ফারুক হোসাইন রাজ, কলারোয়া: ‘মুজিববর্ষে বাংলাদেশের একজন মানুষ ভূমিহীন বা গৃহহীন থাকবে না’ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এ নির্দেশ বাস্তবায়নে সাতক্ষীরার কলারোয়ায় ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার তৃতীয় ধাপে মুজিব বর্ষের বিশেষ উপহারের বরাদ্দকৃত ১০০টি পরিবারের মধ্যে থেকে ২০টি পরিবারকে আনুষ্ঠানিক ভাবে জমি ও গৃহ হস্তান্তর করা হয়েছে।
মঙ্গলবার ২৬ এপ্রিল সকালে সারাদেশে একযোগে প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ভূমিহীন ও গৃহহীন ৩২ হাজার ৯০৪টি পরিবারকে দুই শতক জমিসহ ঘরের দলিল হস্তান্তর করেন। তারই ধারাবাহিকতায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের পরে কলারোয়া উপজেলা হলরুমে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও জুবায়ের হোসেন চৌধুরীর নেতৃত্বে বিভিন্ন ইউনিয়নের ভূমিহীন ২০ টি পরিবারের নিকট প্রধান মন্ত্রীর দেওয়া স্বপ্নের ঠিকানা নির্মাণ সম্পন্ন ঘর ও জমির দলিল হস্তান্তর করেন সাতক্ষীরা অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট রেজা রশিদ।
এ সময় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কলারোয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম লাল্টু, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফিরোজ আহমেদ স্বপন, অবসরপ্রাপ্ত সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসর আবু নছর, অধ্যক্ষ প্রফেসর আবু তালেব, প্রফেসর আব্দুল মজিদ, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলিমুর রহমান, বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফা, ইউপি চেয়ারম্যান সম মোরশেদ আলী ভিপি, সোনাবাড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান বেনজির হোসেন হেলাল, ইউপি চেয়ারম্যান বিশাখা তপন সাহা, যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা এছমত আরা বেগম, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার মাহবুবুর রহমান, কলারোয়া সরকারি জিকেএমকে পাইলট হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রবসহ ভূমিহীন পরিবারের সুবিধাভোগী প্রমূখ।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও জুবায়ের হোসেন চৌধুরী বলেন, কলারোয়ায় পবিত্র ঈদুল ফিতরের উৎসব আমেজ সাধারণ মানুষের চেয়ে এবার ভিন্ন হচ্ছে এতদিন গৃহহীন ভূমিহীন থাকা পরিবার যারা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহারের ঘর পেয়েছেন। স্বপ্নের ঠিকানায় ভিন্ন রকম এক ঈদ আনন্দে মাতবেন উপজেলার ২০টি পরিবারের প্রায় শতাধিক মানুষ। তৃতীয় ধাপের বাকি ৮০টি ঘর পর্যায় ক্রমে দেওয়া হবে। আজ বিশাল সংখ্যক এই মানুষগুলো পাচ্ছেন মাথার উপর ছাদ, মাথা গোজার ঠাই। আজ থেকে তারাও মালিক হবেন ছোট্ট একটু মাটির। পরিবর্তনের সূচনা হবে এই মানুষগুলোর।
মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ হতে এর আগেও প্রথম ধাপে ১০০টি ও দ্বিতীয় ধাপে ২০টি, তৃতীয় ধাপে ২০টি গৃহহীন ও ভূমিহীন পরিবারকে বাড়ি দেওয়া হয়েছে। এবারের ঘর হস্তান্তর শেষে মোট ১৪০টি গৃহহীন পরিবার সরকারের উপহারের ঘরের মালিক হবেন। পর্যায়ক্রমে গৃহহীন পরিবারকে প্রধানমন্ত্রীর এই প্রকল্পের ঘর উপহার দেওয়া হবে।
এসব ঘর নির্মাণ করা হচ্ছে সরকারি খাস জায়গা কিংবা দখল হওয়া জায়গা দখলমুক্ত করে। ইতোমধ্যে কলারোয়া উপজেলার ২৮০ শতক পরিমাণ বেদখল হওয়া সরকারি খাস জমি উদ্ধার করা হয়েছে যার বাজার মূল্য প্রায় তিন কোটি টাকারও বেশি। এছাড়াও ৩৭ টি গৃহ নির্মাণে জন্য জমি ক্রয় করা হয়েছে।
নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে আরও জানা গেছে, উপজেলাতে প্রথম ধাপে ঘর নির্মাণের বরাদ্দ ছিল এক লাখ ৭১ হাজার টাকা। দ্বিতীয় ধাপে এর পরিমাণ ছিল এক লাখ ৯১ হাজার। আর প্রথম ধাপের চেয়ে ৮৮ হাজার ৫০০ এবং দ্বিতীয় ধাপের চেয়ে ৬৮ হাজার ৫০০ টাকা বেড়ে তৃতীয় ধাপে বাড়িপ্রতি বরাদ্দ ২ লাখ ৫৯ হাজার ৫০০ টাকা।
এছাড়াও সংশ্লিষ্ট দপ্তর সূত্রে জানা যায়, সাতক্ষীরা জেলায় তৃতীয় পর্যায়ে মোট ৮০৯টি বরাদ্দকৃত ঘরের মধ্যে উদ্বোধনের জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে ২৪০টি। এর মধ্যে কালিগঞ্জ উপজেলায় ১১৫ টির মধ্যে ২৫টি, কলারোয়ায় ১০০টির মধ্যে ২০টি, দেবহাটায় ৫৮ টির মধ্যে ৫ টি, আশাশুনি উপজেলায় ১৪৭টির মধ্যে ৪৭টি ও সাতক্ষীরা সদর উপজেলায় ৮৫টির মধ্যে ৪৩টি গৃহ আজ আনুষ্ঠানিক ভাবে হস্তান্তর করা হয়েছে। বাকি গৃহ নির্মাণের কাজ চলমান রয়েছে পর্যায়ক্রমে হস্তান্তর করা হবে।