ফারুক হুসাইন রাজ, কলারোয়া প্রতিনিধি : আর্ন্তজাতিক নারী দিবসে পারিবারিক কলহের জেরে সাতক্ষীরার কলারোয়ায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে প্রকাশ্যে গৃহবধ‚ নাজমা খাতুন (৩৫) কে গলা কেটে হত্যা করেছে স্বামী। গতকাল মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার কেরালকাতা ইউনিয়নের ইলিশপুর দক্ষিণ পাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
ঘটনার পর ঘাতক স্বামী আব্দুল আলিম (৪৫) যাত্রীবাহি বাসে করে কৌশলে পালানোর চেষ্টাকালে থানা পুলিশের একটি টিম অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করেছে।
আটককৃত আব্দুল আলীম কলারোয়া উপজেলার কেরালকাতা ইউনিয়নের ইলিশপুর গ্রামের শাহজুল ইসলামের ছেলে ও নিহত নাজমা খাতুনের স্বামী।
নিহত গৃহবধু নাজমা খাতুনের প্রথম পক্ষের ছেলে আশিক বাহার বলেন, বাবা মারা যাওয়ায় আট বছর পর মা নাজমা খাতুনের বিয়ে হয় ইলিশপুরের রাজমিস্ত্রি আব্দুল আলীমের সাথে। বিয়ের পর থেকেই আব্দুল আলীমের মা খাতুন বিবি (দাদি) ও তার ভাইপোরা বিভিন্ন ভাবে নির্যাতন চালাতো। গতকাল বাবা আব্দুল আলিম বাজার থেকে সবজি-শাক কিনে নিয়ে আসে। পরে সেগুলি রান্না না করার দাদি খাতুনের প্রচরনায় সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে বাবা আব্দুল আলীম মা নাজমা খাতুনকে বেধড়ক মারপিট করে। এসময় তাদের মারপিট থামিয়ে মায়ের জন্য ডাক্তার আনতে গেলেই ঘরের ভিতরে মাকে ধরে নিয়ে আবারো মারপিট করার এক পর্যায়ে গলা কেটে হত্যা করে। এর আগেও কয়েকবার বাবা আব্দুল আলীমের মা খাতুন বিবি (দাদি) ও তার ভাইপোরা মিলে বাবা আব্দুল আলীম ও মা নাজমা খাতুনেরর উপর বিভিন্ন ভাবে নির্যাতন চালিয়েছে। তবে তিনি হত্যার ঘটনার সাথে জড়িত বাবাসহ সাথে যে বা যারা রয়েছে তাদের সকলকেই আইনের আওতায় এনে ফাঁসির দাবি করেন।
নিহতের ছেলে আকাশ হোসেন বলেন, সকাল থেকে আম্মু-আব্বু ঝগড়া করছিল। কি নিয়ে ঝগড়া করছিল সেটি আমি জানি না। সকালে রান্না করেনি। পরে আমি রুটি কিনে দিয়ে আসি। আব্বুকে বলি, তুমি রুটি খেয়ে কাজে চলে যাও। তখন দাদী আব্বুকে বলছিল, তুই যদি তোর বউকে না মারিস তবে আগের মত ভাইপোদের দিয়ে তোকে মার খাওয়াবো। পরে আমি বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। আম্মু ঘরে শুয়ে ছিল। বাইরে গিয়ে আম্মুকে ফোনে কল দিলে আর ফোন ধরেনি। বাড়িতে ফিরে এসে দেখি, আম্মুকে জবাই করে মেরে ফেলেছে আব্বু। দাদীর কথা শুনে আম্মুকে মেরেছে আব্বু।
স্থানীয় ইউপি সদস্য শিমুল হোসেন জানান, হত্যাকারী আলীম নিহত গৃহবধুর দ্ধিতীয় পক্ষের স্বামী। নিহতের প্রথম পক্ষের দুই ছেলে এবং হত্যাকারী স্বামীর ৫ বছরের এক কণ্যা সন্তান রয়েছে।
কলারোয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নাসিরউদ্দীন মৃধা বলেন, পারিবারিক ঝগড়ার এক পর্যায়ে স্ত্রীর ঘাড়ে দা দিয়ে ৩/৪ টি কোপ দেয় আব্দুল আলীম। শরীর থেকে মাথা প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। এরপর আব্দুল আলীম যাত্রীবাহী বাসে পালিয়ে যাচ্ছিল। খবর পেয়ে কাজিরহাট এলাকা থেকে বাসটি থামিয়ে আসামী আব্দুল আলীমকে আটক করা হয়েছে। পরিবার থেকে এখনো কোনো অভিযোগ পায়ানি। ঘটনাটি তদন্তাদিন রয়েছে এ হত্যাকাÐের সাথে অন্য যদি কেউ জড়িত থাকে তাহলে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।