নিজস্ব প্রতিনিধি : শ্যামনগরের বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের কলবাড়ী গ্রামে এক এসএসসি পরীক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। বর্তমানে মেয়েটি শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন আছে। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন আছে বলে জানিয়েছে শ্যামনগর থানা পুলিশ। মঙ্গলবার (১২ এপ্রিল) বেলা ১০ টায় ধর্ষণের শিকার মেয়েটির পরিবার সূত্রে জানা গেছে, গত রবিবার (১০ এপ্রিল) রাত ৮টার দিকে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের চৈত্র সংক্রান্তির চড়ক পুজার বালাকি শুনে ফেরার পথে বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়ন পরিষদের কাছাকাছি রাধাকৃষ্ণ মন্দিরের পাশে নওয়াঁবেকী রপ্তান বাড়ীর দুটি ছেলের সাথে দাঁড়িয়ে কথা বলছিলেন ধর্ষণের শিকার মেয়েটি এবং তার কাকাতো বোন।
সে সময় কলবাড়ী গ্রামের স্বপন বাইন এর একমাত্র পুত্র রাকেশ বাইন (২৩) মেয়ে দুটিকে ছেলেদের সাথে কথা বলতে দেখে নওয়াঁবেকী রপ্তান বাড়ীর ওই দুই যুবককে হুমকি-ধামকি দিয়ে তাড়িয়ে দিয়ে মেয়ে দুটিকে আটকে রেখে বুড়িগোয়ালিনীর সাবেক চেয়ারম্যান ভবতোষ কুমার মন্ডল এর ভাগ্নে আড়পাঙ্গাশিয়া গ্রামের নিমাই চৌকিদারের ছেলে রাহুল চৌকিদার (২২) ও কলবাড়ী গ্রামের উদয় হালদারের ছেলে বাদল হালদার (২১) কে মোবাইল ফোনে ডাকে। পরবর্তীতে বুড়িগোয়ালিনীর সাবেক চেয়ারম্যান ভবতোষ কুমার মন্ডল এর ভাগ্নে আড়পাঙ্গাশিয়া গ্রামের নিমাই চৌকিদারের ছেলে রাহুল চৌকিদার আসলে তারা মেয়ে দুটিকে জোরজবরদস্তি করে শ্লীলতাহানীর চেষ্টা করে। একপর্যায়ে নিজেকে বাঁচাতে ধর্ষণের শিকার ওই এসএসসি পরীক্ষার্থীর কাকাতো বোন ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।
মেয়েটির পরিবার সূত্রে আরো জানা গেছে, ধর্মীয় অনুষ্ঠানে যাওয়ায় রাকেশের মা বাবা বাড়িতে না থাকার সুযোগে রাকেশ বাইন ও রাহুল চৌকিদার মেয়েটিকে জোরপূর্বক রাকেশের বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে গরের ভিতর নিয়ে রাকেশ এবং তার প্রধান সহযোগী রাহুল দুজনের মোবাইল ফোনে জোরপূর্বক মেয়েটির আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও ধারন করে রাকেশের সাথে শারিরীক সম্পর্কে না জড়ালে ছবি ও ভিডিও ফেক আইডি দিয়ে ফেসবুকে পোস্ট করবে বলে হুমকি দেয়। পরবর্তীতে আনুমানিক রাত ১০ টার দিকে রাহুলকে বাইরে রেখে রাকেশ মেয়েটিকে রুমের ভিতরে রেখে সাউন্ড বক্সের ভলিউম বাড়িয়ে দিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। এতক্ষণে রাকেশের মা-বাবা চড়ক পুজার বালাকি শেষ করে বাড়ীতে আসবে ভেবে মেয়েটির মুখ চেপে আনুমানিক রাত সাড়ে দশটার দিকে বাড়ির বাইরে ওয়াপদা বেড়িবাঁধের কাছে রবীন্দ্র মিস্ত্রির বাগানে নিয়ে শ^াসরোধ করে হত্যার হুমকি দিয়ে পর্যায়ক্রমে ধর্ষণ করে বলে জানায় মেয়েটির পরিবার।
রাত ১২টার দিকে মেয়েটি অসুস্থ শরীর নিয়ে বাড়িতে ফিরে যায়। পরের দিন সোমবার মেয়েটির প্রাইভেট পড়া শেষ করে কলবাড়ী নেকজানিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পড়তে যাওয়ার সময় তার ঘণিষ্ঠ বান্ধবী মেয়েটির গতিবিধি দেখে তাকে তার মন খারাপ বা শারিরীক অবস্থা সম্পর্কে জানতে চান। ধর্ষণের শিকার মেয়েটি তখন কেঁদে কেঁদে সব ঘটনা খুলে বলে এবং কাউকে জানাতে নিষেধ করে। কিন্তু তার বান্ধবী সোমবার বিকালে মেয়েটির বাসায় ফিরে ওইদিন রাতে মেয়েটির মায়ের সাথে সব খুলে বলে। এরপর ধর্ষণের শিকার মেয়েটির মা তার মেয়ের সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনা নিয়ে জড়িত রাকেশ ও রাহুল সহ যারা এই ঘটনায় জড়িত তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়ে এলাকাবাসী, সাংবাদিকবৃন্দ ও জনপ্রতিনিধিদের বিষয়টি অবহিত করেন। পরবর্তীতে সকলের পরামর্শে ধর্ষণের শিকার মেয়েটির পরিবার পুলিশের স্মরণাপন্ন হয়েছেন বলে জানা গেছে। এ বিষয়ে শ্যামনগর থানার অফিসার ইনচার্জ কাজী ওয়াহিদ মোর্শেদ বলেন, ‘বিষয়টি আইনি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে’।