নিজস্ব প্রতিনিধি: মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ভারতীয় চিংড়ির রেণু পারাপার করার অভিযোগ উঠেছে সাতক্ষীরার ১৭ বিওপির বাঁশঝাড়িয়া ব্যাটলিয়নের নায়েক সুবেদার আলমগীর হোসেনের বিরুদ্ধে।
প্রতিদিন রাত ১২ টা থেকে ২ টার মধ্যে ওই ক্যাম্প থেকে বিজিবির পাহারায় সীমান্ত এলাকা থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে ভারতীয় চিংড়ির রেণু নিয়ে যায় চোরাকারবারী।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় অনেকে জানায়, প্রতিদিন রাতে ভারত থেকে গলদার রেণু নিয়ে আসে উপজেলার ধলবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোস্তফা, বলারহুলা গ্রামের মহব্বত গাজীর ছেলে মহাসিন গাজী,একই গ্রামের মৃত ছবেদ গাজীর ছেলে রাজ্জাক ওরফে বাচা রাজ্জাক ও বাহাদুরপুর গ্রামের রফিক গাজীর ছেলে লিটন গাজী। ক্যাম্পের নায়েক সুবেদারের সহযোগিতায় প্রতিদিন ভারত থেকে চিংড়ির রেণু নিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে পাইকারি বিক্রি করে চোরা কারবারিরা।
গত ২৪ জুলাই রাত ১২ টার দিকে সরেজমিনে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, বাঁশঝাড়িয়া ক্যাম্পের সামনে খুলনা মেট্রো (ন – ১১-০৯ ০৩) নাম্বারের একটি পিকআপ। ওই পিকআপে বিজিবি সদস্যদের উপস্থিতিতে ১০০ থেকে ১৫০ পলি চিংড়ির রেণু তুলছে চোরাকারবারিরা।
পরবর্তীতে পিকআপটি বিজিবি সদস্যদের একটি টহল দল সীমান্ত এলাকা পার করে দিচ্ছে।
ওই সময় সংবাদকর্মীরা বাঁশঝাড়িয়া ক্যাম্পের সুবেদারকে ফোন দিলে তিনি বলেন বিষয়টি আমি দেখছি।
প্রতিদিন রাতে তিনি মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে চোরাকারবারিদের সহযোগিতা করছেন সুবেদার আলমগীর হোসেন।
অনুসন্ধানে জানা যায়,একটি পলিতে চিংড়ির রেণু থাকে ২০ থেকে ২৫ হাজার। এক পলির জন্য বাঁশঝাড়িয়া ক্যাম্পের সুবেদার ৫০০ টাকা, ক্যাম্পের সকল সদস্যদের জন্য ৫০০ টাকা ও পেট্রোল টিম পাহারা দিয়ে সীমান্ত এলাকা পার করে দেওয়ার জন্য ২০০ টাকা করে দেয় চোরাকারবারিরা।
ধলবাড়িয়া ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি মেহেদী হাসান বলেন,বাঁশঝাড়িয়া ক্যাম্পের নায়েক সুবেদার আলমগীর হোসেন যোগদানের পর থেকেই চোরাকারবারিদের সহযোগিতা করে আসছেন। অবৈধ ভারতীয় গলদার রেণু, বিভিন্ন প্রকার মাদকদ্রব্য পারাপারের অভয়ারণ্য বাঁশঝাড়িয়া ক্যাম্প। চোরাকারবারিদের সহযোগিতা করে প্রতিদিন প্রায় অর্ধলক্ষ টাকা উৎকোচ গ্রহণ করেন সুবেদার আলমগীর হোসেন।
এবিষয়ে বাঁশঝাড়িয়া ক্যাম্পের নায়েক সুবেদার আলমগীর হোসেন সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, বাঁশঝাড়িয়া ক্যাম্প দিয়ে কোন প্রকার মাদক কিংবা ভারতীয় গলদার রেণু পারাপার হয় না।
সাতক্ষীরা ১৭ বিজিবি’র নীল ডুমুর ক্যাম্পের সহকারি পরিচালক শাহ আলম খালিদ ইমাম বলেন, বাঁশঝাড়িয়া ক্যাম্পের নায়েক সুবেদারের সাথে চোরাকারবারিদের সখ্যতার বিষয় তিনি অবগত নন। এছাড়া তদন্ত করে যদি তার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয় তাহলে ওই সুবেদারের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে জানান তিনি।