Site icon suprovatsatkhira.com

দাম পড়ে যাওয়ায় বুধহাটার পান চাষিদের মাথায় হাত

আহসান উল্লাহ বাবল, আশাশুনি প্রতিনিধি: আশাশুনি উপজেলার বুধহাটা ইউনিয়নের ৩ গ্রামের দেড় শতাধিক পরিবার পানের চাষ করেন। এসব পরিবারগুলো বাপ-দাদার আমল থেকে পান চাষ করে আসছেন। আর এ পান চাষই ওইসব পরিবারগুলোর উপার্জনের প্রধান উপায়। স্থানীয়রা জানান, ইউনিয়নের পাইথালী, বেউলা ও কুন্দুড়িয়া এলাকার দেড় শতাধিক পরিবারের পানের বরজ আছে। এ বরজের পান বিক্রি করে করে ঐসব পরিবারগুলো তাদের জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন। কিন্তু বর্তমানে পানের ব্যবসা ভালো না হওয়ায় তাদের সংসার চালানো কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ছে। সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কৃষকরা পানের বরজের পরিচর্যা করছেন, বরজ থেকে পান সংগ্রহ করে বাড়ির উঠানে এনে স্তুপ করে রাখছেন। সেখানে পরিবারের সদস্যরা মিলে পান বাছাই করে আলাদা করে রাখছেন। এরপর বিভিন্ন এলাকার ব্যবসায়ীরা এখান থেকে এসে পান কিনে নিয়ে যান।

স্থানীয় বাজারে বড় আকারের ৮০টি পান বিক্রি হয় ৮০ থেকে ১২০ টাকা। মধ্যম আকারের ৮০টি পান ৬০ থেকে ৮০ টাকা। আর ছোট আকারের ৮০টি পান ২০ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হয়। পান চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানাগেছে, এ তিন গ্রামে বর্তমানে শতাধিক পানের বরজ রয়েছে। পাইথলী গ্রামের পান চাষি চিরঞ্জিত রাহা বলেন, আমার বাবা ৪০/৪৫ বছর আগে পান চাষ শুরু করেন। এখন আমি পান চাষ করছি। বর্তমানে এক বিঘা জমির উপর আমার তিনটি পানের বরজ রয়েছে। এ বছর তিনটি বরজে খরচ হয়েছে প্রায় ৩ লাখ টাকা। পান বিক্রি হয়েছে সমপর্যায়ে। তিনি আরও জানান, করোনা দেখা দেওয়ার পর পান চাষ করে লাভবান হওয়া তো দুরের কথা নিজেদের সংসার চালানো কষ্টকর হয়ে পড়েছে। আরেক পান চাষি সজল রাহা বলেন, পানের বরজ থেকে সারা বছরই পান সংগ্রহ করা যায়। তবে শীতকালে তুলনামূলক কম পান উৎপাদন হয়।

কারণ শীতকালে পান পাতা বাড়ে কম। তবে উৎপাদন কম হলেও এসময় বাজারে পানের দাম থাকে বেশি। কিন্তু করোনাসহ বিভিন্ন কারণে এ বছর পানের মূল্য যা পাওয়া যাচ্ছে তাতে খরচ বাঁচানো কঠিন। গোবিন্দ কর বলেন, পান চাষের টাকায় আমার ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া ও সংসারের যাবতীয় খরচ চলে। পানের বাজার মন্দা থাকায় সবকিছু চালানো কষ্ট হয়ে যাচ্ছে। বুধহাটা ইউনিয়ন পরিষদের নব-নির্বাচিত চেয়ারম্যান সহকারী অধ্যাপক মাহবুবুল হক ডাবলু বলেন, এ ইউনিয়নের বেউলা, পাইথলী ও কুন্দুড়িয়া গ্রামের অনেক পরিবার পান চাষ করে জীবন জীবিকা নির্বাহ করে থাকে। তিনি আরও বলেন, এবছর বরজগুলোতে পানের ফলন হয়েছে ভালো, কিন্তু পানের মূল্য বৃদ্ধি না পাওয়ায় এখানকার পান চাষিরা মানবেতর জীবন যাপন করছেন। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানাগেছে, আশাশুনি উপজেলায় দিন দিন পান চাষ বাড়ছে। অন্যান্য ফসল আবাদের তুলনায় পান চাষ লাভজনক। তাই কৃষি বিভাগের পক্ষ পান চাষে কৃষকদের উৎসাহিত করা হচ্ছে। পানের ফলন ভালো করার জন্য কৃষি অফিসের মাঠ কর্মীরা সার্বক্ষণিক কৃষকদের সহযোগিতা করে যাচ্ছেন বলে কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/
Exit mobile version