Site icon suprovatsatkhira.com

অতিরিক্ত তাপমাত্রা, অনাবৃষ্টিও ঘেরে পানি সল্পতার কারণে আশাশুনিতে অধিকাংশ চিংড়ি ঘেরে ভাইরাস মৎস্য চাষীরা বিপাকে

সমীর রায়, আশাশুনি : অতিরিক্ত তাপমাত্রা, অনাবৃষ্টিও ঘেরে পানি সল্পতার কারণে সাতক্ষীরার আশাশুনিতে অধিকাংশ চিংড়ি ঘেরে ভাইরাস দেখা দিয়েছে। নির্ভরযোগ্য কোন প্রতিকারের ব্যবস্থা না থাকায় ঘেরের চিংড়িমাছ মারা গিয়ে সর্বশান্ত হতে বসেছেন চিংড়ি চাষীরা। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী চিংড়ি শিল্প।

উপজেলা মৎস্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, আশাশুনির প্রতাপনগর, শ্রীউলা, আশাশুনি সদর, শোভনালী, বুধহাটা, কুল্যা, দরগাহপুর,কাদাকাটি, আনুলিয়া, খাজরা ও বড়দল ইউনিয়নে এ বছর প্রায় ১৭ হাজার ৮০০ হেক্টর জমিতে চিংড়ি চাষ হয়েছে। চলতি বছর চিংড়ি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে প্রায় ৪ হাজার মেট্রিক টন। যার মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে প্রায় ৫০০ কোটি টাকা।
উপজেলায় বাগদা চিংড়ি ঘেরের সংখ্যা (সরকারি হিসাবে) ১৩ হাজার ২৩৬ টি। বেসরকারি হিসাবে এ সংখ্যা আরও বেশি। বাগদা চিংড়ি পোনার চাহিদা নির্ধারণ করা হয়েছে প্রায় ২ হাজার কোটি কোটি। এর অধিকাংশ পোনা আনা হয় কক্সবাজার ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন হ্যাচারি থেকে।

চিংড়ি ব্যবসায়ী আশাশুনি সদরের মহিতুর রহমান, শ্রীউলার ইলয়াস হোসেন, প্রতাপনগরের আব্দুল খালেক সহ সংশ্লিষ্ট একাধিক ব্যক্তি জানান- অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর চিংড়ি ঘেরে ভাইরাসের আক্রমণ বেশি। ঘেরে রেনু পোনা ছাড়লে শতকারা ৮০ ভাগ চিংড়ি মারা যাচ্ছে। এ বছর ঘেরে ভাইরাস আক্রমণের পিছনে ভাইরাসযুক্ত চিংড়ি পোনার পাশাপাশি খারাপ আবহাওয়া একটি কারণ। সময় মত বৃষ্টি না হওয়ার কারণে ঘেরের লবনাক্ততার পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে। ভাইরাসমুক্ত চিংড়ি পোনা সরবরাহ নিশ্চিত করা না গেলে চিংড়ি শিল্প মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তারা।

আশাশুনি উপজেলার চাষীরা ভাইরাসে চিংড়ি মাছ মারা যাচ্ছে বললেও মৎস্য কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান এ প্রতিবেদককে জানান- উপজেলায় চলতি বছরে চিংড়ি মাছ মরার অন্যতম কারণ মৎস্য ঘেরে প্রয়োজনীয় পানি কম থাকা। অধিক তাপমাত্রা ও অনাবৃষ্টির কারণে হিটস্ট্রোকে চিংড়িমাছ মারা যাচ্ছে। চিংড়ি ভাইরাস মোকাবেলায় কোনো ওষুধ এখনও আবিষ্কার হয়নি। তবে নিয়ম মেনে চিংড়ি চাষ করলে ভাইরাস প্রতিরোধ করা সম্ভব।
তিনি চিংড়ি চাষীদের পরামর্শ দিয়ে বলেন- চিংড়িঘেরে পানি বৃদ্ধি করতে হবে। মানসম্মত চিংড়ি খাদ্য প্রয়োগ করতে হবে। অনেকেই ঘের প্রস্তুতের আগে পোকা-মাকড় মারতে বিষ প্রয়োগ করে থাকেন যা মাছের প্রাকৃতিক পরিবেশ নষ্ট করে। সপ্তাহে বুধবার উপজেলা মৎস্য অফিসে পরামর্শ প্রদান করা হয়। উপজেলা অফিসে বা প্রত্যেক ইউনিয়নে মৎস্য সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের নিয়োগকৃত প্রতিনিধির সাথে সার্বক্ষনিকভাবে যোগাযোগ রেখে চলতে হবে। ভাইরাস আক্রমণের কারণে জেলায় চিংড়ি চাষে প্রায় ৪০০ কোটি টাকার ক্ষতি হতে পারে বলে তিনি আশঙ্কা করেন।

https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/
Exit mobile version