‘সুপ্রভাত সাতক্ষীরা’ শুধু একটা পত্রিকার নাম নয় এটি সাতক্ষীরার গণমানুষের কন্ঠস্বরও। এই জনপ্রিয় পত্রিকাটি আজ চারটি বছর পূর্ণ করে পঞ্চম বছরে পা রেখেছে। পত্রিকাটি শুরু থেকে মানুষের অধিকারের মুখপাত্র হিসেবে কাজ করে আসছে। সুপ্রভাত সাতক্ষীরার এই অর্জনকে পাঠক হিসেবে আমি সাধুবাদ এবং অভিনন্দন জানাই।
কাকডাকা ভোরে এক কাপ চায়ের সাথে যদি কিছু দরকার হয় তা হল একটা সত্য সমৃদ্ধ, তথ্যবহুল বস্তুনিষ্ঠ পত্রিকা। সুপ্রভাত সাতক্ষীরা সাতক্ষীরা জেলার এমনি একটি দৈনিক পত্রিকা যাতে জাতীয় থেকে আন্তর্জাতিক, স্থানীয় উন্নয়ন, দুর্নীতি, আন্তর্জাতিক রাজনীতি, জলবায়ু, সহিংসতা, নারী অধিকার, দেশপ্রেম, অনুসন্ধান এবং মানুষের দাবি মানুষের প্রতিনিধি হিসেবে প্রতিদিন তুলে ধরে জনগণের সংসদে। যা সকালের এককাপ চা কে করে তোলে আরো প্রাণবন্ত আরো বিশ্লেষণী। সুপ্রভাত সাতক্ষীরার স্বপ্নদ্রষ্টা, প্রতিষ্ঠাতা অনিছুর রহমান আজ আমাদের মাঝে নেই। তিনি রেখে গেছেন মানুষের অধিকারের এক দৃষ্টান্তমূলক প্লাটফর্ম যা সাতক্ষীরার লক্ষ মানুষের কষ্ঠস্বর হিসেবে কাজ করছে। আজকের এই আনন্দঘন মুহূর্তে তাই তার চলে যাওয়া এক বিরাট শূন্যতা তৈরী করে গেছে সকলের মাঝে।
ইতিহাস খুঁজলে দেখা যায় কিছু জনপদের উন্নয়নয়ের জন্য যুগে যুগে কিছু মানুষ জন্মেছে। তাদের হাতের আঁচড়ে তৈরী করেছেন স্বপ্নলোক। আনিছুর রহমান কে তাই সেই দলের একজন সহজেই বলা যায়। তিনি একদিকে ছিলেন একজন কলমযোদ্ধা অন্য দিকে সংগঠক, প্রতিষ্ঠাতা, উদ্যেক্তা ও স্বপ্নদ্রষ্টা।
সাতক্ষীরা জেলায় তিনি প্রতিষ্ঠা করেছেন সুপ্রভাত সাতক্ষীরা, সিবি হাসপাতাল, চায়না বাংলা, বর্ষা রিসোর্ট সহ অনেক প্রতিষ্ঠান। এই সকল প্রতিষ্ঠানের নাম যত দিন মানুষের মুখে উচ্চারিত হবে ততদিন আনিছুর রহমান বেঁচে থাকবেন মানুষের হৃদয়ে।
তখন সাতক্ষীরা জেলায় রুচিসম্মত ভিন্নমাত্রার কোন স্থান ছিল না যেখানে শহরের মানুষ তথা বাইরের মানুষ একটু ভোজনের সাথে সময় কাটাবে। তিনি চায়না বাংলা প্রতিষ্ঠা করলেন যা প্রথম অভিযাত আধুনিকতার ছোঁয়া এনে দিল একটি শহরে।
সাতক্ষীরা জেলা টুরিস্ট শিল্পে একটা সম্ভবনাময় জেলা যার মূল আকর্ষণ হল পৃথিবীর সর্ববৃহত্তর ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবন। তিনি শ্যামনগরের মুন্সিগঞ্জে গড়ে তুললেন বর্ষা রিসোর্ট যেটি এখনো সাতক্ষীরা জেলার মধ্যে সবথেকে নান্দনিক, অভিযাত একটি রিসোর্ট। প্রতিবছর শতশত দেশি-বিদেশী পর্যটক সময় কাটাতে আসে এখানে। ফলে বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার খাতায় যোগ হয় নতুন অঙ্ক।
শুধু তাই নয় আতœমানবতায় তিনি প্রতিষ্ঠা করে গেছেন সিবি হাসপাতাল। এটি সাতক্ষীরা জেলার একটি অত্যাধুনিক হাসপাতাল। এই হাসপাতালে সকল রোগের চিকিৎসা করা হয়। অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি, অভিজ্ঞ চিকিৎসক এবং সেরা কর্মীদের দ্বারা পরিচালিত একটি প্রতিষ্ঠান। যা এই জনপদের মানুষের সহজলভ্য চিকিৎসা প্রাপ্তির জন্য ভূমিকা পালন করছে। এই প্রতিষ্ঠানটি করোনার সময় মানুষের জন্য ব্যাপক ভূমিকা পালন করেছে।
আনিছুর রহমান ছিলেন একজন ক্রীড়া ও সঙ্গীত অনুরাগী মানুষ। আনিছুর রহমানের নামের অর্থ দয়াময়ের বন্ধু। ব্যক্তি জীবনে ও চর্চায় তিনি ছিলেন মানুষের উপকারী বন্ধু। তার বন্ধুমহল এবং শুভাকাঙ্খীরা তার এই চলে যাওয়াকে মেনে নিতে পারেনি আজও।
তিনি খুব অসময়ে চলে গেছেন এ পৃথিবী ছেড়ে। হয়ত বেঁচে থাকলে তার হাতে সৃষ্টি হত আরো অনেক প্রতিষ্ঠান, তৈরী হত আরো অনেক মানুষের জীবিকার উৎস। তার এই যাওয়া কোন দিন পূরণ হবে না। শূন্যতা ছেয়ে রবে সেই সব মানুষের মাঝে যাদের কাছে আনিছুর রহমান শুধু একটা নাম বা সময় নয় একটা উন্নয়ন একটা সমাজের পরিবর্তক। তাই তিনি বেঁচে থাকুক আমাদের মাঝে তার কর্মে তার মহনুভবতায় তার সৃষ্টিতে।
সুপ্রভাত মানুষের অধিকারের এক দৃষ্টান্তমূলক প্লাটফর্ম
https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/