নিজস্ব প্রতিনিধি : আইলা, আম্ফান ও ইয়াস ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে কপোতাক্ষ ও খোলপেটুয়া নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙে আশাশুনির প্রতাপনগরের অন্তত ৫০০ পরিবার গৃহহারা হয়ে প্রায় দুই বছর ধরে ওয়াপদা বেড়িবাঁধের উপর টোঙ বেঁধে বসবাস করছে। এসব পরিবারের মানুষের নিজ ভিটায় ফিরে যাওয়া অনিশ্চিত হয়ে আছে। কারও ভিটা খাল হয়ে গেছে, কারও খাল পার হয়ে সেখানে যেতে হবে। তাই বাধ্য হয়ে গৃহহারা এসব মানুষেরা ওয়াপদা বেড়িবাঁধের উপর টোঙ বেঁধে দীর্ঘ দিন মানবেতর জীবন যাপন করছেন।
কিন্তু নতুন করে তাদের মাথাগোঁজার ঠাঁই টুকু হারাতে হচ্ছে। উপকূলীয় এলাকায় ভয়াবহ ভাঙনের কথা বিবেচনা করে নতুন করে বেড়ি বাঁধ নির্মাণের পরিকল্পনা প্রায় চূড়ান্ত বলে জানা গেছে। নতুন কাজ শুরু হলে বৃহত্তর স্বার্থের জন্যে তাদেরকে ফের ঘরবাড়ি ছাড়তে হবে। তাদের দুর্দশার কথা বিবেচনা করে সচেতন মহল মনে করছেন এটা মড়ার উপর খাড়ার ঘা হতে চলেছে।
প্রতাপনগর ইউনিয়নের অসংখ্য মানুষ, বিশেষ করে চাকলা, সুভদ্রাকাটি, রুইয়ারবিল ও হরিষখালীর বাসিন্দারা দীর্ঘদিন জলোচ্ছ্বাস, ঘূর্ণিঝড় ও বেড়িবাঁধ ভেঙে তাদের আবাসস্থল ও ঘরবাড়ি নদীগর্ভে চলে যাওয়ায় চরম ভোগান্তিতে বসবাস করে আসছেন। ঘরবাড়ি ও বসবাসের জমি নদীতে চলে যেতে থাকায় তারা স্থানান্তর হতে হতে নাকানি চোবানির মধ্যে বসবাস করে আসছেন। স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের লক্ষ্যে ইতিমধ্যে পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।
এলাকার ভুক্তভোগী ও ঘরবাড়ি হারা হয়ে নতুন করে কোন রকমে বসবাসের ঠিকানা খুঁজে পাওয়া মানুষের দাবি, এসব এলাকায় নতুন স্থায়ী বাঁধ যে জায়গা দিয়ে করার পরিকল্পনা চলছে তাতে অন্তত ৫০০ পরিবারের কয়েক হাজার ঘর বাড়ি ভাঙতে হবে। কিন্তু নদীর পাড়ে থাকা বিস্তীর্ণ চরের ওপর দিয়ে বাঁধটি নির্মাণ করলে ঘরবাড়ি যেমন অন্তত থাকবে। তেমনি প্রায় ১ হাজার বিঘা জমি বসবাস যোগ্য হবে। এ ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে তাদের বিনীত আবেদন, এলাকার কল্যাণ তথা মানুষের সুবিধা ও দীর্ঘস্থায়ী চিন্তাভাবনা মাথায় নিয়ে বাঁধ নির্মাণের কাজ করা হোক। যুগযুগ ধরে ক্ষতিগ্রস্ত এবং সাইক্লোন, জলোচ্ছ্বাসে বাঁধ ভেঙে উদ্বাস্তু হয়ে যাওয়া এসব মানুষগুলোর কথা বিবেচনা করে ঘরবাড়ি বাঁচিয়ে নতুনভাবে বেড়িবাঁধ দিতে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন বিপদগ্রস্থ পরিবারগুলো।