Site icon suprovatsatkhira.com

কয়রায় নারীকে গাছে বেধে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের অভিযোগ

কয়রা প্রতিনিধি : খুলনার কয়রায় এক নারীকে গাছে বেঁধে মারধর ও বিবস্ত্র করে নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। সারা শরীরে নির্যাতনের ক্ষত নিয়ে বর্তমানে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (খুমেক) সার্জারি ওয়ার্ডের বারান্দায় শুয়ে কাতরাচ্ছেন ওই নারী। শুক্রবার (১৫ জুলাই) দুপুরে হাসপাতালে গিয়ে তার পরিচয় জানা যায়। তার স্বজনদের দাবী প্রতিপক্ষের ভয়ে ঘটনা প্রকাশ করেননি তারা। নির্যাতনের শিকার ওই নারী কয়রা উপজেলার গিলাবাড়ি গ্রামের আব্দুল গফ্ফার গাজীর মেয়ে এবং একই গ্রামের আবুল কালাম সানার স্ত্রী। নির্যাতিত নারীর স্বজনরা জানান, গত রোববার (১০ জুলাই) ঈদ উপলক্ষে ওই নারী তার স্বামীর বাড়ি থেকে বাবার বাড়িতে আসে। পরের দিন ১১ জুলাই পারিবারিক জমি নিয়ে তার চাচা ও চাচাত ভাইদের সঙ্গে গোলমাল শুরু হয়।

এক পর্যায়ে তাদের উপর হামলা চালায় প্রতিপক্ষরা। এ সময় ওই নারী তার বাবা ও ভাইকে রক্ষায় এগিয়ে গেলে প্রতিপক্ষরা তার উপর চড়াও হয়। ভুক্তভোগী ওই নারী বলেন, আমার বাবার জমি নিয়ে চাচাদের সাথে দীর্ঘদিন বিরোধ চলে আসছে। এ নিয়ে চাচারা বিভিন্ন সময়ে আমার বাবার জমি দখল করতে আসে। ঘটনার দিন সকালে আমার চাচা ও চাচাতো ভাইয়েরা লোকজন নিয়ে এসে আমার বাবা ও ভাইকে মারধর করতে যায়। তখন আমি বাবা ও ভাইকে রক্ষায় ঘরের মধ্যে আটকে তালা দিয়ে রাখি। তখন আমার চাচাতো ভাই সাইফুল, সোয়েব, সালাহ উদ্দীন ও ফিরোজসহ কয়েকজন মিলে আমাকে বাড়ী থেকে ধরে নিয়ে রাস্তার পাশে একটি মেহগনী গাছে বেঁধে মারধর করে। তারা আমাকে এক পর্যায়ে বিবস্ত্র করে ফেলে। তখন আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেলি। ওই নারীর বোনের স্বামী রুস্তম গাজী বলেন, আমার শালীকাকে বিবস্ত্র অবস্থায় গাছে বেঁধে রেখে তারা আমার শ্বশুরের জমিতে ঘর তৈরী করছিল। তখন ঘটনাটি জানতে পেরে আমি ৯৯৯ এ ফোন করি।

পরে পুলিশ এসে গাছ থেকে দড়ি খুলে তাকে উদ্ধার করে। নির্যাতনের শিকার ওই নারীর স্বামী আবুল কালাম সানা বলেন, ঘটনার সময় আমি সাতক্ষীরার প্রতাপনগরে ছিলাম। মোবাইলে সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়ে স্ত্রীকে হাসপাতালে নিয়ে যাই। আমার চাচা শ্বশুররা স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী হওয়ায় বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছেন। মহেশ্বরীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহনেওয়াজ শিকারী বলেন, জমি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে নিজেদের গোষ্ঠির মধ্যে দীর্ঘদিনের বিরোধ চলে আসছে। বেশ কয়েকবার সালিশ করা হলেও সমাধান না হওয়ায় এখন আর কেউ যায় না। ঘটনার সময় আমি সেখানে ছিলাম না। সংবাদ পেয়ে আমি পুলিশকে অবহিত করেছি। পুলিশ ভালো বলতে পারবে। কয়রা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. ইব্রাহিম আলি বলেন, ওই দিন ৯৯৯ থেকে আমাদের জানানো হলে তাৎক্ষনিক সেখানে ফোর্স পাঠানো হয়। পুলিশ গিয়ে তাদের উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যায়। ভুক্তভোগীদের থানায় এসে অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কেউ অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/
Exit mobile version