নিজস্ব প্রতিনিধি: গোসলকালীন সময়ের নগ্ন দৃশ্য গোপন ক্যামেরায় ধারণ করে ফেসবুকে পোস্ট করার লজ্জা ও অপমানে নবম শ্রেণির এক স্কুল ছাত্রী (১৪) আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে। বৃহস্পতিবার সকালে সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার কাশিমাড়ি গ্রামে নিজ শোবার ঘরের সিলিং ফ্যানের সাথে গলায় ওড়না ঝুলিয়ে সে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। অভিযুক্ত বখাটে আল আমিন (১৮) শ্যামনগর উপজেলার কাশিমাড়ী গ্রামের স্বর্ন ব্যবসায়ী আফছার হোসেনের ছেলে। তিনি গোবিন্দপুর কলেজিয়েট স্কুলের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।
ঘটনার শিকার কিশোরীর পিতা জানান, গত ৯ জুন আল আমিন নামের স্থানীয় এক বখাটে তরুণ রাস্তার মধ্যে স্থানীয় একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর ছাত্রী তার মেয়েকে মারধর করে তার মুঠোফোন ছিনিয়ে নেয়। যার প্রেক্ষিতে ১৬ জুন তিনি নিজে বাদি হয়ে মেয়েকে উত্যক্তসহ মারধরের ঘটনায় অভিযুক্ত তরুনকে আসামী করে শ্যামনগর থানায় মামলা (যার নং ৩৩) করেন।
তিনি আরও জানান, মামলা দায়েরের ঘটনায় ক্ষুব্ধ আলআমিন গত ৫ জুলাই একাধিক ‘ভূয়া’ ফেসবুক আইডি হতে গোসলের পুর্ব মুহুর্তের খোলামেলা দৃশ্য ফেসবুকে পোস্ট করে। এঘটনার তিনদিন আগে মামলা প্রত্যাহার করা না হলে গোপন ক্যামেরায় ধারনকৃত তার মেয়ের গোসলের দৃশ্য ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি দিয়েছিল সে।
কিশোরীর ভগ্নিপতি অভিযোগ করেন, বুধবার বিকালে ঐ বখাটে তরুনের মা বাড়িতে ডাকিয়ে এনে মামলা প্রত্যাহার না হলে গোপন ক্যামেরায় ধারনকৃত আরও অসংখ্য নগ্ন ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয়াসহ তার পিতাকে হত্যার হুমকি দেয়। এসব ঘটনার প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার সকাল আটটার দিকে শোবার ঘরের দরজা জানালা লাগিয়ে সিলিং ফ্যানের সাথে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে সে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। খোঁজাখুজির একপর্যায়ে ঘরের দরজা ভেঙে পরিবারের সদস্যরা ঝুলন্ত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়।
অভিযুক্ত আলআমিনের সাথে কথা বলার জন্য একাধিকবার চেষ্টা সত্তে¡ও তার মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়। তবে তার বাবা আফছার হোসেন জানান, মামলা হওয়ায় বাড়ি থেকে পালিয়ে যাওয়া আলআমিন পরিবারের কারও সাথে যোগাযোগ করছে না। তিনি অনুরোধ করেন বিষয়টি মিটমাটের জন্য মেয়ের পরিবারকে বোঝাতে।
শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডাঃ মিলন হোসেন জানান, গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টাকারী কিশোরী এখন অনেকটা শংকামুক্ত।
ইভটিজিং এর অভিযোগে দায়েরকৃত মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শ্যামনগর থানার উপ-পরিদর্শক জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, অভিযুক্ত তরুনকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। আত্মহত্যার চেষ্টা একটি অপরাধ জানিয়ে তিনি বলেন, মেয়েটির নগ্ন ভিডিও ফেসবুকে দেয়ার ঘটনায় তার পরিবার চাইলে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে পৃথক মামলা করতে পারে।