Site icon suprovatsatkhira.com

বাংলাদেশের সুদীপ্তার ভারতের কা আর্ট গ্যালারিতে একক চিত্রকর্ম প্রদর্শনী

 নিজস্ব প্রতিনিধ: চিত্রকর্ম মানুষের মনের কথা বলে। আবেগ, অনুভূতি, মনের ব্যাথাবেদনা, সুখ-দুঃখের ভাষা চিত্রকর্মের মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলার নাম শিল্প।
মানুষের না বলা অনুভূতিগুলোকে ক্যানভাসে ফুটিয়ে তোলেন বাংলাদেশের খুবির ছাত্রী সুদীপ্তা স্বর্ণকার। চিত্রশিল্পকে একটি ধ্যানমূলক প্রক্রিয়া বলে বর্ণনা করেন সুদীপ্তা। তিনি বলেন, এর মাধ্যমে কেউ প্রাকৃতিক বিশ্ব এবং এর ছন্দের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন। রূপ, আলো, রঙ এবং প্রতীক তৈরিতে মনোযোগ দিয়ে অনুভূতি, উপলব্ধির জায়গা থেকে একটি সময়-ভিত্তিক অভিজ্ঞতা রেকর্ড করার চেষ্টা করেন তিনি। সম্প্রতি ভারতের উত্তর প্রদেশের বেনারসের কা আর্ট গ্যালারিতে একক প্রদর্শনীতে নিজের অনুভূতিমালা চিত্রিত করেছেন বাংলাদেশের খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) সাবেক মেধাবী শিক্ষার্থী সুদীপ্তা স্বর্ণকার। তিনি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ড্রয়িং অ্যান্ড পেইন্টিং ডিসিপ্লিনের ২০১৪-১৫ সেশনের ছাত্রী। বর্তমানে ভারতের বেনারস হিন্দু ইউনিভার্সিটিতে অধ্যয়নরত সুদীপ্তা। উত্তর প্রদেশের বেনারসে বিখ্যাত কা আর্ট গ্যালারিতে প্রদর্শনীটি চলে ১৯-২৩ এপ্রিল পর্যন্ত। এ নিয়ে সম্প্রতি হোয়াটসঅ্যাপে তাঁর সঙ্গে এ প্রতিবেদকের কথা হয়।

সুদীপ্তা বলেন, ‘আমার ছবিগুলোতে আমি নিজের অনুভূতিগুলোকে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। প্রদর্শনীতে একেক জন তার অনুভূতির জায়গা থেকেই দেখছে। আমি সবসময় এটাই চেয়েছি। আমার অনুভূতির জায়গা থেকে না দেখে সে তার নিজের অনুভূতি এবং দৃষ্টিকোণের জায়গা থেকে দেখুক।’ সুদীপ্তা বলেন, ‘আমি যত কথা বলি তার চেয়ে বেশি বিস্তৃত কিছু অনুভব করার জন্য আঁকি। মায়ের হাত ধরে ছোটবেলা থেকেই আমার শিল্পী জীবন শুরু হয়। এই ছবি থেকে অন্যরকম আনন্দ পাই, যা পৃথিবীর আর কোথাও পাই না। সৃষ্টির ক্ষেত্রে আমি সবসময়ই একজন স্বাধীন মানুষ। আমার শিল্পে আমি মূলত আমার নিজের অনুভূতির জায়গায় ফোকাস করি।’
এ ধরনের চিত্রকর্ম করার উদ্দেশ্য জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি সবসময় চেষ্টা করি আমার অনুভূতিকে প্রকাশ করতে এবং সেটা চিত্রকর্মের মাধ্যমে। ছবির মাধ্যমে আমি আমার দৃষ্টিকোণ অন্যকে দেখানোর চেষ্টা করি কারণ তার দৃষ্টিকোণ ভিন্ন হতে পারে।’
‘আমি চিত্রশিল্পকে একটি ধ্যানমূলক প্রক্রিয়া হিসেবে ব্যবহার করি যার মাধ্যমে কেউ প্রাকৃতিক বিশ্ব এবং এর ছন্দের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারে। আমি রূপ, আলো, রঙ এবং প্রতীক তৈরিতে মনোযোগ দিয়ে উপলব্ধির জায়গা থেকে একটি সময় ভিত্তিক অভিজ্ঞতা রেকর্ড করার চেষ্টা করেছি।

একক প্রদর্শনীর ব্যাপারে সুদীপ্তা স্বর্ণকার তাঁর অনুভূতি জানিয়ে বলেন, ‘আমি আমার অনুভূতিগুলোকে চিত্রিত করার চেয়ে প্রকাশ করতে চাই। যখন আমি পেইন্টিং করি, আমি কী করছি সে সম্পর্কে আমি সচেতন নই। এটি শেষ করার পরেই যখন আমি কী নিয়ে এসেছি তার সঙ্গে পরিচিত হব। আমি পরিবর্তন করতে ভয় পাই না, কারণ চিত্রকর্মের নিজস্ব একটি জীবন আছে। আমি একটি ছবি শুরু করি এবং শেষ করি। আমি কাজ করার সময় শিল্প নিয়ে ভাবি না। জীবন নিয়ে ভাবার চেষ্টা করি। আমি মনে করি শিল্পীর কাজ সবসময়ই রহস্যকে গভীর করা।’

চিত্রশিল্পী সুদীপ্তা স্বর্ণকার সাতক্ষীরা জেলার কালিগঞ্জ উপজেলার তারালি ইউনিয়নের তেঁতুলিয়া গ্রামের গ্রাম্য ডাক্তার রনজিৎ কুমার স্বর্ণকার ও চাঁদখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সিনিয়র সহকারী শিক্ষক যুথীকা বালা মÐলের দুই ছেলে-মেয়ের বড় এই সুদীপ্তা স্বর্ণকার। প্রাথমিক শিক্ষা জীবন শেষ করেন কালিগঞ্জ উপজেলার চাম্পাফুল ইউনিয়নের চাঁদখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। এরপর মাধ্যমিক শিক্ষা শেষ করেন একই উপজেলার তারালি ইউনিয়নের বিটিজিআর মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে। সাতক্ষীরা জেলার দেবহাটা উপজেলার ঐতিহ্যবাহী সরকারি খানবাহাদুর আহছানউল্লা কলেজ থেকে বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী চিত্রশিল্পী সুদীপ্তা স্বর্ণকার। ছোটবেলা থেকেই আর্ট কলেজে পড়ার অধিক আগ্রহ থাকার কারণে তিনি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ড্রইং এÐ পেইন্টিং ডিসিপ্লিনে ভর্তি হন।
সুদীপ্তা স্বর্ণকার ২০১৯ সালে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেন। ২০২০ সালে ভারত সরকারের আইসিসিআর স্কলারশিপ পেয়ে বেনারস হিন্দু ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হন সুদীপ্তা।

https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/
Exit mobile version