Site icon suprovatsatkhira.com

জমে উঠেছে কোরবানির পশুর হাট

ডেস্ক রিপোর্ট: শেষ সময়ে জমে উঠেছে সাতক্ষীরায় কোরবানির পশুর হাট। তবে দাম বেশী হওয়ায় অবিক্রীত থেকে যাচ্ছে অধিকাংশ বড় গরু। সিলেট অঞ্চলে বন্যার কারণে ব্যাপারী না আসায় বড় গরু বিক্রি হচ্ছেনা বলে জানান বিক্রেতারা। ফলে এবারও ব্যাপক লোকসান গুনতে হচ্ছে গো-খামারীদের।
জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়,জেলায় খামার রয়েছে প্রায় ১৩ হাজার। এসকল খামারে কোরবানির জন্য প্রস্তুত রয়েছে ৭৮ হাজার পশু। জেলার চাহিদা রয়েছে ৫৩ হাজার পশু। উদ্বৃত্ত প্রায় ২৫ হাজার পশু সাতক্ষীরা থেকে সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠানো হয়।

সরেজমিনে জেলার সবচেয়ে বড় পশুর হাট সদর উপজেলার সীমান্তবর্তী আবাদের হাটে যেয়ে মঙ্গলবার ক্রেতা-বিক্রেতাদের সাথে কথা বরে জানা যায়, দেশি ২ মণ বা আড়াই মণ ওজনের ছোট-ছোট গরুর বেশ চাহিদা রয়েছে। সাতক্ষীরার খামারে পালন করা বড় জাতের ফ্রিজিয়ান গরু সাধারণত সিলেট অঞ্চলে বিক্রি হয়। সিলেট অঞ্চলের ব্যাপারীরা সাতক্ষীরার আবাদের হাট,পারুলিয়া হাটসহ অন্যান্য হাট থেকে বড় জাতের গরু কিনে নিয়ে যান। কিন্তু সিলেট অঞ্চলে বন্যা হওয়ায় বড় জাতের গরু কেনা-বেচা নেই বললেই চলে।

এবিষয়ে আবাদের হাটে ৪টি বড় জাতের গরু নিয়ে আসা সদর উপজেলার মাছখোলা গ্রামের আব্দুল হাকিম বলেন,গতবারের চেয়ে গো-খাদ্যের দাম প্রায় দ্বিগুন বেড়েছে। খরচ অনুপাতে মণপ্রতি বিক্রি হওয়া লাগে ৩০ হাজার টাকা। সেখানে ২৪ হাজার টাকার বেশি কেউ দাম বলছেনা। তাছাড়া তার কমপক্ষে ৮ মণ ওজনের সবচেয়ে বড় গরুটা কিনতে কেউ আগ্রহ দেখাচ্ছেননা।

গরু কিনতে আসা বিনেরপোতা এলাকার রুবেল হোসেন জানান,গতবার গরুর দাম ছিল ২০ হাজার টাকা মণ। আর এবার ২৫ থেকে ২৬ হাজার টাকা মণ। নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধিতে সংসার চালানো কষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আবার কোরবানিও করতে হবে। তাই দেড় মণ ওজনের ছোট একটি দেশি গরু কিনেছি।
গরু ব্যবসায়ী পৌরসভার বকচরা এলাকার রনি ইসলাম জানান, খামার থেকে ফ্রিজিয়ান জাতের গরু কিনে এনেছি। লাভতো দূরের কথা,বড় গরু কেউ ছুঁয়েই দেখছেনা। সিলেট অঞ্চল থেকে প্রত্যেক বছর প্রচুর ব্যাপারী আসত বড় গরু কিনতে। কিন্তু এবার ওই অঞ্চলে বন্যা হওয়ায় কোনো ব্যাপারী আসেনি। তাই বড় গরুর ক্রেতা নেই।

আবাদের হাট গরুর হাটের ইজারাদার হাবিবুর রহমান বলেন,পশু কেনা-বেচা এবার সেভাবে জমেনি। অন্যান্যবার প্রতিদিন কমপক্ষে ৪শ’ গরু বিক্রি হতো। আর এবার বড়জোর টেনে-টুনে ১ থেকে ২শ’ গরু বিক্রি হচ্ছে।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা এবিএম আব্দুর রউফ জানান, জেলায় পশু সংকট নেই। কয়েকমাস আগে থেকে আমরা খামারীদের দিকে নজর রেখেছি,যাতে অনুনমোদিত ওষুদ খাইয়ে কেউ গরু মোটাতাজা করতে না পারে। গো-খাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় এবছর গরুর দাম অন্যান্যবারের চেয়ে একটু বেশি বলে জানান তিনি।
প্রসঙ্গত,২০১৭ সাল পর্যন্ত সাতক্ষীরার সীমান্তবর্তী ১৩টি পয়েন্ট (খাটাল) দিয়ে ভারত থেকে আসত হাজার-হাজার গরু। সাতক্ষীরা থেকে এসব ভারতীয় গরু দেশের বিভিন্ন স্থানে রপ্তানী হতো। বাংলাদেশে গরু রপ্তানীতে বিজেপি সরকারের কঠোর নিষেধাজ্ঞা থাকায় সাতক্ষীরায় ভারতীয় গরু আসা বন্ধ হয়ে গেছে।

https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/
Exit mobile version