নিজস্ব প্রতিনিধি : আশাশুনির খাজরা ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সচিব জলিল উদ্দীনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল জন্ম নিবন্ধন করতে অতিরিক্ত টাকা নিয়ে আত্বসাৎ, পরিষদে না আসা ও জন্ম নিবন্ধনের পাসওয়ার্ড বন্ধ রেখে শতশত সেবা গ্রহীতাকে হয়রানির করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। দুর্নীতিবাজ ওই সচিবের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে রবিবার (১২ জুন) সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক বরাবর (নং-৬৩৭/সি) লিখিত আবেদন করেছেন খাজরা ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব শাহ নেওয়াজ ডালিম।
অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, কাদাকাটি ইউনিয়ন পরিষদের সচিব জলিল উদ্দীন গত ২০ ফেব্রুয়ারি থেকে খাজরা ইউপির ভারপ্রাপ্ত অতিরিক্ত সচিবের দায়িত্বে রয়েছেন।
শুরু থেকেই তিনি পরিষদে আসেন না। কোন কাগজে স্বাক্ষর করাতে হলে সেবা গ্রহীতাকে কাদাকাটি ইউনিয়ন পরিষদে যেতে হয়। সচিব জন্ম নিবন্ধন ফি বাবদ প্রত্যেকের কাছ থেকে ১শ টাকা করে গ্রহণ করছেন। ইউপি চেয়ারম্যান নিষেধ করায় গত ৯ জুন থেকে সচিবের নিজ নামীয় পাসওয়ার্ডটি বন্ধ রেখে দিয়েছেন। ফলে ছেলেমেয়েদের স্কুলের জন্য এ জন্ম নিবন্ধন সুবিধা বঞ্চিত হচ্ছে।
সরকারি গেজেট অনুয়ায়ী ৪৫ দিনের শিশুদের বিনামূল্যে ৫ বছরের নিচে ২৫ টাকা ও ৫ বছরের উপরের ব্যক্তি ৫০ টাকা সরকারি ফি নির্ধারণ করা হলেও প্রত্যেক নিবন্ধন হতে তিনি ৮০ টাকা নিয়ে উদ্যোক্তাকে ২০ টাকা করে দিয়েছেন। হিসাব অনুযায়ী নতুন জন্ম নিবন্ধন আনুমানিক ৩ হাজার ১৮০ ও ৩০০টির মতো জন্ম নিবন্ধন সংশোধন করা হয়েছে। এ থেকে তিনি অতিরিক্ত ১ লক্ষ ৩৮ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে খাজরা ইউপি চেয়ারম্যান শাহনেওয়াজ ডালিম বলেন, ইউপি সচিব দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে জন্ম নিবন্ধন করতে আসা সকলের কাছ থেকে সরকার নির্ধারিত টাকার অতিরিক্ত টাকা নিচ্ছেন। আমি নিষেধ করায় ৯ জুন থেকে তিনি নিজের পাসওয়ার্ডটি বন্ধ রেখেছেন। সাধারণ জনগণের কষ্ট লাঘবের জন্যে আমি তার বিহীত ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসক ববাবর আবেদন করেছি।
উদ্যোক্তা ইকবাল হোসেন জানান, জন্ম নিবন্ধনের জন্য ইউপি চেয়ারম্যান ও সচিবের নামে আলাদা আলাদা পাসওয়ার্ড থাকে। আমাদের শুধুই অনলাইনে আবেদন করতে হয়। সচিব আমাকে দিয়ে জন্ম নিবন্ধন রেজিস্ট্রারের কাজ করিয়ে নেন। আবেদন প্রতি ১০০টাকা নিয়ে আমাকে ২০ টাকা দিয়ে বাকী ৮০ টাকা তিনি নিজে রেখে দেন।
এ ব্যাপারে সচিব জলিল উদ্দিন বলেন, জন্ম নিবন্ধন বাবদ গড়ে ৮০ টাকা করে নিয়েছি। অতিরিক্ত টাকা আদায় করিনি। জেলা ডিডিএলজি স্যারের সাথে কথা হয়েছে কোন সমস্যা নেই।
দুর্নীতিবাজ ইউপি সচিবের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া সহ খাজরা ইউনিয়ন পরিষদে একজন স্থায়ী সচিব নিয়োগ দিতে প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ইউনিয়নবাসী।