এপ্রিল ৭, ২০২২
মুন্সিগঞ্জে ১০ টাকা মূল্যের ৩০ কেজি রেশনের চাউল ৪০০ টাকায় বিক্রি
সুন্দরবন অঞ্চল প্রতিনিধি : হতদরিদ্রদের জন্য ১০ টাকা কেজি দরে ৩শ’ টাকায় কার্ড প্রতি ৩০ কেজি চাউল দিচ্ছে সরকার। কিন্তু শ্যামনগরের মুন্সিগঞ্জে রেশন কার্ডের সেই ৩০ কেজি চাউল ৪শ’ টাকায় বিক্রির অভিযোগ উঠেছে ডিলারের বিরুদ্ধে। সরজমিনে জানা গেছে, মুন্সীগঞ্জের হরিনগরে চাউলের ডিলার সিরাজুল ইসলাম ও আনন্দ কর্মকার প্রতিটি গ্রাহকের কাছ থেকে ৩শ’ টাকার বদলে ৪শ’ টাকা নিয়ে ৩০ কেজি করে চাউল দিচ্ছে। চাউল নিতে আসা রেশনকার্ডধারীরা বলেছেন, ৩শ’ টাকার চাউল ৪শ’ টাকায় নিতে হবে এটা জানা ছিল না। তারা সবাই সরকারি ঘোষণার ৩০ কেজি চাউলের মূল্য হিসেবে ৩শ’ টাকা নিয়ে লাইনে দাঁড়িয়েছে। অথচ ডিলারের কাছে গিয়ে জানতে পারে ৩০ কেজি চাউল নিতে ডিলারকে ৪শ’ টাকা পরিশোধ করতে হচ্ছে। অতিরিক্ত টাকা লাগবে শুনে সরকারকে গালমন্দ করতে করতে অনেকেই চাউল না নিয়ে খালি হাতে বাড়ি ফিরেছেন। রেশন কার্ডধারীরা আরো জানান, ট্যাক্সের কথা বলে প্রতি কেজি চাউলে প্রায় সাড়ে ৩ টাকা বেশি নিচ্ছে ডিলার সিরাজুল ইসলাম ও আনন্দ কর্মকার। তবে ট্যাক্সের টাকা বাবদ ৩০ কেজি চাউলে নেয়া অতিরিক্ত ১শ’ টাকার কোন রসিদ দিচ্ছেন না ডিলার। সরকারি রেশন কার্ডের চাউল নিতে আসা মুন্সীগঞ্জ ইউনিয়নের মথুরাপুর গ্রামের তাসলিমা খাতুন জানান, ‘চাউল নেওয়ার জন্য বাড়ি থেকে ৩শ’ টাকা নিয়ে আসলাম কিন্তু এসে দেখি ৪শ’ টাকা না দিলে চাউল দিচ্ছে না। ডিলার বলেছে চৌকিদারি ট্যাক্স বাবদ ১শ’ টাকা করে দিয়ে তার পর চাউল নিতে হবে’। তিনি আরো জানান, ‘চৌকিদার আমার বাড়ি থেকে ট্যাক্স নিয়ে এসেছে এখানে আবার ট্যাক্সের টাকা চাচ্ছে, বলছে ১শ’ টাকা না দিলে চাউল দেবে না’। আমেনা খাতুন জানান, ‘আমি খুব গরিব মানুষ। ৩শ’ টাকা নিয়ে চাউল নিতে এসে দেখি ৪শ’ টাকা না দিলে চাউল দেবে না। তাই ফিরে যাচ্ছি’। নুর ইসলাম আক্ষেপ করে জানান, ‘দেশে যে কি হচ্ছে? সরকার দিল ৩শ’ টাকার চাউল আর ডিলার চাচ্ছেন ৪শ’ টাকা। এসব কি সরকার দেখে না? নাকি মুখে বলে একরকম আর কাজে আরেক রকম?’ তিনি আরো জানান, ‘এর আগে চাউল নিতে চৌকিদারি ট্যাক্স দিতে হয়নি। হঠাৎ আজ চৌকিদারি ট্যাক্স দিয়ে চাউল নিতে হচ্ছে’। শরিফুল ও সুশিল মন্ডল জানান, ‘৩শ’ টাকা নিয়ে চাউল নিতে এসে ৪শ’ টাকা না দিলে চাউল দেওয়া হবে না। তাই বাজার থেকে টাকা ধার করে নিয়ে চাউল নিতে হয়েছে’। তবে অতিরিক্ত টাকা নেওয়া কথা স্বীকার করে ডিলার আনন্দ কর্মকার বলেন, ‘ইউনিয়ন পরিষদের নির্দেশে ১শ’ টাকা চৌকিদারি ট্যাক্স ও ৩শ’ টাকায় চাউল দিচ্ছি’। চৌকিদারি ট্যাক্সের কোন রিসিভ দেওয়া হচ্ছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘পরে কার্ডের সাথে রিসিভ দেওয়া হবে’। এ ব্যাপারে মুন্সীগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান অসীম মৃধা বলেন, ‘এক সাথে ৪হাজার মানুষের চাউল দেওয়া হচ্ছে। সেই সাথে ট্যাক্সের টাকাও নিয়ে নিচ্ছে। কার্ডের সাথে রিসিভ দেওয়া হবে’। দায়িত্বে থাকা ট্যাগ অফিসার মিনা হাবিবুর রহমান জানান, ‘হতদরিদ্রের চাউল দেওয়ার সাথে ট্যাক্স নেওয়ার কোন সম্পর্ক নেই। ৩০ কেজি চাউল ৩শ’ টাকা নেবে। লিখিত অভিযোগ করলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে’। এ ঘটনায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আক্তার হোসেন বলেন, ‘চাউলের দাম বেশি নেওয়া হলে দ্রæত ব্যবস্থা নেওয়া হবে’। 8,610,473 total views, 2,130 views today |
|
|
|