মাজহারুল ইসলাম : করোনা মহামারির কারণে বিগত দুই বছর ঈদের বাজার না জমজমাট না হলেও এবার জমে উঠেছে সাতক্ষীরার ঈদের বাজার। জেলা শহরের সুপার সপ, বিপণী বিতান ও মার্কেটগুলোতে পুরোদমে চলছে ঈদের কেনাকাটা। তৈরি পোশাক, সিট কাপড়, টুপি, আতর, জুতা ও কসমেটিকসের দোকানে ক্রেতাদের ভিড় ক্রমশই বৃদ্ধি পাচ্ছে।
আসন্ন ঈদকে সামনে রেখে সাতক্ষীরা শহরের চায়না বাংলা শপিং কমপ্লেক্স, আমিনিয়া মার্কেট, সুলতানপুর বড় বাজার সড়কের মার্কেট গুলোতে প্রতিদিন ক্রেতাদের উপচেপড়া ভীড় লক্ষ করা যাচ্ছে।
করোনা মহামারির প্রভাবে বিগত দুই বছর নানা বিধিনিষেধের কারণে ঈদের বাজারে যথেষ্ট প্রভাব পড়েছিল। এবার করোনার প্রকোপ না থাকায় নারী পুরুষ শিশুসহ পরিবারের সদস্যদের নিয়ে মার্কেটে এসে দোকান থেকে আরেক দোকান ঘুরে পছন্দের পোশাক ও পণ্য সামগ্রী কেনাকাটা করতে পেরে খুশি ক্রেতারা। দুই বছর পর ঈদের জমজমাট বাজার পরিস্থিতিতে ব্যবসায়ীরাও স্বস্তি প্রকাশ করছেন।
আর মাত্র কয়েকদিন পরেই পবিত্র ঈদ উল-ফিতর। ছোট ছোট সোনামণিরা ঈদের নতুন পোশাক কিনতে ব্যস্ত, সেইসাথে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে সকল বয়সের ক্রেতারা।
সরজমিনে দেখা যায়, শহরের মার্কেটগুলোতে ক্রেতাদের আনাগোনা চোখে পড়ার মতো। ঈদ উপলক্ষে পিছিয়ে নেই জেলার উপজেলা শহরের মার্কেটগুলো। নতুন নতুন ডিজাইনের পোশাক সাজানো রয়েছে দোকানগুলোতে। ক্রেতারা ঘুরে ঘুরে দেখছেন, দরদাম ও কেনাকাটা করছেন। নতুন পোশাক, প্রসাধনী এমনকি গয়নার দোকানেও ভিড় বেড়েছে ক্রেতাদের। তবে ক্রেতাদের মধ্যে নারী ও তরুণীদের সংখ্যা অনেক বেশি। অনেকেই আগেভাগেই সেরে নিচ্ছেন কেনাকাটা।
কথা হয় জেলা শহরের অভিজাত শপিং সেন্টার চায়না বাংলা শপিং সেন্টারে স্বামী সন্তানসহ কেনাকাটা করতে আসা নাহিদা সুলতানার সাথে। তিনি বলেন, করোনা ভীতি কাটিয়ে সবাইকে নিয়ে ঈদের কেনাকাটা করতে এসেছি। এখানে পোশাক ও কসমেটিকসহ সব রকমের মানসম্মত পণ্য একদামে পাওয়া যায় বলে প্রতিবারই ঈদের অধিকাংশ কেনাকাটা এখান থেকেই করা হয়।
শহরের সুলতান বড় বাজার সড়কে আপন ফ্যাশান কেনাকাটা করতে আসা ঘোনা এলাকার রমিজ রাজা জানান, পরিবারের জন্য ঈদের কেনাকাটা করতে এসেছি। নিজেরটা পরে কিনবো। তবে এবার সবকিছুর দাম একটু বেশি মনে হচ্ছে।
দোকান মালিক নাসিরুল ইসলাম বলেন, ‘এবারের ঈদে থ্রি-পিসের চাহিদা বেশি। এখানে ৪৫০ থেকে ৫ হাজার টাকায় থ্রি পিস, ৩৫০০ থেকে ৭ হাজার টাকায় গাউন জামা, ৪২০-৮ হাজার টাকার মধ্যে শাড়ি, ৫০০ থেকে ৩ হাজার টাকায় পাঞ্জাবী, ১৫০০ থেকে ৫ হাজার টাকায় লেহেঙ্গাসহ বিভিন্ন মূল্যের শার্ট প্যান্ট ও সব বয়সী বাচ্চাদের পোশাকের অনেক কালেকশন রয়েছে। এবছর বিক্রি ভালো হওয়ায় করোনার ধাক্কা কিছুটা কাটিয়ে উঠতে পারবো।
শারমিন ক্লথ স্টোরের স্বত্বাধিকারী টোটন জানান, করোনার জন্য গত দুই বছর ভালভাবে দোকান খুলে ব্যবসা করতে পারিনি। এবার ঈদ উপলক্ষে নতুন করে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছি। রোজার মধ্যে বৈশাখ মাস পড়ায় এবার বৈশাখের বেচাবিক্রি তেমন হয়নি। তবে এখন ঈদের কেনাকাটা জমে উঠেছে।
শহরের আমিনিয়া মার্কেটের জেটিএস ফ্যাশানের স্বত্ত¡াধিকারী জাহিদ হাসান জানান, গত দুই বছর তাদের ব্যবসা খারাপ গেছে। তাই এবার ভালো প্রস্তুতি নিয়েছেন। ক্রেতা উপস্থিতি নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ঈদের কেনাকাটা এবার অনেকেই আগেভাগেই সারছেন। দিন যত গড়াচ্ছে ততই বিক্রি বাড়ছে।