সকল বাধা বিপত্তিকে পেছনে ফেলে গৌরবের সাথে সাফল্যের তালিকায় নাম লিখিয়েছেন সাতক্ষীরার পাঁচ নারী। তারা সংসার জীবন থেকে শুরু করে অর্থনৈতিক ও সমাজ জীবন তথা সমাজের সকল ক্ষেত্রে অবদান রেখে চলেছেন। তাদের জীবন সংগ্রামের ইতিকথা তুলে ধরেই আজকের এই লেখা। সফল ওই পাঁচ নারী মনে করেন তাদের জীবন থেকে সমাজের পিছিয়ে পড়া নারীরা অনুপ্রেরণা পাবেন। বাধা বিপত্তিকে পিছনে ফেলে পথ চলবেন নতুন করে। সফল পাঁচ নারীর জীবনের আলোকে সফলতার গল্প তুলে ধরছি-
অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জনকারী নারী রেশমা বেগম: স্বল্প শিক্ষিত। বয়স ৩৯ বছর। ২০০৬ সালে যশোরের বঁধুয়া বিউটি পার্লার থেকে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে তালায় নিজ বাড়িতেই সোনালী বিউটি পার্লার গড়ে তোলেন। লোকজনের সামাজিক ভাবে অপদস্তে তিনি দমে যাননি। অসুস্থ স্বামী ও সন্তানকে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করার জন্য পরিশ্রম করেছেন। ছেলে ঢাকার ট্রমা মেডিকেল ইনস্টিটিউট শেষ বর্ষে অধ্যয়নরত। এর মধ্যে নিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে সম্প্রসারণ করেছেন। টালির ঘর ভেঙ্গে ২তলা ভবন নির্মাণ করেছেন। বর্তমানে ৮০ লাখ টাকার সম্পত্তি আছে। অনলাইন ও অফলাইনে ব্যবসা করছেন। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে প্রশিক্ষক হিসেবে কাজ করেন। স্বামী পরিত্যক্তা ও বিধবা নারীকে বিনা পারিশ্রমিকে প্রশিক্ষণ দেন। নারী উদ্যোক্তা সম্মিলিত কেন্দ্রের যুগ্ম-সম্পাদক নির্বাচিত। বিসিকের টিম লিডার, একাধিক এনজিও, সরকারি প্রতিষ্ঠানের সাথে কাজ করছেন। তার নারী উদ্যোক্তা সম্মিলিত কেন্দ্রের ম্যাগাজিনে “আমাদের ক্যানভাস” এ জীবনী প্রকাশিত হয়।
শিক্ষা ও চাকুরী ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জনকারী নারী জামিলা খাতুন: শিক্ষা ও চাকুরীর ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জনকারী নারী জামিলা খাতুন হাজারও প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে শিক্ষার আলো ছড়াচ্ছেন আলোক বর্তিকা হয়ে। আড়াই বছর বয়সে পোলিওতে আক্রান্ত হয়ে দু’পা অচল হয়ে যায়। দুই বোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে জামিলা দ্বিতীয়। পরিবারের সহযোগিতা না পেয়ে হামাগুড়ি দিয়ে একাই বিদ্যালয় যায়। পরিবার ভেবেছিলে প্রতিবন্ধীর আবার লেখাপড়া। তার দিয়ে কিছুই হবে না। