক সমাগম হচ্ছে। সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পর কলারোয়া থানা পুলিশ ওই জুয়ার আসরে অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানে ঘটনাস্থল থেকে একজনকে আটক করতে সক্ষম হয় পুলিশ। এসময় অন্য জুয়াড়িরা পুলিশের উপস্থিতি বুঝতে পেরে পালিয়ে যায়। কিছুদিন বন্ধ থাকার পর আবারো একই স্থানে জমজমাট জুয়ার আসর চলছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পার্শবর্তী যশোর ও সাতক্ষীরা জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে জুয়াড়ীরা এসে প্রতিদিন খেলায় অংশগ্রহণ করছে। এ ঘটনায় স্থানীয় এলাকাবাসীসহ সচেতন মহল ক্ষোভ প্রকাশ করে অতিবিলম্বে জোয়ার আসর ভেঙে গুরিয়ে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, দেয়াড়া ইউনিয়নের মাটসিয়া গ্রামের মোঃ রফিকুল ইসলাম নেদা, মৃত টেটি গাজীর ছেলে মোঃ আনিসুর রহমান ও মৃত আকছেদ মোল্লার ছেলে শফি মোল্লার নেতৃত্বে এ রমরমা জুয়ার আসর চলছে। স্থানীয়রা আরো জানায়, জুয়ার পাশাপাশি মাদক সেবনও করে থাকে খেলতে আসা জুয়াড়িরা। সরেজমিনে এলাকা পরিদর্শন করে দেখা গেছে, জুয়া খেলতে আসা বেশিরভাগ জুয়াড়িই মধ্যবিত্ত থেকে উচ্চবিত্ত শ্রেণির মানুষ। দূর দূরস্থ থেকে বিত্তশালী বহিরাগতদের নিয়ে দিন-রাত লক্ষ লক্ষ টাকার বাঁজি ধরে তাসের আড্ডা বসিয়ে সামাজিক অভক্ষয় ঘটালেও জুয়ার বোর্ড পরিচালনাকারীরা প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায় না। নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক খেলতে আসা এক জুয়াড়ি জানান, স্থানীয় কয়েকজন প্রভাবশালী নেতা ও থানা পুলিশকে ম্যানেজ করে এখানে খেলা চলে। স্থানীয় এলাকাবাসী ও সচেতন মহলের ব্যক্তিরা জানান, প্রকাশ্যেই দিন-রাত জুয়ার আসর চললেও প্রশাসনের কোন তৎপরতা দেখছিনা। ইদানিং দেখা যাচ্ছে এই তাসের বোর্ডের আসর গুলোতে নামি-দামি মোটরসাইকল ও প্রাইভেটকার নিয়ে যুবকদের আনাগোনা আগের চেয়ে অনেক বেশি। গভীর রাত পর্যন্ত এ জুয়ার আড্ডায় দেখা যাচ্ছে।
এসবের কারণে এলাকার চুরি ছিনতাই মাদক সেবনসহ বিভিন্ন অপরাধ সংক্রান্ত কার্যক্রম বেড়েই চলছে। এমনভাবে চলতে থাকলে যুবসমাজ ধ্বংসের পথে চলে যাবে। এ জুয়ার কারণে পারিবারিক ভাবে বহু পরিবারের মাঝে অশান্তি বিরাজ করছে। অনেকেই আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে পথে বসছে। তারা আরো জানান, জুয়ার বোর্ড পরিচালনা করে রফিকুল ইসলাম নেদা অঢেল সম্পতির মালিক বনে গেছেন। জুয়ার বোর্ড পরিচালনার বিষয়ে রফিকুল ইসলাম নেদা জানান, ‘আমি খেলা চালাচ্ছি প্রশাসন ম্যানেজ করে। এখন আমি থানায় আছি পরে কথা বলছি’। এ বিষয়ে কলারোয়া থানার অফিসার ইনচার্জ নাসির উদ্দিন মৃধা জানান, পত্রপত্রিকায় সংকাদ দেখে ঈদের আগে ক্যাপালি বাঁশবাগানে জুয়ার বোর্ড অভিযান চালিয়ে একজনকে আটক করা হয়েছিল। সেখান থেকেই বন্ধ ছিল। তবে আবারো জুয়া খেলা চলছে বিষয়টি আমার জানা নেই। যেহেতু জানলাম আমি এখনি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করছি’। কলারোয়া থানা ওসি আরো জানান, ‘মাদক ও জুয়ার বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স থাকবে কলারোয়া থানায়’।