মার্চ ১৫, ২০২২
কপোতাক্ষ এবং শালতা অববাহিকার পরিবেশ সমস্যা মোকাবেলা প্রকল্প বাস্তবায়নের দাবি
তালা প্রতিনিধি : তালায় কপোতাক্ষ এবং শালতা অববাহিকার জলাবদ্ধতা ও পরিবেশ সমস্যা মোকাবেলায় অনুমোদিত প্রকল্প বাস্তবায়নের দাবিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে। সোমবার (১৪ মার্চ) সকালে তালা উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রশান্ত কুমার বিশ^াসের হাতে স্মারকলিপি তুলে দেন কপোতাক্ষ রিভার বেসিন পানি কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. ময়নুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মো. রেজাউল করিম, তালা প্রেসক্লাবের সভাপতি খলিলনগর ইউপি চেয়ারম্যান প্রভাষক প্রণব ঘোষ বাবলু, শালতা রিভার বেসিন পানি কমিটির সভাপতি সরদার ইমান আলী, উপজেলা পানি কমিটির সাধারণ সম্পাদক মীর জিল্লুর রহমান এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা আলাউদ্দিন জোয়ার্দার। স্মারকলিপিতে কপোতাক্ষ নদের জলাবদ্ধতা দূরীকরণ প্রকল্প ২য় পর্যায় প্রকল্প বাস্তবায়নে ডিজাইন অনুযায়ী নদী খনন, দ্রæত পলি ভরাট হয়ে পুনরায় মৃত্যুমুখে পতিত হওয়া কপোতাক্ষ নদটি সংস্কার পূর্বক অতিদ্রæত টিআরএম চালু করা, সরকারের “অংশগ্রহণমূলক পানি ব্যবস্থাপনা নীতিমালা”-র আলোকে ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ প্রদান, অতি দ্রæত টিআরএমকে যুক্ত করে পশ্চিম শালতা নদীর ২য় ফেইজ বাস্তবায়ন করার দাবি জানানো হয়। স্মারকলিপিতে উল্লেখ্য করা হয়, সাতক্ষীরা ও খুলনা জেলার মধ্য দিয়ে কপোতাক্ষ ও পশ্চিম শালতা নদীটি প্রবাহিত। এ দুটি অববাহিকার সাথে যুক্ত খুলনা জেলার ডুমুরিয়া ও পাইকগাছা উপজেলার ১০টি এবং সাতক্ষীরা জেলার কলারোয়া ও তালা উপজেলার ১৫টি সহ মোট ২৫টি ইউনিয়ন যার জনসংখ্যা হবে প্রায় পাঁচ লক্ষাধিক। বিগত শতকের ৯০ দশকের শুরুতেই এ এলাকায় জলাবদ্ধতার সূত্রপাত ঘটে। তারপর দুই দশক যাবৎ জলাবদ্ধতার তীব্রতা প্রকট আকার ধারণ করে। অতিমাত্রায় পলি জমে এলাকার বহু নদ-নদীর মৃত্যু এবং চরম নাব্যতা সংকটের কারণে নিম্ন অববাহিকার বৃহৎ শিবসা নদীও নাব্যতা বা অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে। এ সমস্যা সমাধানে সরকার কার্যকরী পদক্ষেপ হিসেবে কপোতাক্ষ ও পশ্চিম শালতা অববাহিকায় প্রকল্প গ্রহণ করে। এদিকে পশ্চিম শালতা অববাহিকার প্রকল্পটি গত ২০২১ সালের জুন মাসে ১ম ফেইজ শেষ হয়েছে। ২য় ফেইজ অনুমোদন থাকলেও অর্থ যোগান না থাকায় বাস্তবায়িত হচ্ছে না। তাছাড়া উপক‚লীয় নদী রক্ষায় টিআরএম প্রযুক্তিকে এ নদী অববাহিকায় ব্যবহার করা হচ্ছে না। জনগণের ঐকান্তিক দাবির পাশাপাশি আইডবিøউএম এর সুপারিশ থাকা সত্তে¡ও পলি ব্যবস্থাপনা হিসেবে টিআরএমকে এই প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। যে কারণে প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে তীব্র জলাবদ্ধতায় এলাকার নিচু বসতি এলাকা প্লাবিত হয়, মৎস্য চাষের ঘের ভেড়ি ভেসে যায়, জীবন-জীবিকায় দেখা দেয় মারাত্মক সংকট। অন্যদিকে নদী থেকে মৎস্য ঘেরের মধ্যে এখন আর প্রয়োজনীয় জোয়ারের পানি উঠানো যাচ্ছে না। ফলে মাছ ও ধান উভয় চাষাবাদ অব্যাহত রাখা এখন কঠিন হয়ে পড়েছে। জনজীবনে দেখা দিয়েছে একরকম অচলাবস্থা। প্রতি বছর উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানুষ বাস্তভিটা ত্যাগ করে বসবাসের জন্য অন্যত্র চলে যাচ্ছে। এমতাবস্থায় উক্ত স্মারকলিপিতে জনগণের পক্ষ থেকে কপোতাক্ষ ও পশ্চিম শালতা অববাহিকার অধিবাসীদের জীবন-জীবিকা যাতে অব্যাহত থাকে এবং অববাহিকা যাতে আবারও জলাবদ্ধ কবলিত না হয় সেজন্য অনুমোদিত প্রকল্পটি যথাযথভাবে বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার দাবি জানানো হয়। 8,587,193 total views, 3,879 views today |
|
|
|