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মেধা তালিকায় সবসময় জামিলা প্রথম স্থান অধিকার করে এবং ২০০৪ সালে এসএসসি, ২০০৮ সালে এইচএসসি এবং ২০১৪ সালে স্নাতক পাস করেন। জামিলা প্রাইমারি জীবন থেকে তার সহপাঠী এবং তার নিজের ক্লাসের শিক্ষার্থীদের পড়ালেখায় সহযোগিতা করে থাকেন। জামিলা তার ছোট ভাইকে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা করিয়েছেন নন ক্যাডার সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা মানুষের মত মানুষ করে গড়ে তুলেছেন এটাই তার গর্ব। ২০০৬ সালে নিজেই ঋশিল্পী এনজিও, সাতক্ষীরা এসে হস্তশিল্প প্রোগ্রামে মেয়েদের হাতের কাজ শেখানোর দায়িত্ব নেন। তিনি কোনো অবস্থাতেই পড়ালেখা ছাড়েননি কাজের পাশাপাশি পড়ালেখা ও কম্পিউটার শেখার কাজ চালিয়ে যান। ২০০৭ সালে ঋশিল্পী স্কুলের শিক্ষার্থীদের কম্পিউটারের কাজ শুরু করেন। ২০১৩ সালের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে যোগদান করেন এরপরে ২০১৫ সালে আইসিটি প্রশিক্ষণ এবং ২০১৭ সালের শিক্ষাবর্ষে ডিপ্লোমা ইন এডুকেশন এর প্রথম স্থান অধিকার করেন। তথ্যপ্রযুক্তি সঙ্গী করে পাঠদানের বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন দেখিয়ে চলছেন জামিলা। ডিজিটাল কনটেন্ট তৈরি তিনি মাল্টিমিডিয়া ব্যবহারের মাধ্যমে অন্যান্য মডেল তিনি। কেবল পাঠদানের মডেল নয়, পাঠদানের বিশেষ বৈশিষ্ট্যের অধিকারী ছিলেন। পাঠদানের পাশাপাশি শিশুদের ছড়া নাচ-গান গল্প অভিনয় চারু ও কারুকলা বিজ্ঞান-প্রযুক্তি পরিবেশ ও নিরাপত্তা স্বাস্থ্য শরীরচর্চার করেছেন। বিদ্যালয় বন্ধ থাকায় ঘরে-বসে-শিখি সরকারের মাধ্যমে পাঠদান অব্যাহত রাখতে সাতক্ষীরা সদর উপজেলা সমন্বয়কারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এবং শিক্ষকদের গুগোলমিট ব্যবহার করে পাঠদান করার প্রশিক্ষণ দেন জামিলা। শারীরিক প্রতিবন্ধী নয় তিনি প্রতিবন্ধকতাকে জয় করেছেন এবং নিজেকে সফল করেছেন। কীভাবে প্রতিবন্ধকতাকে নির্বাসনে পাঠানো যায় সেটাই দেখিয়েছে। বাংলাদেশের নারীরা যেন কোনো কারণে নিজেদের গুটিয়ে নেওয়াই জলের প্রদীপ জ্বালায়।
সফল জননী নারী সালমা খাতুন: সালমা খাতুন, স্বামী- আলহাজ্ব মো. হারুনুর রশিদ, পিতা- মাদার সরদার, গ্রাম- খেঁজুরবাড়ীয়া, ইউনিয়ন-পারুলিয়া, দেবহাটা, সাতক্ষীরা। তার স্বামী সামান্য বেতনে একটি বেসরকারি হাইস্কুলে চাকুরি করতেন। তার বিয়ের পর তাদের ২টি ছেলে ও ২টি কন্যা সন্তান জন্মগ্রহণ করে। স্বামী ও ৪টি সন্তান নিয়ে সংসার খুব ভাল চলছিল না। ভাবলাম যেভাবেই হোক তার ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়া শিখিয়ে মানুষ করতে হবে। সংসার ও ছেলে মেয়েদের লেখা পড়ার খরচ কোনভাবে চলতে লাগল। ছেলে মেয়েদের লেখাপড়ার খরচ যোগানোর জন্য বাড়িতে হাঁস মুরগি ও গাভি পালন শুরু করলেন। এটা থেকে ছেলে মেয়েদের ডিম ও মাংসের চাহিদার পাশাপাশি বিক্রি করা অর্থে ছেলেমেয়েদের বই, খাতা, কলম ও পড়া লেখার খরচ যোগাত। সবাই ছিল মেধাবী ও পরিশ্রমী। স্কুলের গন্ডি পেরিয়ে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে