সমীর রায়, আশাশুনি : আশাশুনিতে আম্ফানের তাÐবে ক্ষতিগ্রস্ত শ্রীউলা ইউনিয়নের গ্রামীণ যোগাযোগ ব্যবস্থার উল্লেখযোগ্য কোন উন্নতি হয়নি। আম্ফানের জলোচ্ছ¡াসে খোলপেটুয়া নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙে ২২ গ্রামের এ ইউনিয়নে একবছর ধরে চলমান জোয়ার-ভাটায় প্রত্যেকটি ইটের সোলিং ও কাঁচা রাস্তা জোয়ারের পানিতে ভেসে যায়। এছাড়া প্রায় ৭৮ কোটি টাকা বরাদ্দে নির্মানাধীন আশাশুনি টু কোলা-ঘোলা সড়কের ৫টি পয়েন্ট আম্ফানের জোয়ারে ভেসে যায়। প্রত্যেকটি ইটের সোলিংয়ের ইট সেই থেকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাস্তার দু’ধারে পড়ে আছে। বেশিরভাগ রাস্তার অবস্থা এমন খারাপ যে এক গ্রাম থেকে অন্য গ্রামে যেতে মোটরসাইকেল ছাড়া বিকল্প কোন উপায় নেই। বর্ষা মৌসম জেঁকে বসার আগেই যদি রাস্তাগুলি সংস্কার করা না হয় তবে গত বছরের মত প্রত্যন্ত অঞ্চলের লোকজনের ঘরের মধ্যে পড়েই মানবেতর জীবন-যাপন করতে হবে।
এ ব্যাপারে শ্রীউলা ইউপি চেয়ারম্যান পভাষক দীপঙ্কর বাছাড় দিপু জানান- আম্ফানে আমার ইউনিয়ের যোগাযোগ ব্যবস্থাটিকেই ধ্বংস করে দিয়েছে। পুরানো-নতুন দিয়ে প্রায় ৬০ কি.মি. ইটের সোলিং সংস্কার ও নির্মান করা হলে ইউনিয়নের প্রত্যন্ত এলাকার লোকজন এক গ্রাম থেকে অন্য গ্রামে ভালোভাবে যাতয়াত করতে পারবে। সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ডা. আ ফ ম রুহুল হক এমপি স্যারের বিশেষ বরাদ্দে মাটির কাজ ও সংস্কার কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। তবে আম্ফান উপদ্রæত এলাকা হিসেবে বিশেষ বিবেচনায় প্রত্যেকটি রাস্তা সংস্কার ও নতুন রাস্তা নির্মান করতে হলে বড় ধরণের বরাদ্দ প্রয়োজন। কারণ ইউনিয়ন পরিষদের অর্থায়নে এতবড় কর্মযজ্ঞ সম্পন্ন করা সম্ভব নয়।
তিনি বলেন- কাঁকড়াবুনিয়া গ্রামের ৪ কি.মি., মহিষকুড় গ্রামে ৩ কি.মি., নাসিমাবাদ গ্রাম থেকে কলিমাখালি ¯øুইসগেট ও খেয়াঘাট পর্যন্ত প্রায় ৫ কি.মি.ইটের সোলিং রাস্তা সংস্কার করা অতি জরুরী। বর্ষার পানি জমা শুরু হলে এসব এলাকায় জনদুর্ভোগ চরমে উঠবে। টিআর, কাবিখা সহ এমপি স্যারের বিশেষ বরাদ্দের টাকায় প্রায় ৫ কি.মি. ইটের সোলিং ও ১১ কি.মি. মাটির রাস্তার সংস্কার করেছি। মাটির কাজ করা হয়েছে মাড়িয়ালা গ্রামে দেড় কি.মি., লাঙ্গলদাড়িয়া গ্রামে আধা কি.মি. পুইজালা বৌদির খেয়াঘাট সংলগ্ন প্রায় ১ কি.মি. ও ঢালীরচক গ্রামে প্রায় ২ কি.মি. ইটের সোলিং রাস্তা কয়েকটি প্রকল্পের টাকা দিয়ে সংস্কার করা হয়েছে।
