চায়না বাংলা শপিং সেন্টার, সিবি হসপিটাল, বরসা ট্যুরিজম’র এমডি ও দৈনিক সুপ্রভাত সাতক্ষীরা সম্পাদক এ.কে.এম আনিছুর রহমান প্রসঙ্গ নিয়ে স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বেশ কিছু সময় গভীর শোকে নিরব ও স্তব্ধ হয়ে যান সাতক্ষীরা-২ আসনের বারবার নির্বাচিত সংসদ সদস্য নৌ-কমান্ডো ০০০১ বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর মোস্তাক আহমেদ রবি। এসময় তার মোটা ফ্রেমের চশমার কোন দিয়ে অশ্রæ ঝরতে থাকে। কাঁদতে কাঁদতে অশ্রæসিক্ত গলায় বলেন, “আমি ভাবতেই পারছিনা আনিছ আজ আমাদের মাঝে নেই। আনিছ যে এত তাড়াতাড়ি আমাদের ছেড়ে চলে যাবে আমি ভাবতেই পারিনি।
আনিছের চলে যাওয়া আমাকেসহ সাতক্ষীরাবাসীকে কাঁদিয়েছে। স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, আমরা যারা এ.কে.এম আনিছুর রহমানের পাশে থেকে কাজ করেছি, আমরা দেখেছি সে একজন সৎ সাহসী, বন্ধু প্রিয় ও মজার মানুষ ছিল। ওর বয়স তো বেশি হয়নি। মহান আল্লাহ যেন ওকে ক্ষমা করে জান্নাতুল ফেরদাউস নসিব করেন। আমার সাথে তার রক্তের সম্পর্ক ছিলনা। কিন্তু তার সাথে আমার অটুট বন্ধন ছিল। আমি ওকে প্রচন্ড প্রচন্ড ও সীমাহীন ভালবাসতাম এবং তার প্রত্যেকটা কর্মকান্ডে আমি সীমাহীন সার্পোট দিয়েছি। মানুষকে খাওয়ানো ছিল তার আনন্দ। তার সকল প্রতিষ্ঠানে গন্যমান্য ব্যক্তি, শুভাকাংঙ্খী ও তার বন্ধু বান্ধবসহ সকলকে ডেকে খাওয়াতে ভালবাসতো। সে বলতো খেয়ে নেন পরে কথা আর বলবেনা আনিছ। বলেই বাঁচ্ছাদের মত করে হাউমাউ করে কেঁদে ফেললেন তিনি। কিছু নিরব থেকে বললেন মানুষ ব্যবসা করে লাভের জন্য। সত্য কথা আমি নির্দিধায় বলতে পারি আনিছ সিবি হসপিটাল করেছিল কিন্তু আসলে লাভ কতটুকু হবে ওর কাছে সেটা বিবেচ্য ছিলনা।
উদার হস্তে মানবতার সেবায় মন খুলে সমস্ত কর্মকান্ড করতো। ওর কোন ডিমান্ড ছিলনা। বড় মনের মানুষ ছিল। আনিছ এর বড় গুণ ছিল মানুষের সেবা করা ও মানুষের পাশে থাকা। তার জীবদ্দশায় সেবার মনমানুষিকতা নিয়ে কাজ করে গেছে সে। তার সকল ভাল গুণের কথা বলে অল্প সময়ে শেষ করা যাবেনা। টাকা থাকলেই মানুষ ভাল কিছু করতে পারেনা। মানুষের উপকার করার প্রবণতা ছিল আনিছের। ক্রীড়াঙ্গণে ও তার বড় অবদান রয়েছে। গরীব ও মেধাবী খেলোয়াড়দের আর্থিক দিক দিয়ে বিভিন্নভাবে সহযোগিতা ও সুযোগ সুবিধা দিয়েছে। আনিছ একজন সৎ ও সাহসী ভাল মানুষ ছিল বলেই তার জানাযায় মানুষের ঢল নেমেছিল। সে মানুষের সেবার জন্য সিবি হসপিটাল, সুদূর সুন্দরবনের পাশে বর্ষা ট্যুরিজম ও রিসোর্ট করেছে। আনিছের সৃষ্টি ও হাতে গড়া সি বি হসপিটালের ভাল আধুনিক ও উন্নত সেবার কথা খুলনা-ঢাকা ছাড়াও অনেক জেলার মানুষ বলে থাকে।
সাতক্ষীরা তথা দেশের শিল্পোদ্যোক্তাদের কাছে সে উৎসাহ, অনুপ্রেরণা ও আত্মবিশ্বাসের বড় উৎস এবং অনুকরণীয় ব্যক্তিত্ব স্বপ্ন দ্রষ্টা এ.কে.এম আনিছুর রহমান। অনেকেই তাঁকে চেনে ‘ব্যবসার জাদুকর’ হিসেবে। সে যে ব্যবসায়ই হাত দিয়েছে, তাতেই সোনা ফলেছে। দীর্ঘজীবনে সে হার মানেননি কোনো প্রতিকূলতার কাছেই। নিজের হাতে গড়া চায়না বাংলা গ্রæপকে অল্প দিনেই নিবিড় পরিচর্যায় সাজিয়েছে এবং সেই সাথে দাঁড় করিয়েছে সুদৃঢ় প্রাতিষ্ঠানিক ভিত্তির ওপর। সাতক্ষীরার চায়না বাংলা শপিং কমপ্লেক্স, সিবি হসপিটাল লিমিটেড ও বরসা ট্যুরিজম’র এমডি এবং দৈনিক সুপ্রভাত সাতক্ষীরা’র সম্পাদক সর্বক্ষেত্রে সফল হয়েছিল। সব মানুষের প্রিয়ভাজন ছিল সদাহাস্যোজ¦ল ও সদালাপি এবং সকলের কাছে প্রিয় ছিল এ.কে.এম আনিছুর রহমান। তার একটা বড় ক্ষমতা সে সকলকে অতি সহজেই আপন করে নিতো।
আমি চাই এ.কে.এম আনিছুর রহমানের হাতে গড়া চায়না বাংলা শপিং সেন্টার, সিবি হসপিটাল, বরসা ট্যুরিজম’র ও দৈনিক সুপ্রভাত স্বপ্নের প্রতিটি প্রতিষ্ঠান যেন টিকে থাকে। কারণ তার তৈরী প্রতিষ্ঠানে অনেক মানুষের জীবিকা নির্বাহ হয়ে থাকে। তার তৈরী সকল প্রতিষ্ঠান যেন টিকে থাকে সেজন্য সকলের সহযোগিতা কামনা করেন এবং সেই সাথে তার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর মোস্তাক আহমেদ রবি এমপি।