Site icon suprovatsatkhira.com

আশাশুনির বয়ারশিং ও লক্ষীখোলা গ্রামে খুশীর বন্যা

সমীর রায়, আশাশুনি : আশাশুনির শ্রীউলা ইউনিয়নের সারদার বাঁধ থেকে বয়ারশিং-লক্ষীখোলা স্কুল পর্যন্ত রাস্তার মাটির কাজ শুরু হয়েছে। শতাধিক পরিবারের ১৫ বছরের দুর্বিষহ জীবন-যাপনের সমাপ্তি হয়ে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি হওয়ায় এলাকায় খুশীর বাতাস বইতে শুরু করেছে। শুভেচ্ছা ও শুভকামনায় প্রশংসিত হচ্ছেন অধ্যাপক ডা. আ ফ ম রুহুল হক এমপি ও নব নির্বাচিত চেয়ারম্যান প্রভাষক দিপঙ্কর বাছাড় দিপু।

সরজমিনে এলাকা ঘুরে দেখাগেছে, মহিষকুড় গ্রামের পুইজালা খালের সারদার বাঁধ থেকে উত্তরদিকে প্রায় ১ কি.মি. দুরে বয়ারশিং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং তার থেকে ১.৫০ কি.মি. দুরে লক্ষীখোলা প্রাথমিক বিদ্যালয়। পুইজালা খালে অসংখ্য ছোটছোট ডিঙি নৌকা। পুইজালা খাল সংলগ্ন খালধার দিয়ে স্কেবেটর মেশিন দিয়ে রাস্তার কাজ সংস্কার করা হচ্ছে। মাটির কাজ হওয়ায় মানুষের মনে আনন্দের সীমা নেই। বয়ারশিং গ্রামের বিকাশ চন্দ্র মÐল জানান- আমাদের গ্রামে ৬৪টি পরিবার বসবাস করে। লক্ষীখোলা গ্রামে আরও অর্ধশতাধিক পরিবার বসবাস করে। গ্রামে ঢোকার কোন রাস্তা না থাকায় আমাদের গ্রামে দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে কোন যানবাহন ঢুকতে পারেনা। সারাবছর নৌকায় যাতয়াত করতে হয়। আমাদের প্রায় প্রত্যেকটি পরিবারের একটি করে নৌকা রয়েছে। বয়ারশিং ও লক্ষীখোলা দুটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। কিন্তু শিশু শিক্ষার্থীরা শুকনো মৌসমের দুই মাস ছাড়া স্কুলে যেতে পারে না। নৌকায় কোলের শিশু তুলে দিয়ে কোন বাবা-মা নিশ্চিন্ত থাকতে না পেরে তাদের স্কুলে পাঠায় না।

গৌরপদ মন্ডল জানান- আমাদের দুঃখ দুর্দশার কথা বিবেচনা করে নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান প্রভাষক দিপঙ্কর বাছাড় দিপু বাবু নির্বাচনের আগে আমাদের প্রতিশ্রæতি দিয়েছিলেন তিনি নির্বাচিত হলে আমাদের এ রাস্তাটি করে দিবেন। নির্বাচনের এক সপ্তাহ পর থেকেই রাস্তার কাজ শুরু হয়েছে। এবার আমাদের দুঃখের দিন ঘুচবে।
মুদী ব্যবসায়ী গণেশ চন্দ্র্র সরকার বলেন- দোকানের মালামাল নিয়ে যাতয়াত করতে আমার খুবই কষ্ট হয়। সারদার বাঁধে একটা কালভার্ট ও সেখান থেকেই যদি এই রাস্তাটি ইটের সোলিং করে দেওয়া হয় তবে আমরা এমপি স্যার ও দীপু স্যারের প্রতি চিরকৃতজ্ঞ থাকব।

স্কুলের শিশু শ্রেণির ছাত্রী দোলন ও তার দিদি চুমকি বৈদ্য জানান- বর্ষার সময় হেঁটে গেলে দুটো প্যান্ট নিয়ে স্কুলে যেতে হয়। রাস্তাটি হচ্ছে এবার আমরা সবাই স্কুলে যেতে পারব।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক বিদ্যুৎ কুমার মÐল জানান- আমি ২০১৯ সালের ৯ জানুয়ারী এ স্কুলে যোগদান করি। স্কুলে আসতে হলে আমার দুই সেট কাপড় লাগতো। স্কুলের রাস্তাটি হতে দেখে আমি খুবই আনন্দিত। আমার কাছে রাস্তাটি স্বপ্নের পদ্মাসেতুর মত। নৌকা ছাড়া যাতয়াতের কোন ব্যবস্থা না থাকায় গত বছরের থেকে এ বছর শিক্ষার্থী কম হয়েছে। দক্ষিন পুইজালা গ্রাম থেকে বয়ারশিং বৈদ্যবাড়ি পর্যন্ত শুন্য গাজীর বাড়ী সংলগ্ন বাঁধটি মেরামত করলে আরও ভালো হবে।

শ্রীউলা ইউপির নবনির্বাচিত প্রভাষক দিপঙ্কর বাছাড় দিপু বলেন- ভোটের সময় পায়ে হেঁটে যাওয়াই মুশকিল হওয়ায় আমি প্রতিশ্রæতি দিয়েছিলাম নির্বাচিত হতে পারলে রাস্তাটি আমি সংস্কার করে দেবো। সে মোতাবেক এই এলাকার মানুষের দুঃখ দুর্দশার চিত্র অধ্যাপক ডা. আ ফ ম রুহুল হক এমপি স্যারকে অবহিত করলে তিনি দ্রæত ১৩০৭ মিটার রাস্তা সংস্কারের জন্য বরাদ্দ দিয়েছেন। লক্ষীখোলা থেকে একটি স্কেবেটর মেশিন কাজ করছে এবং বয়ারশিং থেকে একটা মেশিন রাস্তাটি সংস্কার করার কাজ করছে। এছাড়া খালের উত্তর পাশে ৩ নং ওয়ার্ডের পুইজালা গ্রামের রাস্তা সংস্কারের জন্য প্রকল্প করা হয়েছে। খুব দ্রæত ওই রাস্তার কাজও শুরু হবে। তবে সারদার বাঁধে একটি কার্লভাট নির্মান ও মান্নানের বাড়ি থেকে শ্রীউলা মেইন রোড পর্যন্ত রাস্তাটি সংস্কার অতি জরুরী। এমপি স্যারের নির্দেশে শ্রীউলা ইউনিয়নে উন্নয়ন কাজের সূচনা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে ইউনিয়নের প্রত্যেকটি গ্রামে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন করা হবে।

https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/
Exit mobile version