সাফল্যের সাথে পড়াশোনা করে আসছিল। বর্তমানে ২ ছেলে ২ মেয়ে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে সবাই সর্বোচ্চ মেধার স্বাক্ষর রাখতে সক্ষম হয়। পুত্র ও কন্যাদের লেখাপড়া সঠিক ভাবে চালিয়ে নিয়ে যাওয়া এবং সমাজে তাদেরকে সুপ্রতিষ্ঠিত করার জন্য দিনরাত কঠোর পরিশ্রম করেছে। তার দেখাদেখি অন্য নারীরা ও তাদের সন্তানদেরকে বিদ্যালয়মুখী করার জন্য আগ্রহী হয়েছিলেন। ছেলে-মেয়েদের কর্মস্থলের বিবরণ: বড় মেয়ে মহাব্বাতুন নেছা, সহকারী শিক্ষক, খেঁজুরবাড়ীয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মেঝ ছেলে ডা. মো. মোশারাফ হোসেন, সিনিয়র অর্থপেডিকস সার্জন, যশোর সদর হাসপাতাল, যশোর। পরবর্তী মেয়ে আমিনা রশিদ, সৌদি আরবের জীজান বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রভাষক পদে কমরত এবং ছোট ছেলে মোঃ আব্দুস সালাম, সহকারী শিক্ষক (বিজ্ঞান বিভাগ), পারুলিয়া এস, এস মাধ্যমিক বিদ্যালয় কর্মরত আছেন।
নির্যাতনের বিভীষিকা মুছে ফেলে নতুন উদ্দামে জীবন শুরু করেছেন মোছা. শান্তা পারভীন: মোছাঃ শান্তা পারভীন তার জীবন নিয়ে কিছু কথা লিখছি। শান্তা একটা মেয়ে, জীবনে অনেক আশা ছিল পড়াশোনা করে কিছু করার। জীবনে বড় স্বপ্ন ছিল পুলিশ হবে কিন্তু পড়ালেখা করতে থেমে যেতে হলো। বাবা মার অভাবের সংসার তার উপর তার ৫ ভাইবোন। শেষে বৃদ্ধ নানার মাথার বোঝা হল। জীবনে তখন থেকে নতুন অধ্যায় শুরু হয়। পড়াশোনা করতে গিয়ে অনেক নির্যাতনের শিকার হয়। কয়েকজন ছেলে মেয়ে বিদ্যালয়ের এক স্যারের কাছে প্রাইভেট পড়তে শুরু করে। সেই স্যার ছাত্রীদের শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতো। তার খারাপ রুপ প্রকাশ্যে আনার জন্য তার পরিবারের সদস্যদের জানাই। তারা সেটার প্রতিবাদ করল। প্রতিবাদ করার কারণে উক্ত শিক্ষক সাসপেন্ড হয়ে যায়। তখন অন্যান্য শিক্ষকরা আমাকে ভালো চোখে দেখতো না এরপর তার লেখা পড়া বন্ধ হয়ে যায়। তার বাবাও তাকে প্রচন্ড প্রহার করতো। শেষে তার বিয়ে হয়ে যায়। তিনি স্বামীর বাড়ি চলে যায়। স্বামীর যৌতুকের কারণে তাকে নির্যাতন করতো। তার ছিল প্রচন্ড লোভ। তার নানা নানী জিনিসপত্র না দিতে পারায় বিয়ের ছয় মাস পর তালাক হয়ে যায়। এরপর নানা নানী তার দ্বিতীয় বিবাহ দেয়। বিয়ের তিন মাস পর দ্বিতীয় স্বামী উপার্জনের জন্য তাকে মুম্বাই শহরে নিয়ে যায়। তাদের আগে থেকে মুম্বাই শহরে যাতায়াত ছিল। তাকে মুম্বাই নিয়ে সেই দিনেই এক পতিতালয়ে বিক্রি করে দেয়। তিনি নতুন শহরে কোন কিছু বুঝে উঠতে পারিনি। এরপর তার উপর চলে শারীরিক নির্যাতন। পুরুষের মনোরঞ্জনের জন্য রাজি না হলে তার উপর চলত অমানুষিক নির্যাতন। তিনি ৯দিন শুধু মাত্র পানি পান করে বেঁচে ছিলেন। তিনি আত্মহত্যা করতে গিয়েছিল কিন্তু চেষ্টা করেও পারেনি। অবশেষে তার খরিদ্দার হিসেবে আসে একজন পুরুষ সে অল্প অল্প বাংলা ভাষা বুঝতো। তার কাছে অনেক কাকুতি মিনতি করে এবং সে তার মুক্তির ব্যাপারে সুযোগ খুঁজতে থাকে।
