কলারোয়া প্রতিনিধি: গত ৫ মাসে সাতক্ষীরা কলারোয়ার সীমান্ত অঞ্চল চন্দনপুর থেকে জনপ্রতিনিধি ও এলাকাবাসীর সহযোগিতায় ১৫০০ বোতল ভারতীয় ফেনসিডিল মাদক দ্রব্য জব্দ করেছে থানা পুলিশ। সীমান্ত অঞ্চলের যুব সমাজকে মাদক আসক্তের ভয়াবহতা থেকে রুখতে হবে। মাদক ব্যবসা, নারীপাচার নির্মূল করতে পুলিশ প্রশাসনকে তথ্য দিয়ে এলাকায় সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে তবেই শান্তিপূর্ণ শিক্ষিত ও সভ্য সমাজ গড়া সম্ভব হবে। পুলিশিং কমিউনিটি সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এমনটি বলেছেন সাতক্ষীরা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর সার্কেল মীর আসাদুজ্জামান।
বুধবার ( ৯ মার্চ ) বিকালে উপজেলার ৭নং চন্দনপুর ইউনিয়নের চান্দুড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে কমিউনিটি পুলিশিং সমাবেশে অনুষ্ঠানে ইউপি চেয়ারম্যান ডালিম হোসেনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সাতক্ষীরা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর সার্কেল মীর আসাদুজ্জামান।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, মাদক এমন একটা ভয়াবাহ নেশা যেটায় আসক্ত হলে একটা দেশকে ধ্বংস করা সম্ভব এ জন্য সমাজোর প্রতিটি মানুষের দায়িত্ব যারা মাদকের সাথে সম্পৃক্ত হয় তাদের তথ্য পুলিশকে দিয়ে সমাজকে আলোকিত ও সৃষ্টিশীল সভ্য মানুষে গড়ে তোলা। চন্দনপুরের সীমান্ত পেরিয়ে এ দেশে ঢুকে কোন ব্যাক্তি মাদকের আস্থানা তৈরি অথবা আমদানি বা রপ্তানি করতে না পারে সে জন্য সীমান্তে দুর্নীতিমুক্তভাবে বিজিবির টহল জোরদার ও এলাবাসীকে সচেতন হওয়ার আহ্বান করেন।
তিনি আরও বলেন, যদি আপনার সন্তান, স্বামী অথবা স্ত্রী প্রতিবেশী মাদকাসক্ত, মারামারি কাটাকাটি, জমিদখল, নারী নির্যাতন বাল্যবিবাহ করা থেকে বিরত থাকে তাহলে সমাজে মানুষে মানুষে ভ্রাতৃপ্রেম জাগ্রত হবে একজন প্রতিবেশি অন্য পরিবারের প্রতি সহমর্মিতার হাত বাড়িয়ে দিবে। যদি এমনটা সমাজে হয় তাহলে একদিন গোটা রাষ্ট্রে সুশীল ও সভ্য মানুষে ভরে যাবে তখন সারা বিশ্বের বুকে ৩০ লক্ষ শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জন করা সোনার বাংলাদেশ সভ্য রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিতি লাভ করবে।
থানা অফিসার ইনচার্জ ওসি নাসির উদ্দীন মৃধা বলেন, সংগ্রামের মার্চ মাসে বীর মুক্তিযোদ্ধারা পাক বাহিনীকে হটিয়ে বাংলাদেশকে স্বাধীন করতে বুকের তাজা রক্ত বিলিয়ে দিয়ে যুদ্ধ করেছিল। ইতিহাসে বঙ্গালীর রক্ত ঝরানো এ মাসে সকলের সামনে শপথ করেন পুলিশ বিজিবি র্যাবকে পাহারা দিয়ে যদি কোন চক্র এলাকায় মাদকের আস্থানা গড়ে যুবসমাজকে ধ্বংস করতে চাই পুলিশ তাদেরকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে মাদক নারী নির্যাতন বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ করতে সর্ব উচ্চ শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। শহীদের রক্তে কেনা এ দেশে মাদকের আস্থানা গড়তে দেওয়া হবে না। চন্দনপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্য ও গ্রাম পুলিশের উদ্দেশ্য বলেন চন্দনপুর ইউনিয়নের সীমান্ত এলাকায় কারা মাদকের ব্যবসা করে কারা নেশা করে কোথায় জুয়া, ক্যারামবোর্ডে খেলা হয় ও ১০টার বেশি সময় সীমান্তের বাজার খোলা থাকে তাদের সকল তথ্য ডায়েরিতে লিখে থানায় নিয়মিত দিতে হবে।
পুলিশ বিজিবি র্যাবের প্রত্যয়ন ছাড়া যদি কোন ব্যাক্তি সোর্স হিসাবে পরিচয় দিয়ে এলাকায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি ও মাদক ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা করে এমন প্রমান পেলে তাকে আটক করে পুলিশে দেওয়ার আহ্বান করেন।
চান্দুড়িয়া গোয়ালপাড়া ২নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য কবীর আনসারীর সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, থানা অফিসার ইনচার্জ ওসি নাসির উদ্দীন মৃধা, থানা পুলিশ পরিদর্শক তদন্ত হাফিজুর রহমান, চান্দুড়িয়া বিওপি বিজিবি ক্যাম্প কমান্ডার নায়েক সুবেদার নুরুল হুদা, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রউফ।
এসময় অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মোসলেম আলী, শিক্ষক আবু তাহের, সংরক্ষিত নারী আসনের ইউপি সদস্য সেলিনা পারভীন, মমতাজ, গফুরুন, মন্টু, হুমায়ুন কবির, চন্দনপুর সীমান্ত সম্পৃতি সংঘের সভাপতি রুহুল কুদ্দুস সহ রাজনৈতিক ও সুশীল সমাজের নাগরিক বৃন্দ।