কলারোয়া সংবাদদাতা : আশাশুনির প্রতারক কলারোয়া গ্রেপ্তার হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত কথিত ওই সাংবাদিকের নাম জুলফিকার আলী। চাঁদাবাজির অভিযোগে থানায় মামলা হওয়ায় পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করেছে। এ দিকে কথিত ওই সাংবাদিক গ্রেফতার হওয়ার খবরে ইফতারের পর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় মিষ্টি বিতরণের খবর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া উপজেলার সচেতন মহল থানা পুলিশকে ধন্যবাদ জানিয়েছে।
কলারোয়া থানার মামলা সূত্রে জানাগেছে, চলতি অর্থ বছরে গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ২,১৭,৪০০/= একটি প্রকল্প চলমান আছে। ওই প্রকল্পের সভাপতি তিন বারের নির্বাচিত জয়নগর ইউপি মেম্বর উপজেলার কৃপারামপুর গ্রামের বজলুর রহমান খাঁনের ছেলে রওশন আলি খাঁন। গত ১০ এপ্রিল সকালের দিকে উপজেলার তুলশিডাঙ্গা গ্রামের মৃত শেখ আমজাদ হোসেনের ছেলে ঘর জামাই কথিত সাংবাদিক জুলফিকার আলি মেম্বর রওশন আলি খাঁনের বাড়িতে গিয়ে তাকে বলে রাস্তায়তো মাটি দেওয়া হচ্ছে না। তাই তাকে এক লাখ টাকা চাঁদা দিতে হবে। এর দু’দিন পর ওই সাংবাদিক বিকালে আবারো মেম্বর রওশন আলি খাঁনের বাড়িতে গিয়ে লাখ টাকা চাঁদার জন্য চাপ সৃষ্টি করে। একপর্যায় নিরুপায় হয়ে ওই মেম্বর দশ হাজার টাকা দিতে বাধ্য হয় কথিত সাংবাদিক জুলফিকার আলিকে। গত মঙ্গলবার ব্যক্তিগত কাজে মেম্বর রওশন আলি কলারোয়ায় যায়।
বেলা ৩টার দিকে কলারোয়া উপজেলা পরিষদের দক্ষিণ দিকে আমগাছ তলায় বসা থাকা কালিন ওই কথিত সাংবাদিকসহ অজ্ঞাত আরো দুইজন ব্যক্তি দুইটি মোটর সাইকেলযোগে সেখানে গিয়ে তার পাশে বসে। একপর্যায় চাঁজাবাজ জুলফিকার আলি মেম্বর রওশন আলির কাছে চাঁদার বাকি নব্বই হাজার টাকা দাবী করে। তখন ওই মেম্বর আর চাঁদার টাকা দিতে পারবে না জানালে জুলফিকার আলিসহ অজ্ঞাত ব্যক্তিরা তাকে বিভিন্ন প্রকার হুমকি ধামকি দিয়ে দ্রæত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। এঘটনায় মেম্বর রওশন আলি খাঁন বাদী হয়ে কলারোয়া থানায় ৫১নং মামলা করেন।
কলারোয়া থানার পুলিশ ওই মামলায় চাঁদাবাজ কথিত সাংবাদিক জুলফিকার আলিকে বৃহস্পতিবার রাতে গ্রেপ্তার করে শুক্রবার জেলহাজতে প্রেরণ করেছে। উল্লেখ্য ইতেপূর্বে ওই কথিত সাংবাদিক জুলফিকার আলির বিরুদ্ধে ডাঃ সালমা খাতুন বাদী হয়ে কলারোয়া থানায় ১০৫/১৭ নং একটি ছিনতাই মামলা করেন। তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, বিগত কয়েক বছর আগে সাতক্ষীরা আশাশুনি থেকে চুরির মামলা মাথায় নিয়ে পালিয়ে কলারোয়ায় চলে আসে জুলফিকার। প্রথমে সে রাজ মিস্ত্রির হেলপার হিসেবে কাজ শুরু করলেও পরবর্তীতে নিজেকে সাংবাদিক হিসাবে আত্মপ্রকাশ করে। পরে সে একের এক টাউটারি করে বদলে ফেলে নিজের জীবন যাপন। নিজের জমি জমা ও ব্যবসা না থাকলেও ফেসবুক আর মোবাইল সাংবাদিক হয়ে খাস জমি দখল করে বাড়ি, দামি টিভি ফ্রিজ ও মোটর সাইকেলের মালিক হয়ে দাপিয়ে বেড়ায় উপজেলা জুড়ে।
অন্যদিকে প্রতারক জুলফিকারের পক্ষ নিয়ে কিছু ব্যক্তি থানা পুলিশ ও চাঁদাবাজি মামলার বাদিকে চাপসৃষ্টিসহ হুমকি প্রদান করে আসছে বলে বাদির অভিযোগ।