একদিন মালিককে বুঝিয়ে তাকে দূরে নিয়ে ভোগ করতে চাইলে মালিক অনুমতি দেয়। সেদিন তিনি অন্ধকার জগৎ থেকে মুক্তি লাভ করে। তার কাছে কোন টাকা পয়সা নাই খাবার নাই, দেশে ফিরব, সে পয়সা নাই। অনেক ভেবে চিন্তে এক বাংলাদেশির দেখা পাই তার সাহায্যে জোগাড়ে কাজে লেগে যাই। দেশে ফেরার জন্য যে টাকার দরকার তা উপার্জন করতে তিন চার মাস কাজ করতে হয়েছে। এরপর তার মামা বাংলাদেশি একজনকে পাঠায় তাকে নিয়ে আসার জন্য। তিনি দেশে ফিরে নানা বাড়িতে উঠে। তাকে পতিতালয়ে বিক্রি করে দেয়ার খবর শ্বশুর বাড়ির সবাই জানতো কিন্তু নানা বাড়ির পরিবারে কেউ জানতো না। শ্বশুর বাড়ির লোকজন বিপদের ভয়ে আমাকে নিতে আসে। তিনি শ্বশুর বাড়ি চলে যায়। সেখানে কেউ আমাকে ভালো ব্যবহার করতো না। তিনি পতিতালয় ঘুরে এসেছে সেজন্য প্রতিবেশী সহ সকলে তাকে টিজ করতে থাকে। তিনি মানুষিক বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। কিছুদিন পর তার স্বামী বাড়িতে ফিরে আসে, সেও তাকে যত রকম শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন আছে সব প্রয়োগ করতে থাকে। তিনি অন্তসত্তা হয়। তারা তার গর্ভ ধারণকে অন্যের বলে প্রচার করতে থাকে। তিনি আবার ও আত্মহত্যা করতে উদ্যত হয় কিন্তু এ গর্ভ ধারণ তো আমার স্বামীর জন্য, জগতে আর কিছু না হোক এ সত্য টুকু নিয়ে বেচে থাকি পারে। তিনি স্থানীয় চেয়ারম্যান ও মেম্বরদের জানায়। তাদের সহায়তা তিনি শ্বশুর বাড়িতে টিকে আছেন। তার এক ছেলে এক মেয়ে। নিজের রোজগার নিজেরই করে খেতে হয়। কোথায় যাব- এ বিশাল পৃথিবীতে! ছেলে মেয়ে দুটি মানুষ করার তার একমাত্র আশা। তাদের মুখে চেয়েই শান্তা পারভীনের নিরন্তর পথ চলা।
সমাজ উন্নয়নে অসামান্য অবদান রেখেছেন শিখা রাণী চক্রবর্তী: ১৯৯১ সালে এস,এস,সি পরীক্ষার পরে বিবাহিত জীবন শুরু হয়। ১৯৯২ সালে ব্র্যাক স্কুলে ৫৭৫ টাকা বেতনে শিক্ষাকতা শুরু করেন। ১৯৯৩ সালে একটা কন্যা সন্তান জন্ম দেন। কুসংস্কার তাকে জড়িয়ে ধরতে লাগল। এই সামান্য বেতন তার জীবনে অনেক বড় চাওয়া ছিল। কারণ প্রান্তিক কৃষক পরিবার তার বিবাহিত হয়। অভাব আর দারিদ্র্য ছিল নিত্য সাথী। গৃহ কাজের বাইরে নারীর উপার্জনের কোনো সুযোগ দেয় না। পুরুষতন্ত্রিক সমাজে নারী নেতৃত্ব বড়ই কঠিন। আমি তার জলন্ত স্বাক্ষী। সকল বাধা বিপত্তি অতিক্রম করে সৎ পথের পথিক হয়ে নিজের পরিবার ও সমাজের ভাগ্য পরিবর্তন করার জন্য প্রথম স্বামীর সহযোগিতা নিয়ে তিনি নারী সংগঠন তৈরি করে। আমার ভাগ্যের পরিবর্তন ও সমাজের হত দরিদ্র মানুষের ভাগ্যের একটু একটু পরিবর্তন হতে