নিজস্ব প্রতিবেদক : কলারোয়া উপজেলার এক মাধ্যমিকের প্রধান শিক্ষকের হাত-পা ভেঙ্গে দেওয়ায় উপজেলার জালালাবাদ ইউপি চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমান নিশানসহ তার সন্ত্রাসী বাহিনীর ১০ জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে। পুলিশ এঘটনায় এক জনকে আটক কওে জেল হাজতে পাঠিয়েছে।
মামলার বিবরণে জানাযায়, কলারোয়া উপজেলার জালালাবাদ ইউপি চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমান নিশানের নেতৃত্বে তার এলাকায় একটি সন্ত্রাসী বাহিনী গড়ে ওঠে। প্রকাশ্যে সন্ত্রাসী কার্যকলাপসহ বিভিন্ন অপকর্ম করে বেড়ায় ওই বাহিনী। তাদের ভয়ে এলাকায় কেউ মুখ খুলতে পারে না।
সম্প্রতি বাটরা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমান নিশান ও প্রধান শিক্ষক জাকির হোসেনের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিলো। এরই জের ধরে গত ৮ মে রাত ৮ টার দিকে প্রধান শিক্ষক জাকির হোসেন (৪৯) পার্শ্ববর্তী তার মাছের পুকুর দেখে বাড়ি ফেরার পথে আরিফের বাড়ির পাশে বাঁশ বাগানের সামনে রাস্তার উপর উঠা মাত্রই পূর্বে থেকে ওৎ পেতে থাকা ওই ইউপি চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে প্রধান শিক্ষক জাকির হোসেনেকে গতিরোধ করে। এরপর বাহিনী প্রধান ইউপি চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমান নিশানের হুকুম পেয়ে বাহিনী প্রধান নিশানসহ সন্ত্রাসীরা জাকির হোসেনকে এলোপাতাড়ীভাবে মারপিট করে হাত-পা ভাঙ্গাসহ রক্তাক্ত জখম করে এবং তার কাছে থাকা কিছু টাকাও নিয়ে নেয়।
পরে তার আত্ম চিৎকারে পাশের লোকজন ছুটে আসলে তারা বীরদর্পে ওই প্রধান শিক্ষককে প্রাণ নাশের হুমকী দিয়ে চলে যায়। বর্তমানে আহত প্রধান শিক্ষক কলারোয়া সরকারি হাসপাতালে ভর্তি আছেন। এঘটনায় প্রধান শিক্ষক জাকির হোসেনের স্ত্রী পাপিয়া সুলতানা বাদী হয়ে গত বুধবার (১১ মে) বাটরা গ্রামের মশিউর রহমানের ছেলে জালালাবাদ ইউপি চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমান নিশান (৩০),মৃত আলাউদ্দীন বিশ্বাসের ছেলে বজলে রহমান (৪৮),মৃত রুহুল আমিন বিশ্বাসের ছেলে মোখলেছুর রহমান মুকুল(৪৮),মৃত ইমাদুল বিশ্বাসের ছেলে সেন্টু বিশ্বাস (৪৭) ও মন্টু বিশ্বাস (৪৫), ফজলে বিশ্বাসের চেলে রাসেল বিশ্বাস (২৬), মন্টুর ছেলে জিকো বিশ্বাস (২২), ইমান আলী গাজির ছেলে ডালিম গাজি (৪০), নূর ইসলাম বিশ্বাসের ছেলে বাবু বিশ্বাস (৩৮), মৃত নূর ইসলাম বিশ্বাসের ছেলে তরিকুল ইসলামের (৪৮) নাম উল্লেখ করে কলারোয়া থানায় গত ১১মে মামলা করেন। যার নং-১৮ তাং-১১/৫/২২ ইং ধারা-১৪৩/৩৪১/৩২৩/৩২৫/৩২৬/৩০৭/৩৭৯/৫০৬/১১৪ পিসি। কলারোয়া থানার ওসি নাছিরউদ্দীন মৃধা মামলার সত্যতা স্বীকার করে জানান,ইতেমধ্যে আসামী মোখলেছুর রহমানকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
এবিষয়ে জানতে চাইলে ইউপি চেয়ারম্যান সাংবাদিকদের বলেন. মারামারির ঘটনায় তার কোন সম্পৃক্ততা নেই। স্থানীয় রাজনৈকিত প্রতিপক্ষরা তাকে হয়রানি কারার জন্য মামলায় আসামী শ্রেণীভূক্ত করেছে।
উল্লেখ্য, ইউপি চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমান নিশান ইউপি নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর ইউনিয়নে একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করার জন্য তিনি সরকারী বরাদ্ধের বিভিন্ন ভাতার কার্ড ইউপি সদস্যদের দিয়ে তালিকা করেন না। তাঁর পোষা বাহিনী দিয়ে কার্ডের তালিকা করান। সাধারণ জনগণের নিকট থেকে ট্যাক্স আদায় করলেও ইউপি সদস্যদের পরিষদ থেকে বেতন দেন না। কয়েকদিন আগে এক ইউপি সদস্য ট্যাক্স আদায়ের বিষয় জানতে চাইলে তাকে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে বের করে দেওয়ার হুমকিও দিয়েছেন ওই চেয়ারম্যান।
সম্প্রতি এক নারী স্বাস্থ্যকর্মীকে লাঞ্ছিত, কলারোয়া উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শেখ মারুফ হোসেন জনি ভোটে তার পক্ষে কাজ না করায় তাকে ইউনিয়ন পরিষদে ডেকে নিয়ে দরজা আটকিয়ে পিটমোড়া করে মারপিটসহ বিভিন্ন অপকর্মের অভিযোগ আছে তার বিরুদ্ধে। ইউপি চেয়ার মাহফুজুর রহমানের এ ধরনের সন্ত্রাসী কার্যকলাপে তার নিজ ইউপি সদস্যগন, স্থানীয় আ’লীগ, ছাত্রলীগসহ বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও সাধারণ মানুষ অতিষ্ঠ।