Site icon suprovatsatkhira.com

প্রতাপনগরের হরিশখালীতে ১১শ মিটার বেড়িবাঁধ

সমীর রায়, আশাশুনি : আশাশুনির প্রতাপনগর ইউনিয়নের হরিশখালী গ্রামের হাওলাদার বাড়ী থেকে পুরানো গেট সংলগ্ন খোলপেটুয়া নদীর ১১শ মিটার ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ সংস্কারের কাজ চলছে শম্বুক গতিতে। আম্পান’র পর কাজ শুরু হওয়ার পর দুই বছর পার হয়ে গেলেও অদ্যবধি কাজ শেষ নামেনি। এরমধ্যে গত বছর দুইবার নদীর প্রবল জোয়ারের পানিতে ভেসে যাওয়ার পর অনেক কষ্টে বাঁধটি আটকানো সম্ভব হয়েছিল। কিন্তু এখনও পর্যন্ত মুলবাঁধের কাজ শেষ না হওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত উক্ত বাঁধ ভেঙে আবার ভেসে যাওয়ার ভয়ে শঙ্কিত প্রতাপনগর ইউনিয়নবাসী। বাঁধের মেরামতের কোন প্রকল্প পরিচিতি বোর্ড টাঙানো হয়নি। কত টাকার বাজেট, বাঁধ মেরামতে কি কি ব্যবহার করা হবে, কবে শেষ নামবে স্থানীয় কেউ বলতে পারে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের সাথে কথা বললে এ প্রতিবেদককে কেউ অন্যের মোবাইল নং দিয়ে যোগাযোগ করতে বলেন। আবার উর্ধতন কর্তৃপক্ষ তথ্য না দিয়ে উপজেলা তথ্য অফিসে তথ্য চেয়ে আবেদন করতে বলেন। তবে বাঁধে কত কি বাজেট তাতে স্থানীয় লোকজনের কিছু আসে যায়না। তারা বর্ষা মৌসমের আগে বাঁধটি টেঁকসইভাবে সম্পন্ন দেখতে চেয়ে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

স্থানীয় সাংবাদিক মাসুম বিল্লাহ জানান- সাতক্ষীরার শাহিন আলীর ততা¡বধানে একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান আম্পানের পর কাজ শুরু করে এখনও কাজ চালিয়ে যাচ্ছে দুটি স্কেবেটর মেশিন দিয়ে। যান্ত্রিক ত্রæটির কারনে যার একটি আবার দীর্ঘদিন ধরে অকেজো অবস্থায় পড়ে আছে। বালু উত্তোলনকারি সরকারি ড্রেজার মেশিনটি চলে ইচ্ছেমতো। সংস্কার কাজ কবে নাগাদ শেষ নামবে তা বলতে পারি না। এদিকে আবার বর্ষা মৌসম চলে আসতে বাকি নেই। কি হবে তাই নিয়ে আমরা শঙ্কিত।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় সাবেক এক ছাত্র নেতা বলেন- কোন প্রকল্প পরিচিতি না টাঙিয়ে প্রায় ১১শ মিটার বেড়িবাঁধ সংস্কারের কাজ শুরু করার পর কাজ চলছে তো চলছেই। কত বাজেট, বাঁধে কি কি ব্যবহার করতে হবে আমরা কিছুই জানিনা বা কেউই জানায় না। শুনেছিলাম রিভারসাইটে বালু ভর্তি জিও ব্যাগ দেওয়া হবে কিন্তু এখন দেখছি কিছু কিছু জায়গায় পলিথিনের ব্যাগ ব্যবহার করা হচ্ছে। কোন কিছুর দরকার নেই বাঁধটি মেরামত করে দিলে আমরা বেঁচে যাই।

গত শুক্রবার ইউনিয়নের নব নির্বাচিত চেয়ারম্যান আল. আবু দাউদ গাজী ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ এলাকা পরিদর্শন করেন। ঠিকাদারের লোকজনের সাথে কাজের অগ্রগতির বিষয়ে কথা বলার পর কোন সদোত্তর না পেয়ে তিনি বলেন- আপনারা এ বাঁধটির কোন একটি স্থানের কাজ শেষ নামাতে পারেননি। এখনও কোথাও কোথাও বাঁধের দুই/তিন হাত প্রসস্থ, বস্তার কাজ শেষ নামেনি। হয় কাজ শেষ করে আমাদের শঙ্কামুক্ত করেন না হয় কাজ ছেড়ে দিন। ইউনিয়নের ৩৫ হাজার জনগনের জীবন জীবিকা জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অতীতের মতো আমরা নিজেরাই বাঁধ বাঁধতে নেমে যাবো। আমাদের নিয়ে তামাশা বন্ধ করেন। আমাদের ধুয়াশার মধ্যে না রেখে প্রকল্প পরিচিতির সাইনবোর্ড টাঙিয়ে নকশা অনুযায়ী কাজ সময়ের মধ্যে শেষ করেন।

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে সংশ্লিষ্ট এসও জিয়াউর রহমান জিয়া (০১৯৪৫৫৩৭২৪৬) এর সাথে কথা বললে তিনি কোন তথ্য না দিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রোহিদুল হোসেন খানের (০১৬৮৩৮৮৫৮২৫) সাথে কথা বলতে বলেন। রোহিদুল হোসেন খান তথ্য এড়িয়ে গিয়ে উপজেলা তথ্য অফিসে যোগাযোগ করতে বলেন। আবার ঠিকাদার শাহীন আলীর সাথে (০১৭১১৯৩৭৯৭৪) কথা বলতে গেলে তার ফোনের সুইচ অফ পাওয়া যায়। এলাকাবাসী আম্পান ও ইয়াশ ঝড়ে বিধ্বস্ত প্রতাপনগর ইউনিয়নের ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/
Exit mobile version