লাগল তার পরিচিতি ধীরে ধীরে বাড়তে লাগল। বর্তমানে সংগঠনে ৩,০০,০০০/- টাকা জমা আছে ২০২০ সালে ১,৬৬,০০০/- টাকা জমা থাকায় ৫,৫৩,০০০/- টাকায় কৃষি পাতী পেয়েছি। জৈব সার ও জৈব বালাইনাশক কৃষিতে ব্যবহার করে ও সমাজের অনেক কৃষকের উৎপাদন শীলতা বৃদ্ধি খরচ ও কম হওয়ায় ২০১৮ সালে। জাতীয় পুরস্কার পাই। ২০১২ সালে মানব পাচার প্রতিরোধ ও নিরাপদ অভিবাসন নিশ্চিতকরণ উদ্যোগ। সমাজের মানুষকে প্রশিক্ষণ সচেতনতা করতে সক্ষম হয়।
২০১৬ সালে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার অগ্রগতির পরিচালক এবং গণ্যমান্য ব্যক্তি বর্গের উপস্থিতে প্রথম পুরস্কার পায়। ইউনিয়ন পরিষদের ভাতার কার্ডের এম,পি প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করে। নিজের পরিবার আর একটু সুখ শান্তি বৃদ্ধির জন্য ৩,২০,০০০-/ টাকা খরচ করে ২০১৫ সালে তার স্বামী বিদেশ পাড়ি দেন। ২০১৯ সালে কৃষি মন্ত্রী মাহবুবুল আলম, সংসদ সদস্য মকবুল হোসেনকে ফুলের শুভেচ্ছা দেয়। ঢাকা পাট গবেষনা ইনস্টিটিউশনের পরিচালক সার কৃষি পরিচালক সংসদ সদস্য মকবুল আলম হানিফের মঞ্চে নিরাপদ ফল ও সবজির ন্যায্য মূল্যে বাজার জাত করনে মত বিনিময় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখে । ২০১৯ সালে (এ,সিডি/ভোকা) থেকে প্রশিক্ষন গ্রহণ করি প্রায় ৬০০ খামারী পুষ্টি ও আধুনিক পদ্ধতিতে গাভি পালনে প্রশিক্ষন দেয়। তার জীবন প্রান্তিক কৃষক পরিবারে, জাত প্রতিজাত ছিল তার নিত্য সাথী কুসংস্কার আর সমালোচনা ছিল তার পিছনের বন্ধু। প্রতিবাদ ও জবাবদিহিতা ছিল সামনের বন্ধ। ২০১৪ সালে পুলিশিং কমিটির সহ-সভাপতি হই। ২০১৩ সালে কমিউনিটি ক্লিনিকের কার্য নির্বাহী কমিটির সহ-সভাপতি হয়। ২০১৫ সালে একটি বাড়ি একটি খামারের সহ-সভাপতি নির্বাচিত হয়। ১১ ভাই বোনের অষ্টম সন্তান ছিলেন, মা তাকে সাহস আর সোহাগ দিয়ে বড় করেছেন। বর্তমানে তিনি দুই সন্তানের জননী। ছেলেটি অনার্স প্রথম বর্ষতে অধ্যয়ন করছে ও মেয়েটি বিয়ে দিয়েছি। তার ২ জন নাতি ছেলে। বর্তমান পাকা ঘর গোয়াল রান্না ঘর পাকা আছে। অর্থ আর পরিচিতি দুইটিই আছে। সমাজে গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধি হয়েছে। পূর্বের আর্থিক অবস্থা আর নেই। পূর্বে ছিল অন্ন বস্ত্র বাসস্থান, ডাক্তারি চিকিৎসা ছিল না, ছিল ঝাড় ফুক জল পড়া, তেলা পড়া ইত্যাদি বিভিন্ন মন্দির, দরগার ধুলো দিয়ে চিকিৎসা হতো। গর্ভবতী মা প্রসবের বেদনায় ছটফট করেছে। ডাক্তার এর নিকট নিয়ে যায়নি। কত গর্ভবতী মায়ের অকাল মৃত্যু হয়েছে। চোখের সামনে আমি এগুলো কোন দিন হতে দেই না। ভাগ্য বিধাতা তাকে অনেক কষ্টের মধ্যে দিয়ে আজ সংসার জীবনে একটা সফল জীবন এনে দিয়েছে।
তথ্য সূত্র: মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর, সাতক্ষীরা।