Site icon suprovatsatkhira.com

অসময়ের বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত জনজীবন

মাজহারুল ইসলাম : মাঘ মাসের কনকনে শীতের প্রভাব কিছুটা কমেছে। তবে শীত মৌসুমে অসময়ে ভারী বর্ষণের কারণে অস্বস্তি আর ভোগান্তিতে বিপর্যস্ত সাতক্ষীরার সাধারণ মানুষের জনজীবন। শুক্রবার (০৪ ফেব্রæয়ারি) সকাল থেকে আকাশ কিছুটা মেঘলা ছিল। বেলা বাড়ার সাথে সাথে দুপুর ১২টার দিকে শুরু হয় গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি। আস্তে আস্তে তা রূপ নেয় ভারী বর্ষণে।

বৃষ্টির সাথে শুরু হয় আকাশের গর্জন। এলোমেলো দমকা হাওয়ায় বাড়িয়ে দেয় শীত। এদিকে শুক্রবারে জুম্মার নামাজ আদায় করার জন্য মুসুল্লিদের যথারীতি বেগ পোহাতে হয়েছে। শীতের মধ্যে বৃষ্টিতে ভিজে অনেকেই বাইরে বেরোতে পারেনি। বৃষ্টির কারণে শহর জুড়ে কিছুটা সুনসান নীরবতাও লক্ষ করা গেছে। অনেক এলাকায় ইতিমধ্যে সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা। বিপর্যস্ত জনজীবনের পাশাপাশি ক্ষতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে ইট ভাটা ও কৃষিতে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জেলার অনেক এলাকার কৃষকরা এখনও ক্ষেতের আলু ঘরে তুলতে না পারায় ক্ষেতের আলুর পঁচনের আশঙ্কা করছেন চাষিরা। ইতিমধ্যে আবার অনেকেই রোপণ করেছেন ইরি ধানের চারা।

বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বেশি হলে ধানের চাতর তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন ধান চাষিরা। দেখা গেছে, শহরের বেশিরভাগ হোটেল রোস্তোরা ও নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দোকানগুলোতে সাধারণ ক্রেতাদের উপস্থিতি কম ছিল। তবে সাধারণ মানুষের সাথে কথা বলে জানা গেছে বৃষ্টির কারণে বেশিরভাগ মধ্যবিত্ত ও দারিদ্র্য শ্রেণির মানুষের ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। বাঁকাল এলাকার ভ্যান চালক রজব আলী জানান, ‘সকালে ভ্যান নিয়ে শহরে গেছিলাম। দুপুর থেকে বৃষ্টি শুরু হওয়ায় আর শহরের দিকে যেতে পারিনি। শুক্রবারে মানুষ একটু ঘুরতে বেরোয়। তাতে কিছু টাকা উপার্জন করা যায়। এই বৃষ্টিতে কেউ বাইরে আসেনি আমারও উপার্জন হয়নি। জানি না কতদিন এই বৃষ্টি হবে’। শহরের নিউ মার্কেট মোড় সংলগ্ন সোনার গাঁ হোটেলের সামনে ভ্যান নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা কাটিয়া এলাকার বাসিন্দা রুস্তুম খাঁ জানান, ‘শীতকালের বৃষ্টিতে কেউ বাইরে আসতে পারছে না।

যা দু’একজন আসছে সবাই ইজিবাইকে চড়ে কাজ মিটাচ্ছে। ভ্যানে উঠে বৃষ্টিতে ভিজবে কে? এজন্য ভ্যান নিয়ে এখানে বসে আছি’। ইজি বাইক চালক মোন্তাজ আলী জানান, বৃষ্টির মধ্যে ইজিবাইক নিয়ে বেরিয়েছি। কিন্তু যাত্রী নেই। শহরের মধ্যে দু’একজন করে যাত্রী পেলেই তাদের গন্তব্যে পৌঁছে দিচ্ছি’। বকচরা এলাকার ওয়াজেদ সরদার জানান, আমি কৃষিকাজ করে সংসার চালাই। এখন ধান রোপণের সময়। যেভাবে বৃষ্টি হচ্ছে আর দু’একদিন এমন হলে ধান ক্ষেত তলিয়ে যেতে পারে। এদিকে আগামী তিনদিন বৃষ্টির প্রবণতা থাকতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এই তিনদিনের শেষ ভাগে বৃষ্টির এমন প্রবণতা কেটে যেতে পারে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, বৃষ্টিপাতের প্রবণতায় এসময়ে সারাদেশে রাতের তাপমাত্রা অপরিবর্তিত থাকতে পারে। তবে দিনের তাপমাত্রা ২ থেকে ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত কমে যেতে পারে। সাতক্ষীরা আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ আবহাওয়াবিদ মো. জুলফিকার আলী জানান, সাতক্ষীরায় শনিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ২০ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। শনিবার থেকে সাতক্ষীরায় বৃষ্টি কমতে পারে। তিনি আরো জানান, শনিবার সাতক্ষীরায় সর্বনি¤œ তাপমাত্রা ছিল ১৮.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/
Exit mobile version