মেহেদী হাসান, আটুলিয়া (শ্যামনগর) প্রতিনিধি : শ্যামনগর উপজেলার আটুলিয়া ইউনিয়নের বিড়ালাক্ষী মহিলা দাখিল মাদ্রাসার সামনের ঝুরঝুরিয়া নদীর উপরে নির্মিত ব্রিজটি অত্যন্ত জরাজীর্ণ অবস্থায় দাড়িয়ে আছে। ব্রিজের দুাি পাশে রেলিং না থাকায় এবং ব্রিজের নীচের অংশে ভাঙনসহ পিলারগুলো ফেটে ভিতরের রড বেরিয়ে ব্রিজটি যেন মরণফাঁদে পরিনত হয়েছে। শ্যামনগরের সর্ববৃহত নওয়াবেঁকী বাজারকে কেন্দ্র করে এই এলাকার মানুষসহ নওয়াবেঁকী হাইস্কুল, মাদ্রাসা, গার্লস স্কুল, কলেজের ছাত্র-ছাত্রীরা বছরের পর বছর ধরে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অতিগুরুত্বপূর্ণ ব্রিজটি ব্যবহার করে আসছেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, এই ব্রিজ দিয়ে প্রতিদিন শিশু, প্রতিবন্ধী, অন্ধ, বয়ষ্কদের পারাপার সহ মটরসাইকেল, ভ্যান, ইজিবাইক, পন্য পরিবাহী গাড়ি গুলো ঝুঁকির মধ্যদিয়ে যাওয়া আসা করছে। ইতিমধ্যে অনেকেই ওই ব্রিজে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে আহত হয়েছেন। রেরিং না থাকায় পড়েছেন নদীতে। স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, নওয়াবেঁকী থেকে ঝুরঝুরিয়া নদীর উপর এই ব্রিজটি দিয়ে প্রতিনিয়ত কাশিমাড়ী হয়ে কালিগঞ্জ, আশাশুনি এমনকী সাতক্ষীরাতেও যাওয়ার জন্য বিকল্প রাস্তা হিসেবে ব্যবহার করে আসছে বিভিন্ন এলাকার মানুষ।
তাদের আশঙ্কা নতুন ব্রিজ নির্মানের আগে যদি ব্রিজটি ভেঙে যায় তবে স্কুলের ছাত্র ছাত্রী ও বাজারমুখী জনসাধারণের চলাচলের অনেক ভোগান্তি পোহাতে হবে। স্থানীয় ভ্যান চালক আব্দুল গণি জানান, ‘ব্রিজটি আড়ে ছোট। দুটি ভ্যান পাশাপাশি যাতায়াত করতে পারে না। কোন রকমে একটা ভ্যান ব্রিজে উঠলে দুই পাশে মানুষকে দাড়িয়ে থাকতে হয়। ভ্যান চলে যাওয়ার পর মানুষ চলাচল করতে পারে। তবে ব্রিজের কোন পাশে রেলিং না থাকায় খুব ভয় হয়। কখন জানি নদীতে পড়ে যাই’। স্থানীয় বাসিন্দা ওয়াদুদ আলী জানান, ‘আমাদের ছেলেমেয়েদের স্কুলে যাতায়াতের জন্য এই ব্রিজটাই ভরসা। তারপরও আমাদের ভয়ে ভয়ে থাকতে হয়।
ব্রিজের যে হাল তা দেখে মনে হয় এই বুঝি ভেঙে পড়লো’। তিনি আরো জানান, ‘কয়েকদিন আগে এক বৃদ্ধ লোক একটি মোটরসাইকেলকে সাইড দিতে গিয়ে নদীর মধ্যে পড়ে। আশপাশের লোকজন নদীতে ঝাপিয়ে পড়ে সেই বৃদ্ধ লোকটাকে উদ্ধার করে। রেলিং থাকলে হয়তো এই ভয়টা থাকতো না। তাছাড়া ব্রিজের পিলারে শক্তি নেই। কোন রকম দাড়িয়ে আছে। যখন তখন ব্রিজটি ভেঙে পড়তে পারে’। স্কুল শিক্ষার্থী মৌলুদা খাতুন জানান, ‘স্কুলে যাওয়ার সময় ব্রিজ পার হতে আমাদের খুব ভয় লাগে। এখানে একটা নতুন ব্রিজ হলে আমরা নির্ভয়ে স্কুলে যেতে পারতাম’। জনগুরুত্বপূর্ণ পুরাতন এই ব্রিজটি ভেঙে নতুন ব্রিজ নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন স্থানীয় এলাকাবাসী।