পুইজালা গ্রামের পুইজালা গ্রামে সাড়ে কি.মি., বয়ারশিং গ্রামে ৩ কি.মি., নাসিমাবাদ গ্রামে আড়াই কি.মি. ও কলিমাখালী গ্রামে দেড় কি.মি. রাস্তায় মাটির কাজ করা সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়া পুইজালা বৌদির খেয়াঘাট থেকে পিচের রাস্তা পর্যন্ত ও পুইজালা নগেন্দ্র মাষ্টারের বাড়ি থেকে ওয়াপদাগামী রাস্তায় এডিবি বরাদ্দে ৮ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ইটের সোলিংয়ের কাজ চলমান রয়েছে। চেয়ারম্যান দীপু আরও জানান- বিলবকচর কালীমন্দির থেকে পুইজালা ¯øুইসগেট পর্যন্ত প্রায় ২ কি.মি., পুইজালা বাবু চৌকিদারের বাড়ি থেকে ¯øুইসগেট পর্যন্ত আধা কি.মি., একই গ্রামের আনিছুর হালদারের ঘেরে থেকে শৈলেন মÐলের বাড়ি পর্যন্ত প্রায় আড়াই কি.মি., শহর গাজীর বাড়ী থেকে লক্ষীখালি বাঁধ পর্যন্ত প্রায় ২ কি.মি., মহিষকুড় মান্নানের মোড় থেকে সারদার বাঁধ পর্যন্ত ২ কি.মি., বকচর সানা বাড়ি থেকে মাড়িয়ালা হাইস্কুলগামী প্রায় ১ কি.মি., লাঙ্গলদাড়িয়া থেকে নাসিমাবাদ খালের মাথা পর্যন্ত প্রায় ৩ কি.মি., বিলথানাঘাটা গ্রামে দেড় কি,মি., বিলবুড়াখারআটি গ্রামে প্রায় দেড় কি.মি., ঢালিরচক গ্রামে ১ কি.মি., মহিষকুড় গ্রামে দেড় কি.মি., লাঙ্গলদাড়িয়াইজ্জত আলীর বাড়ি থেকে শহীদ মোল্যার বাড়ি পর্যন্ন ১ কি.মি.,কলিমাখালী গ্রামে ৪ কি.মি., নাসিমাবাদ গ্রামে ২ কি.মি., মাড়িয়ালা গ্রামে আরও দুই রাস্তা মিলে ৪ কি.মি., হাজরাখালী গ্রামে আধা কি.মি. ও গাজীপুর গ্রামে প্রায় ৩ কি.মি. মোট মিলে প্রায় ৩১ কি.মি. মাটির রাস্তায় সংস্কার কাজ করা আশু প্রয়োজন।
তিনি আরও বলেন- আমাদের কোলা-ঘোলা টু আশাশুনি প্রধান সড়কের মধ্যে প্রায় ৩ কি.মি. (পুরানো কার্পেটিং), মাড়িয়ালা বাজার ছাড়িয়ে কোলা-ঘোলা বাসস্ট্যাÐ পর্যন্ত, মহিষকুড় মৎস্যসেট সংলগ্ন ও বালিরমাঠ সংলগ্ন এলাকায় সেভাবেই পড়ে আছে। প্রধান সড়কের অবশিষ্ট কাজ কবে নাগাদ শেষ হবে এ নিয়ে সাধারণ মানুষ নানা প্রশ্ন তুলছেন। অবিলম্বে প্রধান সড়কের অবশিষ্ট কাজ শেষ সম্পন্ন করতে তিনি সড়ক জনপদ বিভাগের উর্ধতন কর্মকর্তাগনের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
আম্ফান উপদ্রæত শ্রীউলা ইউনিয়নের ২২ গ্রামের সড়ক ও যোগাযোগ ব্যবস্থ, পানি উন্নয়ন বোর্ডের নদীর বেড়িবাঁধ টেঁকসইভাবে নির্মান সহ গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নে অবহেলিত গনমানুষের পক্ষে প্রয়োজনীয় বিশেষ ব্যবস্থা নিতে স্থানীয় সাংসদ সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ডা. আ ফ ম রুহুল হক এমপি, জেলা প্রশাসক হুমায়ন কবির, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের সভাপতি এবিএম মোস্তাকিম ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইয়ানুর রহমানের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
