Site icon suprovatsatkhira.com

তিন দিনের টানা বৃষ্টিতে আশাশুনির আমন ও শীতকালীন সবজির ব্যাপক ক্ষতি

নিজস্ব প্রতিনিধি : ঘুর্ণিঝড় ‘জাওয়াদ’ এর প্রভাবে সৃষ্ট ৩ দিনের টানা বৃষ্টি ও ঝড়োহাওয়ায় ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে আশাশুনির আমন ও শীতকালীন সবজি চাষিরা। গত শনিবার থেকে শুরু হওয়া গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি সময় গড়াতে গড়াতে ভারী বর্ষণে পরিনত হয়ে ৩ দিন অব্যহত ছিল। মঙ্গলবার সকাল থেকে আর জাওয়াদের প্রভাব লক্ষ করা যায়নি। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে স্বাভাবিকের চেয়ে নদীর জোয়ার বাড়লেও বেড়িবাঁধ ভেঙে ঝুঁকিপূর্ণ প্রতাপনগর, শ্রীউলা, আনুলিয়া ও আশাশুনি সদরের কোন বেডড়িবাঁধ এবার আর ভাঙেনি তাই রক্ষা। সরজমিনে দেখা গেছে, উঁচু জমিতে চাষ করা ধান ১৫ দিন আগে থেকেই কাটা শুরু করেছিল চাষিরা। কেউ কেউ ক্ষেত থেকে ধান বাড়িতে নিয়ে আসতে পারলেও অধিকাংশ চাষিদের ধান কাটা অবস্থায় পড়ে আছে ক্ষেতে পানির নীচে।

অপরদিকে দেরিতে চাষ করা কারো কারো ক্ষেতে লেদা পোকা, কারেন্ট পোকার আক্রমণ দেখা যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন চাষিরা। ঝড়ো বাতাসে কারো কাঁচা পাকা ধান নুয়ে পড়েছে। উপজেলার বড়দল, খাজরা, আনুলিয়া, দরগাহপুর, কুল্যা, বুধহাটা, কাদাকাটি ইউনিয়নে আমন ধানের আবাদ বেশি হয়ে থাকে। টানা বৃষ্টি ও ঝড়োহাওয়ায় সব এলাকার ক্ষয়ক্ষতির পরিমান প্রায় সমান। বড়দল ইউনিয়নের চাম্পাখালি গ্রামের আমন ধান চাষি তারক চন্দ্র মন্ডল জানান- আমি নিজের ও অন্যের জমি ভাগে নিয়ে ৩ একর জমিতে চাষ করেছিলাম। এর আগে অতি বর্ষণে বীজতলা একাধিক বার ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পরও ধানের ফলন ভালো ছিল। কিন্তু পাকার মুখে কয়েকদিনের টানা বর্ষণ ও ঝড়োহাওয়ায় আমার মত অনেকের ধান খুবই ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। ধানে ছড়িকাটা পোকা লেগেছে। কি হবে বলা যাচ্ছে না। কৃষি অফিস থেকেও কোন নির্দেশনা দেয়না। বৃষ্টির আগে বা পরে তাদের কোন খোঁজ খবর পাওয়া যায় না। আমাদের এক ফসলি ইউনিয়ন। এই ফসল ঘরে তুলতে না পারলে সারাবছরই খুব কষ্টে পার করতে হবে।
খাজরা ইউনিয়নের দুর্গাপুরের শিবপদ মন্ডলের ১.৫ একর জমির কাটা ধান এখনও মাঠে আছে বৃষ্টির জলে ডুবে। আমার পাশের চাষি দিপক সানারও আছে। অপরদিকে শীতকালীন সবজি চাষিরা অসময়ের টানাবৃষ্টিতে পড়েছেন বেকায়দায়। কেউ কেউ শাক-সবজি তুলতে শুরু করলেও বেশীরভাগ চাষিরা সবেমাত্র বীজ বপন করেছেন। অনেকেই আলু বপন করেছেন। আবার কেউ কেউ আলুর ক্ষেত প্রস্তুত করেছিলেন। কিন্তু অসময়ের টানাবৃষ্টিতে বপনকৃত আলু পচে নষ্ট হওয়ার পথে। আবার যাদের ক্ষেত প্রস্তুত করা ছিলো তাদের পুনরায় শুরু করতে বিলম্ব হবে।
খালিয়ার ইউসুফ সানা জানান- এবার আগে থেকেই আলুর বীজ বপন করেছিলাম কিন্তু সব কষ্ট পানিতে নষ্ট হওয়ার পথে। সরিষা ফসল খুবই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন শাক-সবজিতে পোকা লেগেছে। ছোট ছোট চারায় পোকার আক্রমণ শুরু হয়েছে। আমাদের মত প্রান্তিক চাষিদের খবর কৃষি অফিস রাখেনা। আমরা লোকমুখে শুনে প্রচলিত নিয়ম মেনে চাষ করে চলেছি।
ঘূর্ণিঝড় ‘জাওয়াদ’ পরবর্তী কৃষি ফসলের অবস্থা সম্পর্কে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রাজিবুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন অফিস টাইমে আসেন। খাতা না দেখে বলতে পারব না। আনুমানিক কোন ধারনাও জানাতে তিনি অপারগতা প্রকাশ করেন।

https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/
Exit mobile version