সমীর রায়, আশাশুনি : আশাশুনির ৩৪ নং কাদাকাটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কামরুজ্জামানের স্বেচ্ছাচারিতায় নতুন ভবন নির্মাণে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। সরকারি বিধি নিষেধের তোয়াক্কা না করে প্রধান শিক্ষকের আশকারায় শ্রমিকরা অনিয়ম ও দুর্নীতির আশ্রয় নিতে সাহস পাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয় লোকজন।
জানাগেছে, চতুর্থ প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচি (পিডিপি ৪) এর আওতায় ৯৯ লক্ষ ৮৯ হাজার ৬১০ টাকা ব্যয় বরাদ্দে কাদাকাটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নতুন ভবন নির্মাণ কাজ চলছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স মোল্যা ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কসপ শ্যামনগর কাজ শুরু করে ২৪ ডিসেম্বর ২০২০। কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২১। স্কুলের প্রধান শিক্ষক কামরুজ্জামান শুরু থেকে ঠিকাদার ও তার লোকজনের সাথে সখ্যতা গড়ে তুলে কাজে লুকোচুরির সুযোগ করে দিয়ে আসছেন বলে এলাকার একাধিক ব্যক্তি অভিযোগ জানিয়ে আসছিলেন।
অভিযোগ পেয়ে বুধবার (১৩ এপ্রিল) সাংবাদিকরা ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখেন লিংটন ঢালাই কাজ চলছিল। কাজ দেখার জন্য দায়িত্ব প্রাপ্ত কেউই নেই সেখানে। উপ সহকারী প্রকৌশলীকে জানানো হয়নি কাজের কথা, স্কুলের সভাপতি জানেন না। কমিটির সদস্য, শিক্ষক, ইঞ্জিনিয়ার অফিসের প্রতিনিধি কেউ নেই। ঠিকাদার নেই, ম্যানেজার নেই অথচ মিস্ত্রী কেবলমাত্র যোগাড়েদের নিয়েই দিব্যি ঢালাই কাজ করে চলেছেন। দেখাগেল চিপ খোয়া নেই কেবল বড় খোয়ার সাথে সিমেন্ট মাখিয়ে ঢালাই দেওয়া হচ্ছে। মেশিনে নয় হাতে মিকচার করে চলছে ঢালাই কাজ।
এলাকার সচেতন অনেকের অভিযোগ সরকারের লক্ষ লক্ষ টাকার একটি বিল্ডিং এর কাজ চলছে। এ বিল্ডিং নির্দিষ্ট উপযুক্ত সময় পর্যন্ত টিকে না থাকলে আমাদের সকলের ক্ষতি। কিন্তু যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুপস্থিতির মধ্যেও কাজ করা হয়ে থাকে। এর ভবিষ্যৎ কতটুকু সুদুর প্রসারী চিন্তার বিষয়। তারা নিয়মিত যথাযথ তদারকির মাধ্যমে দাবি জানিয়েছেন।
স্থানীয় সচেতন ব্যক্তি তুহিন উল্লাহ তুহিন জানান, বিল্ডিং এর কাজ চলছে কেউ দেখার নেই। মিস্ত্রীরা নিজেরাই কাজ করে থাকে। ফলে কাজের বিরুদ্ধে অনিয়ম দুর্নীতি থাকার স্বাভাবিক।
স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি প্রভাষক আমিনুল ইসলাম জানান, তিনি ছাদ ঢালাইয়ের সময় ছিলেন। এখন ঢাকায় গেছেন, লিংটন ঢালাইয়ের কথা তাকে জানানো হয়নি। জানতে পেরে যোগাযোগ করে জেনেছেন যে, চিপ খোয়া না দিয়ে কেবল বড় খোয়ার সাথে সিমেন্ট মিশিয়ে ঢালাই দেওয়া হচ্ছে। সেখানে সরকারি ও বেসরকারি কেউই দেখার ছিলনা।
মিস্ত্রীর কাছে জানতে চাইলে সে জানিয়েছে প্রধান শিক্ষক কামরুজ্জামান ও পিটিএ সভাপতি বাবু অনুমতি দিয়েছে। অথচ বাবু বলছে সে করতে অনুমতি দেয়নি।
এলজিইইডির উপ সহকারী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম জানান, লিনটন ঢালাই কাজ চলছে আমাদেরকে জানানো হয়নি। জানতে পেরে কাজ বন্ধ করে দিয়েছি। এব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।